Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বার্সার রেকর্ডের রাতটা টটেনহ্যামেরও

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

সব অনিশ্চয়তা আর শঙ্কার বেড়াজাল ভেঙে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় জায়গা করে নিয়েছে মোহামেদ সালাহর লিভারপুল ও নেইমার-এমবাপেদের পিএসজি। ন্যু ক্যাম্পের কঠিন বাধা টপকে নকআউট পর্বে উঠে গেছে হ্যারি কেইনের টটেনহ্যামও। তবে গ্রæপ পর্বের শেষ ম্যাচে এসে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান থেকে ছিটকে বিদায় নিয়েছে নাপোলিকে।
আসরে টিকে থাকতে জিততেই হত লিভারপুলকে। সেক্ষেত্রে জয়ের বিকল্প ছিল না পিএসজির সামনে। অন্যদিকে ড্রয়ের সহজ হিসাবটা মেলাতে না পারায় লিভারপুলের কাছে ১-০ গোলে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে নাপোলিকে। ইতালিয়ান ক্লাবটি হেরেছে মূলত অল রেড তারকা সালাহর গোল ও গোলরক্ষক আলিসনের গোল করতে না দেয়ার অতিদানবীয় সেভের কারণে।
অন্যদিকে ‘মৃত্যুকুপে’ রূপ নেওয়া ‘সি’ গ্রæপের অন্য ম্যাচে রেড স্টার বেলগ্রেডকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই নক আউট পর্বে উঠেছে পিএসজি। ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের হয়ে প্রতিপক্ষের মাঠে গোলের দেখা পেয়েছেন আক্রমণভাগের তিন ফলা নেইমার, কিলিয়ান এমবাপে ও এডিনসন কাভানি। অন্য গোলটি কারকুইনহোসের। প্রথমার্ধে এমবাপের বাড়ানো বলে সহজ টোকায় কাভানি দলকে এগিয়ে নেয়ার পর দারুণ নৈপূণ্যে দ্বিতীয় গোলটি করেন নেইমার। আসরে এটি তার পঞ্চম গোল। দ্বিতীয়ার্ধে মারকুইনহোসকে দিয়ে গোল করান এঞ্জেল ডি মারিয়া। যোগ করা সময়ে জালের দেখা পান প্রথম দুই গোলের কারিগর এমবাপে।
অচেনা বার্সেলোনার বিপক্ষে মহামূল্যবান এক পয়েন্ট পেতে ঘাম ঝরাতে হয়েছে ইউরোপিয়ান ফুটবলে নব্যশক্তি হয়ে ওঠা টটেনহ্যামকে। আগেই গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন নিশ্চিত হওয়ায় এদিন দলের মূল তারকাদের বিশ্রাম দিয়েছিলেন কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে। সাইডলাইনে ছিলেন লিওনেল মেসি, জেরার্ড পিকে, জর্ডি আলবা, লুইস সুয়ারেজ, বুসকেতস, ভিদাল, মার্ক আন্দ্রে-টার-স্টেগেনরা। প্রথমার্ধে আধিপত্য রেখে ১-০ গোলের লিড নেয় কাতালানরা। ম্যাচের সপ্তম মিনিটে প্রতিপক্ষ রক্ষণের ভুলে প্রায় মাঝমাঠে বল পেয়ে দারুণ গতিতে এগিয়ে গোলরক্ষককে পরাস্থ করেন উসমান ডেম্বেলে।
হারলেই নিতে হবে বিদায়। দ্বিতীয়ার্ধে তাই নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে স্পার্সরা। সুযোগও তৈরি করে তারা। কিন্তু গোলরক্ষক সিলিসেন যেন ছিলেন চীনের প্রচীর। ওদিকে ঘরের মাঠে প্রথমার্ধে গোল খাওয়া ইন্টার মিলানও তখন সমতায় ফিরেছে মাউরো ইকার্দির গোলে। পরের রাউন্ডে নাম লেখাতে গোলের কোন বিকল্প নেই। অবশেষে ৮৫তম মিনিটে হার মানতে হয় ডাচ গোলরক্ষককে। ডি বক্সে ভিড়ের মধ্য থেকে লুকাস মৌরার শট ঠেকানোর উপায় ছিল না সিলিসেনের। শেষ আধাঘণ্টা বদলি হিসেবে মাঠে ছিলেন মেসি। কয়েকটি সুযোগও তৈরি করেন। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে জালের দেখা পায়নি স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা।
