Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হুয়াওয়ের কর্মকর্তার জামিন দিলো কানাডা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

গ্রেপ্তারের ১০ দিন পর জামিন পেলেন চীনা টেলিকম জায়ান্ট কোম্পানি হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতার মেয়ে ও হুয়াওয়ের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা (সিএফও) মেং ওয়ানঝু। কানাডার একটি আদালত মঙ্গলবার তাকে এই জামিন দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে সাড়া দিয়ে কানাডা পুলিশ তাকে দশদিন আগে ১ ডিসেম্বর ভাঙ্কুভার বিমানবন্দরে তাকে গ্রেফতার করেছিল; এ ঘটনায় চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-কানাডার কূটনৈতিক বাকযুদ্ধ শুরু হয়। তাকে গ্রেপ্তারে ক্ষুব্ধ হয়ে কানাডাকে কড়া বার্তা দিয়েছিল চিন। খবর রয়টার্স।
গত শুক্রবার থেকে মেং ওয়ানঝুর জামিন শুনানি শুরু হয়। বুধবার কানাডার আদালতে শুনানি শেষে বিচারক উইলিয়াম আকি এক কোটি কানাডীয় ডলার বা, ৭৫ লাখ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে জামিনের আদেশ দিয়েছেন তাকে। একই সঙ্গে তার পাসপোর্ট জমা ও তাকে ইলেক্ট্রনিক মনিটরিংয়ের আওতায় আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জামিন দেওয়ার পর আদালত কক্ষে সবাই হাততালি দেন এবং মেং আনন্দে আইনজীবীকে জড়িয়ে ধরেন। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানি হবে। শিগগিরই তাকে মুক্তি দেয়া হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ভাঙ্কুভারে স্বামী লিউ জিয়াওজংয়ের বিলাসবহুল বাড়িতে অবস্থানের অনুমতি দেয়া হয়েছে মেংকে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ চলাকালে গ্রেপ্তার হন মেং ওয়ানঝু। তিনি হুয়াওয়ের প্রতিষ্ঠাতা রেন ঝেংফেই মেয়ে। তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইরানে প্রযুক্তি বিক্রি করার অভিযোগ করা হয়। তিনি হংকং থেকে মেক্সিকো যাচ্ছিলেন। ভাঙ্কুভার বিমানবন্দরে তার যাত্রাবিরতি ছিল। এই গ্রেপ্তারকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করে তার মুক্তি দাবী করে বেইজিং।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছিলেন, এই গ্রেফতারের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, যদি চীনের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানো যায় তাহলে তিনি এই মামলায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন।
কানাডার আদালত যদি মেং ওয়ানঝুর বিপক্ষে রায় দেন, তবে কানাডার আইনমন্ত্রী তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে প্রত্যর্পণ করবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। যুক্তরাষ্ট্র তখন একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রতারণার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সর্বোচ্চ ৩০ বছর পর্যন্ত সাজা দিতে পারবে।
এর আগে হুয়াওয়ের ওই নির্বাহীকে দ্রুত ছেড়ে দিতে কানাডার প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল চিন। একই সঙ্গে বেইজিং হুঁশিয়ারি করে বলে, মেং ওয়ানঝুকে না ছাড়লে তার ভয়ানক পরিণতির সব দায় কানাডাকে ভোগ করতে হবে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, মেং ওয়ানঝুকে গ্রেপ্তারের পর পাল্টা ব্যবস্থা নিতে শুরু করে বেইজিং। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর দেশটির নাগরিকদের চিন ভ্রমণে সতর্ক করেছে। কানাডাও একই রকম সতর্ক ব্যবস্থা নিতে পারে বলে কানাডার সিটিভি নেটওয়ার্ক উল্লেখ করেছে। মঙ্গলবার কানাডা সরকার জানায়, তাদের একজন নাগরিককে আটক করেছে চিন।
দুইটি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, কানাডার সাবেক কূটনীতিক মাইকেল কভরিগকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বেইজিং। কানাডার সরকার বলেছে, এ ঘটনার সঙ্গে হুয়াওয়ের মামলার সম্পর্ক নেই। তবে চীনে নিযুক্ত কানাডার সাবেক রাষ্ট্রদূত গাই সেইন্ট-জ্যাকস বলেন, ‘এটা কাকতাল কিছু নয়। চীনে কাকতাল বলে কিছু নেই। আপনারা যদি তাদের কোনো বার্তা দিতে চান, তারাও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