পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ যেন ‘কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান’ অবস্থা। মাঠ প্রশাসন নিয়ন্ত্রণের লাটাই নিজের হাতে রাখতে মরিয়া সবাই। একদিকে জেলার ডিসি, উপজেলার ইউএনও, সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) কর্মকর্তা; অন্যদিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। সবাই চাচ্ছেন ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের আধিপত্য। লড়াইয়ে কেউ কারও চেয়ে কম নয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা মনে করছেন দল ক্ষমতায় তাই আমাদের কথায় সবকিছু চলবে। অন্যদিকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা মনে করছেন তারাই হর্তাকর্তা। জনপ্রতিনিধি বা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নয়; রাতের ভোটে আমরাই (ডিসি-এসপি-ইউএনও-ওসি) এ সরকারকে ক্ষমতায় এনেছি। এমনকি তৃণমূল প্রশাসনে কর্মরত-কর্মকর্তাদের বেশির ভাগই নিজেদের ‘কে কত বড় আওয়ামী লীগার’ প্রমাণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মাঠ প্রশাসনে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘প্রভাব খাটানোর’ অভিযোগ যেমন এমপিরা জাতীয় সংসদে তুলেছেন; তেমনি ডিসি সম্মেলনে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ‘অনৈতিক প্রভাব খাটানো’ ঠেকাতে ডিসিদের ‘আরো বেশি ক্ষমতা’ দাবি জানিয়েছিলেন। ফলে তৃণমূল পর্যায়ে প্রশাসনকে গতিশীল করতে গিয়ে ‘জেরবার’ অবস্থা।
জানতে চাইলে সাবেক সচিব মো. ইসমাইল জবিউল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকার কারণে এসব ঘটনা ঘটছে। এখন মাঠ প্রশাসনে যারা কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন তাদের বেশির ভাগই কর্মকর্তা ছাত্রলীগের রাজনৈতির সঙ্গে জড়িত। কেউ কাউকে মানছে না। এ কারণে তাদের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বিরোধ হচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে এমন জনপ্রতিনিধি আছে তারা প্রশাসন ক্যাডারে যোগ্য নন। ছাত্রজীবনে যারা রাজনীতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে এগুলো ভুলে জনগণের জন্য কাজ করা প্রয়োজন। সেটা মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব।
জানা গেছে, মাঠ প্রশাসনে ডিসি, ইউএনও এবং সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে সারাদেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরোধ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশের কয়েকটি জেলা এবং বেশির ভাগ উপজেলায় একই চিত্র। ইউএনও এবং এসিল্যান্ড ডিসি এবং বিভাগীয় কমিশনারদের নানারকম রাজনৈতিক চাপের মুখে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। আবার কোনো কোনো জেলা ও উপজেলায় জনপ্রতিনিধিরা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কারণে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন জনপ্রতিনিধিরা। ল²ীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে অশালীন আচরণ করাসহ হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। মাঠ প্রশাসনের সাথে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সংকটের মাত্রা সীমানার বাইরে পৌঁছে গেছে। সরকারি কর্মকর্তাদের খবরদারিতে জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে প্রকৃত ক্ষমতার মালিক সরকারি কর্মকর্তারা।
গত ২৪ থেকে ২৬ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক সম্মেলনে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের একসঙ্গে কাজ করার নিদের্শনা নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম নিজেই মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের মিলেমিশে কাজ করতে বলেছেন। তারপরও দেশের বিভিন্ন জেলায় বিরোধের ঘটনা প্রকাশ্যে চলে আসছে। মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের দ্ব›দ্ব, সরকারি কাজে জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ এবং স্বাভাবিক কাজে বাধা দেয়ার বিষয়গুলো সরকারের শীর্ষ পর্যায়েরও নজরে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সরকারের প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপ বন্ধে কঠোর নিদের্শনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ইনকিলাবকে বলেন, সংসদ সদস্যদের কাজ হলো আইন প্রণয়ন করা। এ কাজ করতে গিয়ে তারা স্থানীয় উন্নয়নে যুক্ত হয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন। আবার সরকারি কর্মকর্তারাও দলবাজিতে লিপ্ত হচ্ছেন। দলবাজির কারণে তারা (আমলা) অনেক সময় সংসদ সদস্যদেরও আমলে নিচ্ছেন না; জনপ্রতিনিধিদের কেউ কেউ আমলাদের তোয়াজ করেও চলছেন। অনেক অন্যায় কাজকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। দুর্নীতি, অনিয়ম-স্বজনপ্রীতির