জয় না পেলেও দারুণ এক রেকর্ড স্পর্শ করেছে বার্সেলোনা। ১৯৯৮-০২ এর মাঝে বায়ার্ন মিউনিখের গড়া ঘরের মাঠে টানা ২৯ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড স্পর্শ করেছে দলটি। এর মধ্যে জয় ২৬ ম্যাচে, বাকি তিনটি ড্র। এমন কঠিন দূর্গে এসে এক পয়েন্ট অর্জন করাকে ‘মিশন ইম্পসিবল’ সম্পন্ন করার সঙ্গে তুলনা করেছেন টটেনহ্যাম কোচ মাউরিসিও পচেত্তিনো। ভক্তদের এমন অর্জন উপহার দিতে পেরে খুশি আর্জেন্টাইন কোচ নিজের উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেন এভাবে, ‘আমি এই ভক্তদের জন্য অনেক আনন্দিত। এটা ক্লাবের জন্য অসাধারণ, অসাধারণ এক অর্জন।’
ওদিকে নাপোলিকে হারিয়ে লিভারপুল একটা পর্যায়ে এসেছে বলে মনে করেন দলটির কোচ ইয়ুর্গুন ক্লপ। প্রিমিয়ার লিগে অপরাজিত ও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দলটি ইউরোপিয়ান ফুটবলের গ্রæপ পর্ব থেকেই বিদায় নিলে ব্যাপারটা ভালো দেখায় না। রক্ষণে আন্ড্রু রবার্টসন-আলিসনদের দৃড়তা ও আক্রমণে সালাহর জ্বলে উঠার কারণে তা হয়ও নি। প্রথমার্ধে সালাহর গোলটি অনেকদিন মনে রাখবে রেড সমর্থকরা। তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ছিল যোগ করা সময়ে আলিসন কর্তৃক আর্কাদিউজ মিলিককে গোলবঞ্চিত করা। ব্রাজিল গোলরক্ষকের সেভকে ম্যাচ শেষে ক্লপ মূল্যায়ন করেন এভাবে, ‘যদি জানতাম আলিসন এত ভালো তাহলে দ্বিগুন দাম দিয়ে হলেও তাকে দলে দিতাম।’ জার্মান কোচ বলেন, ‘মো’র (সালাহ) গোলটি ছিল কতই না সুন্দর, অসাধারণ- তবে আলি (আলিসন) যে সেভ দিয়েছে তার বলে বোঝানোর ভাষা আমার জানা নেই। আজ রাতের সেভটি ছিল জীবনের সেরা।’
‘ডি’ গ্রæপ থেকে শেষ ষোল আগেই নিশ্চিত হয়ে ছিল পোর্তা ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের। এদিন গালাতাসারাইকে হারিয়ে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে একশ ম্যাচ জয়ের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ ও বর্তমান পোর্তোর গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াস।

এক নজরে ফল
শালকে ১ : ০ লোকোমতিভ
গালাতাসারয় ২ : ৩ পোর্তো
ক্লাব ব্রæজ ০ : ০ অ্যাটলেটিকা
মোনাকো ০ : ২ ডর্টমুন্ড
বার্সেলোনা ১ : ১ টটেনহ্যাম
ইন্টার মিলান ১ : ১ পিএসভি
রেড স্টার ১ : ৪ পিএসজি
লিভারপুল ১ : ০ নাপোলি

শেষ ষোলোয় যারা
গ্রæপ ‘এ’ : বরুশিয়া ডর্টমুন্ড,
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ
গ্রæপ ‘বি’ : বার্সেলোনা, টটেনহ্যাম
গ্রæপ ‘সি’ : পিএসজি, লিভারপুল
গ্রæপ ‘ডি’ : পোর্তো, শালকে

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বার্সা


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