মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চিন এশিয়ার ১ম এবং পৃথিবীর চতুর্থ বৃহৎ জনগোষ্ঠীর একটি রাষ্ট্র। প্রযুক্তি শিল্পে বিশ্বজুড়ে তাদের একছত্র আধিপত্য। পাশাপাশি, প্রকৌশলীয় মেধাকে কাজে লাগিয়ে চিন একের পর এক তাজ্জ্বব স্থাপনা বানিয়ে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। তারই ফল ‘হংকং-জুহাই সেতু’। যেটি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বৃহত্তম সেতু।
চিনের মূল ভূখণ্ডে হংকং এবং ম্যাকাও শহরকে সংযুক্ত করে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হয়েছে গেল ২৪ অক্টোবর, এর আগের দিন ২৩ অক্টোবর চিনের প্রেসিডেন্ট জী জিপিং এবং হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যামের উপস্থিততে ব্রিজটি খুলে দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। ৫৫ কিলোমিটার (৩৪ মাইল) লম্বা এই সেতুটি বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেতু।
১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৯ সালে চীনা পার্শ্বে প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়, কিন্তু সেতুটির পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে আইনী জটিলতা থাকার কারণে হংকং পার্শ্বের নির্মাণকাজ একটু দেরিতে অর্থাৎ ডিসেম্বর ২০১১ এর দিকে শুরু হয়েছিল। পুরো প্রকল্পের নির্মাণকাজ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তে সম্পন্ন হয়। ৩ স্প্যান এবং ৬ লেইনের এই দানবীয় ব্রিজের স্থায়িত্বকাল প্রায় ১২০ বছর। ১২৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউয়ান (১৮ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) খরচ দিয়ে নির্মিত। সেতুটি সম্পূর্ণ অতিক্রম করতে প্রায়ই সাড়ে তিন ঘণ্টা মতো সময় লাগে।
ভূমিকম্প ও টাইফুন প্রতিরোধীভাবে ডিজাইন করা হয়েছে এই ব্রিজটি, যেখানে প্রায় ৪০০, ০০০ টন ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে, যা আসলে ৬০টি আইফেল টাওয়ার নির্মাণের জন্য যথেষ্ট ছিল। তার দৈর্ঘ্যের প্রায় ৩০ কিলোমিটার পার্ল নদীর সমুদ্রসীমা অতিক্রম করে। জাহাজের অনুমতি দিতে, ব্রিজের নিচ দিয়ে তলিয়ে যাওয়ার জন্য প্রায়ই ৬ দশমিক ৭ কিলোমিটার অংশজুড়ে একটি টানেল এবং দুটি কৃত্রিম দ্বীপের স্থাপনা রয়েছে।
যারা সেতুটি অতিক্রম করতে চাইবে তাদের অবশ্যই কোটা সিস্টেম দ্বারা বরাদ্দকৃত বিশেষ অনুমতিপত্র ব্যবহার করতে হবে এবং সব যানবাহনকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টোল দিতে হবে। বর্তমানে হংকং থেকে ঝুহাই পর্যন্ত প্রাইভেট যানবাহনগুলোর মধ্যে মাত্র ১০,০০০ যানবাহন অনুমতি প্রাপ্ত। এছাড়াও, অন্যান্য অঞ্চলের যানবাহন হংকং এবং ম্যাক্যাওয়ে প্রবেশের জন্য অনুমোদিত যানবাহনগুলোর সংখ্যা দৈনিক কোটা সাপেক্ষে। সেতুটিতে কোনো প্রকার গণপরিবহন চলাচল করা যাবে না। তার ওপর কোনো প্রকার রেলের সংযোগও নেই। কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে অনুমান করে যে প্রতিদিন ৯,২০০টি যানবাহন সেতু অতিক্রম করবে।
যদিও এটি একটি চিত্তাকর্ষক প্রকৌশল কৃতিত্ব তবুও পরিবেশগত প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ আছে এই প্রকল্প। পরিবেশবাদীদের মতে, ‘বিরল চীনা সাদা ডলফিনসহ এলাকার সামুদ্রিক জীবন গুরুতরভাবে ক্ষতি হতে পারে।’ ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার (ডব্লিউডব্লিউএফ) এর হংকং শাখার মতে, হংকং পার্শ্বে জলের মধ্যে দেখা দেওয়া ডলফিনের সংখ্যা গেল ১০ বছরে ১৪৮ থেকে ৪৭ নেমে গেছে এবং এখন তারা সেতুর কাছাকাছি জলের থেকে অনুপস্থিত। পরিবেশবাদীরা আরও মনে করেন, সেতুটির কারণে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য এবং খনিজসম্পদ প্রায়ই বিলীন হতে চলছে। সূত্র: সাউথ-চায়না মর্নিং পোস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।