যেভাবে মাছ ভাজলে ভেঙে যাবে না
বাঙালির প্রতিদিনের খাবারে মাছ তো থাকেই। এটি সব খাবারের মধ্যে পুষ্টির অন্যতম উৎস। তাড়াহুড়ো করে
সদ্যোজাত সন্তানের সঠিক উপায়ে পরিচর্যা করা সব মা-বাবারই কর্তব্য। কিন্তু সবদিকে খেয়াল রাখা সত্তে্বও বাচ্চারা অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে। আসলে কতগুলো সাধারণ ব্যাপারে নজর রাখলেই বাচ্চা থাকবে সুস্থ ও হাসিখুশি। শুধু সদাসতর্ক নজর দিয়ে বিষয়গুলো একটু তত্তাবধানে রাখতে হবে।
০ পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখুন- সদ্যোজাত বাচ্চার সুরক্ষার সিংহভাগটাই নির্ভর করছে ওদের পরিস্কার, পরিচ্ছন্নতার উপর। তার জন্যই প্রতিদিন উষ্ণ গরম পানিতে এদের গোসল করাতে হবে। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে বাচ্চাদের পোশাক ও বিছানার চাদর, কাঁথা ইত্যাদি গরম পানিতে নিয়মিত কাচতে হবে। খেলনারও রোজ ধুলো ঝাড়–ন, কারণ অনেকসময় বাচ্চা একটু বড় হলেই খেলনার হাতই মুখে দিয়ে দেয়। বাচ্চাদের দুধ গরম করার আগে মায়েরা যদি গোসল সেরে পরিস্কার কাপড় পরে নেন, তাহলে সেই দুধ নষ্ট হতে পারে না, বা দুধ গরম করতে করতে কাপড়ে লাগা ময়লা হাতে লেগে দুধের পাত্রেও যেতে পারে না।
০ ভালো করে বাচ্চার ঘুমটাও দরকার- শুধু বড়দেরই নয়, বাচ্চাদেরও ভালো করে ঘুমানোটা জরুরি। অনেকেরই মা-বাবারা বাচ্চাদের হাতে বা কাঁধে ফেলে ঘুম পাড়াতে থাকেন, কিন্তু প্রাজ্ঞজনেদের মতে, এই পদ্ধতিটি আদৌ ঠিক নয়। আসলে বাচ্চাদের শরীরে এতটাও শক্তি থাকে না যে ওরা মাথাটাকে স্থিরভাবে রাখতে পারবে। বাবা-মায়েরা ঘুমের সময় যখন বাচ্চার মাথা হেলান তখন মাথায় বেকায়দায় আঘাত লাগতে পারে। তাই সবসময় আরামদায়ক বিছানাতেই বাচ্চাকে ঘুম পাড়ান। আর হাতে শোওয়াতে গেলে পর্যাপ্ত সতর্কতা অবলম্বন করুন।
০ কতক্ষণের ঘুম প্রয়োজন-সদ্যোজাত বাচ্চারা দিনের মধ্যে প্রায় ষোলো-সতেরো ঘন্টা ঘুমিয়েই কাটায়। সারাদিনে তিন-চার ঘন্টা করে চার-পাঁচবার ঘুমিয়ে এই ঘুমটা তারা সম্পূর্ণ করে। কোনও বাচ্চা দিনে ঘুমোয়, আবার কেউ রাতে। বাচ্চা যত বড় হয় প্রাকৃতিক নিয়মে ঘুম ততই কমতে থাকে। আর ঘুমটা যাতে ভালো হয়, সেজন্য বাচ্চাকে এমন ঘরে শোওয়ান যেখানে ভালো বাতাস চলাচল করে। শোওয়ার সময় বাচ্চাদের মুখে কখনওই কাপড় দিয়ে ঢাকবেন না, এতে শ্বাস নিতে অসুবিধে হয়।
০ খেলনা থেকে সাবধান-বাচ্চাদের ভোলাতে খেলনার একটা অবিসংবাদী ভূমিকা রয়েছে, তবে খেয়াল রাখবেন খেলনার কোনও অংশ বা রঙিন কোনও জিনিষ যেন খেলতে খেলতে শোওয়ার সময় বা খেলার সময় মুখে না ঢুকিয়ে দেয়। তিন বছরের কম বাচ্চারা যদি এটা করে আর সেটা গলায় আটকে যায়, তাহলে বড়সড় বিপদের সম্ভাবনা। তাছাড়া খেলনা থেকে বাচ্চাদের আঘাতও লাগতে পারে। বোতাম, ব্যাটারির মতো জিনিষগুলো বাচ্চারা হামেশাই গিলে ফেলে। পেটে গিয়ে বা গলায় আটকে ভয়ংকর সমস্যা হয়। তাই এ দিকে সর্বদা খেয়াল রাখুন আর সফট টয়েজ বা টেডি বিয়ার জাতীয় খেলনাই দিন, যেগুলো চট করে মুখে পুরতে পারবে না।
০ খেলনা কেমন হবে- বাচ্চাদের খেলনা দিতে হবে তাদের বয়সের হিসাবে। যেসব খেলনায় ভয়ংকর আওয়াজ হয়, তা থেকে বাচ্চার শ্রবণক্ষমতা নষ্ট হতে পারে। ব্যাটারিচালিত খেলনা বাচ্চাদের জন্য ঠিক। তার দেওয়া বা ভাঙা খেলনা বাচ্চা থেকে দুরেই রাখুন। লোহার খেলনা ভুলেও ওদের হাতে দেবেন না। প্লাস্টিকের খেলনা দিলেও তা নিয়মিত সাবানপানি দিয়ে ঘষামাজা করুন।
