পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর বাংলামোটরে একটি বাসা থেকে নূর সাফায়েত নামে আড়াই বছর বয়েসী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। টানা ৬ ঘন্টার চরম উত্তেজনা শেষে গতকাল দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে শিশুটির বাবা লাশ নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। গতকাল সকালে বাংলামোটরের লিংক রোডের ১৬ নম্বর বাড়ির দোতলায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে গতকাল সকাল থেকেই শিশুটির মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ, শিশুটির বাবা নুরুজ্জামান কাজল ছোট ছেলে সাফায়েতকে হত্যা করেছে। যদিও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি বাবার। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা কাজলকে আটক করেছে পুলিশ।
শাহবাগ থানা সূত্র জানায়, এক বাবা তার শিশু সন্তানকে জিম্মি করে রেখেছে এমন খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তারা বাসায় গিয়ে ভেতর থেকে ঘরের দরজা বন্ধ পান। শিশুদের বাবা কাজলকে দরজা খুলতে বললে তিনি অস্বীকৃতি জানায়। পরে নানাভাবে বোঝানো হলে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে মৃত নূর সাফায়েত ও বড় ছেলে সুরায়েতকে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। তখন পুলিশ কাজলকে আটক করে এবং জীবিত শিশুটিকে উদ্ধার করে। মৃত ছেলেটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, নুরুজ্জামান কাজল মৃত মনু মেম্বারের ছেলে। তারা ওখানকার স্থানীয় বাসীন্দা। এলাকায় মনু মেম্বারের পরিবারের বেশ সুনাম রয়েছে। তবে কাজলের আচার-আচরণে পরিবারের সদস্যরা তাঁর ওপর বিরক্ত। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, কাজল দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। এ কারণে তার স্ত্রী জাহানারা বেগম তিন মাস আগে তাঁকে ছেড়ে চলে গেছেন। ছেলে দুটিকে নিয়ে কাজল ওই বাসাতেই থাকতেন। মাদক সংশ্লিষ্টতার কারণে তিন মাস আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন কাজল।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনরা বলেন, গতকাল সকালে বাসা থেকে বেরিয়ে পাশের একটি মাদ্রাসা থেকে দোয়া পড়ানোর জন্য এক হুজুর নিয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পর ওই হুজর বাসা থেকে বেরিয়ে দাবি করেন-বাসার ভেতরে এক শিশু সন্তানকে অচেতন অবস্থায় দেখেন। স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানায়। পরে পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসাটি ঘিরে রাখে।
কাজলের ভাই নুরুল হুদা উজ্জ্বল বলেন, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কাজল বাসা থেকে বের হয়ে পাশে থাকা মাদ্রাসায় গিয়ে জানায়- তাঁর ছোট ছেলে নূর সাফায়েত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে, এটা যেন মাইকে ঘোষণা করা হয়। তারপর মাদ্রাসার ছাত্রদের পবিত্র কোরআন খতম দেওয়ার জন্য বাসায় নিয়ে যেতে চান। এ কথা শোনার পর আবদুল গাফফার নামে একজন খাদেম মাদ্রাসা থেকে তাঁর সঙ্গে বাসায় যান। নুরুল হুদা অভিযোগ করেন, তাঁর ভাই ছোট ছেলেটিকে হত্যা করেছেন। তাঁর হাতে রামদা ছিল।
বাসার ভেতর থেকে ঘুরে এসে র্যাব-২-এর এসআই শহীদুল ইসলাম বলেন, একটি শিশুকে সাদা কাফনের কাপড়ে মুড়িয়ে টেবিলের ওপরে রাখা হয়েছে। তার পাশে শিশুটির বাবা ও একজন হুজুর বসে আছেন। তিনি শিশুটির বাবাকে কোনো সাহায্য লাগবে কি না জানতে চাইলে- কারও সাহায্য লাগবে না বলে শিশুটির বাবা জানিয়ে দেন। এ সময় কাজল আরও বলেন, আপনারা কেন এসেছেন? আপনারা চলে যান। বেলা ১টার দিকে আমি নিজেই আজিমপুর কবরস্থানে গিয়ে আমার ছেলেকে দাফন করব।
স্থানীয়রা বলেন, কাজলের বাবা মনু মেম্বর দুটি বিয়ে করেন। ১৪ ভাইবোন তাদের। ওই এলাকায় পৈতৃক সম্পত্তিও অনেক। যা নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্ব›দ্ব রয়েছে। কয়েকজন আত্মীয় অভিযোগ করেন, কাজল কোন কাজ করতেন না। বাড়ি ও দোকান ভাড়া দিয়ে সে সংসার চালাতেন। এ ছাড়া মাদক সেবন করে অনেক টাকা নষ্ট করতেন।
শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, জীবিত শিশুটিকে তার মা’সহ অন্যান্য স্বজনদের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে। কাজল থানা হেফাজতে রয়েছেন। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহাযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মর্গে এসে শিশুটির লাশ দেখে গেছেন। আগামীকাল (আজ) চিকিৎসকদের একটি বোর্ড করে শিশুটির ময়নাতদন্ত করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।