Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

উইঘুর নারীদের গোপনাঙ্গে নির্মম নির্যাতন

বর্বরতার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মিহিরগুল তুরসুন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

মিহিরগুল তুরসুনের জন্ম চীনের উইঘুর প্রদেশে। প্রাথমিকের পাঠ চুকিয়ে মিসরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি পড়তে যান। সেখানেই প্রেম-বিয়ে। একে একে মা হন তিন সন্তানের। কিন্তু পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে নিজের তিন সন্তানকে নিয়ে ২০১৫ সালে চীনে ফেরেন মিহিরগুল। এরপরই বদলে যায় তার জীবন। সন্তানদের থেকে আলাদা করে তাকে বন্দিশিবিরে নিয়ে যায় চীন সরকার। বিভিন্ন দফায় তাকে তিনবার আটক করা হয়। চালানো হয় নারকীয় অত্যাচার। মাকে না পেয়ে অযতেœ মারা যায় তার ছোট সন্তান। বাকি দুই সন্তানও এখন দুরারোগ্য অসুখের শিকার। সোমবার ওয়াশিংটনে চীনের উইঘুর প্রদেশের মুসলিমদের ওপর দেশটির সরকারের এই বর্বরতার কথা শোনাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মিহিরগুল তুরসুন। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে পৃথিবীর ২৬টি দেশের ২৭০ জন গবেষক ও সমাজকর্মী উইঘুরদের ওপর অত্যাচার নিয়ে সারা পৃথিবীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে যৌথ বিবৃতি দেন। সেখানেই আনা হয়েছিল মিহিরগুল তুরসুনকে। মিহিরগুল বলেন, মেডিকেল ট্রিটমেন্টের নামে যৌনাঙ্গে যন্ত্র ঢুকিয়ে নির্মম অত্যাচার চালানো হতো। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছিল। আমি বারবার তাদের কাছে আমাকে মেরে ফেলতে অনুরোধ করেছি। ২০১৫ সালে দেশে ফেরার পর তাকে তিন মাসের জন্য বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয়েছিল। এই সময়ই মারা যায় তার ছোট সন্তান। শুধু তাই নয়, বাকি দুই সন্তানের ওপরও বিভিন্ন ডাক্তারি পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন মিহিরগুল। দুই বছর পর আবারও বন্দিশিবিরে আটকে রাখা হয় তাকে। কয়েক মাস বন্দি রেখে অত্যাচার চালানোর পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। সাত মাস পর আবারও আটক করা হয়। এই দফায় তাকে তিন মাস বন্দিশিবিরে রাখা হয়েছিল। মিহিরগুল জানান, বন্দিদশায় তাকে বিভিন্ন অজানা ওষুধ খেতে বাধ্য করা হতো। এই ওষুধ খেয়ে অনেক সময়ই জ্ঞান হারিয়ে ফেলতেন তিনি। আর যে রুমে তাকে রাখা হয়েছিল সেখানে তিন মাসের মধ্যে নয় নারী মারা যান। ভুক্তভোগী এই নারী জানান, তাকে ক্যামেরার সামনে মলমূত্র ত্যাগ করতে হতো। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির স্তুতিতে গান করতে বাধ্য করা হতো বন্দিদের। মিহিরগুল বলেন, একদিন আমাকে ন্যাড়া করে হেলমেটের মতো কিছু একটা পরিয়ে একটা চেয়ারে বসানো হয়। ইলেকট্রিক শক দেয়ার সময় আমি ভীষণভাবে কাঁপছিলাম। যন্ত্রণা আমার শিরা আর ধমনীতে ছড়িয়ে পড়ছিল। তারপর আর কিছু মনে নেই। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম। শুধু মনে আছে, আমি উইঘুর বলে ওরা আমাকে গালি দিচ্ছিল। মিহিরগুল তার ওপর চালানো বর্বর নির্যাতনের বর্ণনা করে বলেন, ২০১৭ সালে তাকে যখন দ্বিতীয়বার আটক করে চীন সরকার, তখন তার ওপর বর্বর নির্যাতন চালানো হয়। টানা চারদিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ চারদিন তাকে একদম ঘুমাতে দেয়া হয়নি। মেডিকেল ট্রিটমেন্টের নামে যৌনাঙ্গে যন্ত্র ঢুকিয়ে নির্মম অত্যাচার চালানো হতো। তৃতীয়বার আটকের পর এ নির্যাতন আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। তবে একসময় সন্তানদের নিয়ে মিসর যাওয়ার অনুমতি পান মিহিরগুল। এবিপি।



 

Show all comments
  • তুষার ২৪ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:২৫ এএম says : 0
    চিন গণ মানষের দেশ।ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের লোক বাস করবে এটাই স্বাভাবিক।শুধুমাত্র মুসলমানদের এই ভাবে অন্যায় ভাবে নির্যাতন করবে এটা সয্য করা যায় না আর এক মুসলমান হয়ে।আমাদের দেশেওতো সংখ্যা লোঘু জাতি বর্ণের মানুষ আছে আমরা কি ঐ রূপ ব্যবহার করি।আমরা বাংলাদেশীরা এর তীর্ব নিন্দা জানাই।আসুন আমরা চীনা পন্য বর্জন করি।র্ঘনা করি তাদের নারকীয় মুসলমান নির্যাতন। আল্লাহ কাছে দোওয়া করি জালেমদের রুখে দাও না হয় আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করো।
    Total Reply(0) Reply
  • জিলহক ২৯ জানুয়ারি, ২০১৯, ২:৪০ পিএম says : 0
    সত্যিই কত হিংস্র প্রাণিরা এরকম বর্বরতা চালাতে পারে।এদের বিচার আল্লাহ ছাড়া কে করবে?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নারী

১৫ জানুয়ারি, ২০২৩
২৮ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