কারণে জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর কার্যত সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বেপরোয়া ভাবের সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর প্রশাসনে পদোন্নতি, অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারে নমনীয়তাসহ একের পর এক সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন ও পাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা। প্রাপ্তির দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ। এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচন সামনে রেখে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৫ শতাংশ সরল সুদে গৃহনির্মাণ ঋণ দেওয়া হয়। গত ২০১৫ সালে সরকারি চাকুরেদের বেতন প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধির পর কখনো শূন্যপদ ছাড়াই পদোন্নতি, বিনা সুদে গাড়ি কেনার ব্যবস্থা, স্বল্প সুদে ফ্ল্যাট কেনা বা বাড়ি করার জন্য ঋণের ব্যবস্থা করেছে সরকার। এমনকি সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি পরিচালনার জন্য প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে। বিভিন্ন সময় আমলারা দাবি করেছেন তারাই ২০১৮ সালে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনেছেন। শুধু তাই নয় সরকারি চাকরির রুল ভঙ্গ করে আমলাদের মধ্যে ‘কে কত বড় আওয়ামী লীগার’ তা প্রমাণের চেষ্টা চলছে।
মাঠের আমলারা মনে করছেন তারা সরকারকে ক্ষমতায় কেবল আনেনি; বরং তারাও আওয়ামী লীগার। আর স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মনে করেন দল ক্ষমতায় থাকায় তারা যা বলবেন তাই হবে। ফলে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই এমপি, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের বিরোধ চলছে। তবে কোনো কেনো উপজেলায় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের মধ্যেও ক্ষমতার লড়াই রয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যানদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা পর্যায়ে সরকারের ১৭টি বিভাগকে উপজেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু ইউএনওরা ওইসব বিভাগের কর্তৃত্ব ধরে রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কেবল কাগজে-কলমেই রয়েছে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী, সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকেও লিখিতভাবে জানিয়েছে উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশন।
এ বিষয়ে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ঘটনাগুলো আমাদের নজরে এসেছে। আমরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কর্মকর্তা ও জেলার ডিসিদের নিদেশনা দিয়েছি। তদন্ত করে এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছকু এক জেলার জেলা প্রশাসক বলেন, গত ডিসি সম্মেলনে এ বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ডিসিদের আশ্বাস নিয়েছেন। মাঠ প্রশাসদের কর্মকর্তাদের সাথে আর কোনো জনপ্রতিনিধির বিরোধ বা দ্ব›দ্ব থাকবে না। সেইভাবেই কাজ চলছে কোনো বিরোধ নেই। হয়তো কোনো কোন জেলায় হচ্ছে। সেটা বলা যাবে না।
জানতে চাইলে সাবেক মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা ইনকিলাবকে বলেন, মাঠ প্রশাসনের প্রতিটি অফিসের সরকারি কর্মকর্তারা সরকারে আইন ও আদেশ দ্বারা পরিচালনা হয়। সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা হচ্ছেন উপদেষ্টা। এসব আইন ও বিধি সরকারি কর্মকর্তারা বাস্তবায়ন করছেন কি-না, সেগুলো দেখবেন জনপ্রতিনিধিরা। সেগুলো না করে যদি অন্যায় কাজ করে সেগুলোতে সরকারি কর্মকর্তরা করতে চাইবে না। ন্যায়সঙ্গত কাজের বাইরে গিলে তখন হয়তো জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটছে। ডিসি ইউএনওরা যদি আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করেন থাকেন তা হলে তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারেন। জনপ্রতিনিধিরা অন্যায় কিছু করলে তাদের কিছু হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সবাইদের জবাবদিহিতা থাকার দরকার।