০ মুখের পরিচ্ছন্নতা-বাচ্চার মুখের পরিচ্ছন্নতার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। হাল্কা উষ্ণ পানিতে ভিজিয়ে সুতি কাপড় দিয়ে প্রতিদিন সকালে জিহবা আর মাড়ি পরিস্কার করার নিদানটাই চিকিৎসকরা দিয়ে থাকেন। দুধ খাওয়া বা বমি করার পর বাচ্চার মুখের ভিতরটা আরও ভালো করে ধুতে হবে। তবে মুখ পরিস্কার করার আগে হাত পরিস্কার করে নিন। বাচ্চাদের হাতও সবসময় পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত, কেননা তাদের মুখে হাত দেওয়ার একটা প্রবণতা থাকে। আর যেদিন থেকে একটা দাঁতও উঠবে, সেদিন থেকে ব্রাশিংয়ের অভ্যেস রাখা উচিত। হাত দিয়ে দাঁত মাজাবেন না। এতে সঠিক পরিস্কার হয় না।
০ নট্যান থেকে বাঁচান-দুপুরের গরমে বাচ্চাকে নিয়ে বেরোবেন না, যদি একান্তই বেরোতে হয় মাথায় টুপি বা ছাতা দিন। বাচ্চাদের ত্বক খুবই সংবেদনশীল, তাই শীতেও খুব বেশিক্ষণ সরাসরি সূর্যালোকে রাখবেন না। তেল মালিশের পরে সকালে দশ থেকে পনেরো মিনিটই সূর্যালোকে রাখা যথেষ্ট।
০ ন্যাপি থেকেও সমস্যা হতে পারে- আজকাল প্রায় সকলেই বাচ্চাদের ন্যাপি পরান, কিন্তু এর থেকে র্যাশের সমস্যা হতে পারে। কেননা ন্যাপি ভিজে গেলেও তা সঠিক সময় সবসময় বদলানো হয় না, ফলে ভেজা জায়গা থেকেই যাবতীয় সংক্রমণ শুরু হয়। এমনকী পেট বা উরুতেও এই র্যাশ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এর হাত থেকে বাঁচতে ন্যাপি বা ডায়পার একসঙ্গে বেশিক্ষণ পরিয়ে রাখবেন না। খানিকক্ষণ পর পর দেখুন সেটা ভিজেছে কি না, আর ন্যাপি বদলানোর সময় বাচ্চার ত্বকটাও পরিস্কার করে শুকিয়ে নেবেন। র্যাশ বাড়লে শিশু বিশেষজ্ঞকে দেখান।
০ অলিভ অয়েল দিয়ে রান্না-মডিটেরেনিয়ান মানে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের খাবার-দাবারের খ্যাতি সারা পৃথিবী জুড়েই রয়েছে। পৃথিবীর প্রায় সবদেশের মানুষই এই ধরনের ডায়েট পছন্দ করেন। আর এই খাবার এত সুস্বাদু হওয়ার রহস্যটা হল অলিভ অয়েল দিয়ে রান্না করা হয়। নিজের কতগুলো বিশেষ গুণের মধ্যেই স্বাস্থ্যকর তেলের সারিতে অলিভ অয়েল রয়েছে প্রথম সারিতেই। আর বড়দের পাশাপাশি ছোটদেও রান্নায়ও এটা এতটাই ফলপ্রসূ যে এর অন্য কোনও জুড়ি মেলা ভার। অলিভ অয়েলে তাপমাত্রা সহ্য করার একটি বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে, যার ফলে খাবারের উপর একটা পাতলা, গোল্ডেন আর মুচমুচে কোটিং পড়ে যায়। অলিভ অয়েলে কোনও কিছু রান্না করে তোলার সময় খাবারটি তেল শোষণ করে না, খাবারের স্বাদও অর্পূব হয়। অর্থাৎ ভাজা খাবারও অলিভ অয়েলে ভাজলে বেশ হাল্কাই থাকে। আর সবচেয়ে বড় কথা অলিভ অয়েলে রান্না করলে রান্নার পরও খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় না। রেসিপি অনুসারে যে কোনও ধরনের অলিভ অয়েল আপনি ব্যবহার করতে পারেন। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ১০০ শতাংশ অলিভের রস করে বানানো হয়, যার স্বাদ আর গন্ধ একবার শুঁকলে ভোলার নয়। এই তেলের কার্যকারিতা প্রচুর। স্যালাড, মাছ, মাংস ম্যারিনেট করা, সস তৈরিতে মূলত এই তেল ব্যবহার করা হয়। আরেক ধরনের অলিভ অয়েল রয়েছে, যেখানে ভার্জিন বা এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলের সাথে রিফাইন্ড অলিভ অয়েল মিশিয়ে বানানো হয়। হাল্কা ফ্লেভারের অলিভ অয়েল এই শ্রেণির অন্তর্গত। এই তেলে রান্না বা ভাজাভুজির কাজগুলো ভালো হয়। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাঁচা খাবারেই ব্যবহার করা হয়। অলিভ অয়েল স্বাস্থ্যের পক্ষেও উপকারি, কেননা এর কয়েকটি বিশেষ উপকারিতা রয়েছে হৃদরোগের সম্ভাবনা কমায়, কোলেস্টেরল রাখে নিয়ন্ত্রণে, শরীরের প্রদাহ কমায়, ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কমায়, এছাড়াও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিথ্রম্বোটিক গুণ থাকায় বয়স্কদের জন্যও এই তেল উপকারী।
সাংবাদিক-কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।