চলতি বছরের প্রথম অধিবেশনে জাতীয় সংসদে প্রেসিডেন্টের ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে দবিরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে আমাদের এলাকায় যে সরকারি কর্মকর্তা আছেন, ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা), ডিসি তারাই মনে হয় দেশটার মালিক। তারা যা করেন, সেটাই চলে। একটা কম্বল পর্যন্ত আমরা দিতে পারি না। নিজেরা আমরা কিনে দিচ্ছি, কিন্তু সরকারি যে ত্রাণ আসে, সেগুলোর একটাও আমাদের দেওয়া হয় না। আমরা চাই, তারা দয়া করে বলেন, লোকটাকে পাঠিয়ে দিন একটা ¯িøপ দিয়ে। আমি কম্বলটা দিয়ে দেব। এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা। প্রকৃত ক্ষমতার মালিক আমলারা। জনপ্রতিনিধিরা ইউএনও, সরকারি কর্মকর্তাদের দয়ায় চলছি। আমি সাতবারের এমপি। ডিসি, ইউএনও’র কাছে অবাঞ্ছিত ব্যক্তি। এ আগে গত বছর বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহকারী তোফায়েল আহমেদ জাতীয় সংসদে বাজেট আলোচনায় বলেছিলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকার জনপ্রতিনিধিদেরকে অবহেলা করছে এবং সচিবদের বিভিন্ন জেলায় দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সংসদ-সদস্যদের সম্পৃক্ত করা হয়নি। বিষয়টি অত্যন্ত গভীর এবং মারাত্মক।
বিভিন্ন জেলার ডিসি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা নানা কারণে প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধিদের চাপ ও নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন। বিশেষ করে বালু মহাল ও হাওর-বাঁওড় ইজারা দেয়া, বালুমহাল থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করা, জুয়া ও মাদককারবারিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা, উন্নয়ন কাজের তত্ত¡াবধান, অংশীজনদের সমন্বয়, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, ধান-চাল কেনা, উপজেলা চেয়ারম্যান বনাম এমপির দ্ব›দ্বকে পাশ কাটিয়ে প্রশাসন পরিচালনা, মাঠ প্রশাসনের অন্যান্য স্তরের সরকারি কর্মীদের সমন্বয় করা এবং রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের হাত থেকে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বাঁচানোর কাজ করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। ওইসব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রতিটি স্তরেই জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী মহলের হুমকি-ধমকি ও লাঞ্ছনার শিকার হতে হচ্ছে ডিসি ও ইউএনওদের। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, জনপ্রতিনিধির অনেকের কোন অভিযোগ বা আপত্তিকে আমলে নেন না স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। স্থানীয় এমপি ইউএনওকে কোন নির্দেশনা দিলে ডিসি দেন আরেকটা নির্দেশনা, এনিয়ে বিরোধ তৈরি হয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের মধ্যে। আবার অনেক জেলা উপজেলায় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান এবং মেয়রদের মাঝে কঠিন বিরোধ। এসব বিরোধের মাঝে মাঠ প্রশাসনে কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
কয়েক’জন ডিসি ও ইউএনও’র সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিয়োগ, বদলি ও হাট-বাজার এবং বালুমহাল ইজারার বিষয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রায় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। বদলির হুমকি দেয়। সরকারি কার্যক্রমে প্রায়ই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিশেষ করে উপজেলা চেয়ারম্যান ও এমপিরা হস্তক্ষেপ করেন। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় এমপিরা তাদের পছন্দের লোকজনদের কাজ পাইয়ে দেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে তদবির করেন, চাপ সৃষ্টি করেন, দেন-দরবারের পাশাপাশি ভয়ভীতিও দেখান এমনকি স্থানীয় সরকারি প্রশাসনের স্বাভাবিক নিয়োগ, বদলি ও পদায়নেও জনপ্রতিনিধিরা অযাচিত হস্তক্ষেপ করেন।
ল²ীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে অশালীন আচরণ করাসহ হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত ১০ জানুয়াতি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভায় ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে জামালপুরের সরিষাবাড়ী ইউএনও উপমা ফারিসারের অপসারণের দাবি করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ ছড়িয়ে পড়লে পুরো উপজেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি অধ্যক্ষ মো. আবদুর রশীদ অভিযোগ করে বলেন, সরিষাবাড়ীতে বর্তমানে যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তিনি ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজ। ইউএনওর বিভিন্ন অপকর্মের জন্য সামনের নির্বাচনে নৌকার ভোট কমে যাবে বলে তার অপসারণ দাবি করছি।
ডিসি-এসপি-এসিল্যান্ডদের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিরোধ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আবু আলম শহীদ খান ইনকিলাব বলেন, কে কোন দায়িত্ব পালন করে তা বিধি ও আইনে রয়েছে। আসলে সেগুলো সরকারিভাবে মনিটরিং করা হচ্ছে না। সে কারণে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হচ্ছে। গত ডিসি সম্মেলনের সময়ও এ নির্দেশনা দেয়াও পর এ গুলো হচ্ছে সরকারের পক্ষে থেকে ক্ষতিয়ে দেখা উচিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।