Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ট্রাম্পের ক্ষমতা খর্ব হচ্ছে বিভক্ত কংগ্রেসে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৮, ১০:০৩ পিএম | আপডেট : ১২:১৪ এএম, ২৩ নভেম্বর, ২০১৮

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে সম্পর্ক দিনের পর দিন খারাপই হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ইদানিং অভিবাসন সংক্রান্ত তার একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ধাক্কা খেয়েছে আদালতে। এসব নিয়ে এতদিন চিন্তা না করলেও এখন অনেক সাবধানী হতে হচ্ছে ট্রাম্পকে। ২০১৮ সালের যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনকে ডেমোক্র্যাটরা রিপাবলিকানদের হটিয়ে নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তবে উচ্চকক্ষ তথা সিনেটে রিপাবলিকানদের নিয়ন্ত্রণ আরও সংহত হয়েছে। ডেমোক্র্যাটরা হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ ছাড়াও বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ও স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি নির্বাচনে আগের চেয়ে অনেক ভালো ফল করেছে।
এই নির্বাচনে ট্রাম্প অনেক খেটেছেন, বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য চষে বেড়িয়েছেন। কিন্তু ফলাফল তার বিপক্ষেই গিয়েছে। এই ফলাফলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আবারও বিভক্ত কংগ্রেস পেল। তাদের সাংবিধানিক নিয়ম অনুযায়ী কংগ্রেসের উভয় কক্ষের অনুমোদন ছাড়া কোনো বিল পাস হতে পারে না। এই বিভক্ত কংগ্রেস যখন-তখন ট্রাম্পের কার্যক্রমের ওপর লাগাম টেনে ধরবে, এ কথা চোখ বন্ধ করে বলা যায়। নতুন বিল পাসের জন্য উভয় কক্ষের সম্মতি তিনি আর আগের মতো পাবেন না। ফলে দেশ পরিচালনায় আগামী দুই বছর ট্রাম্পকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে। যদিও সিনেট রিপাবলিকানদের থাকায় ট্রাম্প যে কোনও ইস্যু সহজে কংগ্রেসে উত্থাপন করতে পারবেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, ভোটের এই ফলাফলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কিছুটা চাপে পড়েছেন। সিনেট ও হাউসে রিপাবলিকানদের একক কর্তৃত্বের অবসান হয়েছে। এতে করে ২০২০ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত মিলছে।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের ভোটের ফলাফলে মূলত রাজ নৈতিক ও সাংস্কৃতিক দূরত্বের বিষয়টি প্রতিফলিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে অভিজাত শ্রেণির সঙ্গে বাকিদের পার্থক্য রয়েছে। বেশিরভাগ রক্ষণশীল শ্বেতাঙ্গের কাছেই ট্রাম্প খুবই জনপ্রিয়।
ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের সময় প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটে রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল। ট্রাম্পের শাসনামলে নিম্নকক্ষে অভিবাসন আইন, ওবামাকেয়ার প্রত্যাহার ও সামাজিক কর্মসূচি ব্যয় কমানোর মতো রক্ষণশীল প্রস্তাব প্রতিনিধি পরিষদে পাস হয়েছে। যদিও এসব প্রস্তাবের অনেকগুলোই সিনেটে বাতিল হয়েছে। কিন্তু এখন প্রতিনিধি পরিষদে ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণ থাকায় তারা নিজেদের কর্মসূচি বিষয়ক বিল উত্থাপন করতে পারবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, ডেমোক্র্যাটদের তালিকায় প্রথমেই থাকবে সরকারের নৈতিক ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের উদ্যোগ। এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন তাদের নেত্রী ন্যান্সি পেলোসি।
এখন ট্রাম্পকে কোনও আইন পাস করাতে হলে দলীয় বৃত্ত অতিক্রম করতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে তার সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ গত কয়েক মাস ধরে তিনি ডেমোক্র্যাটদের বিরোধিতা করতে গিয়ে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়েছেন।
ট্রাম্পের জন্য সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো ডেমোক্র্যাটরা এখন ট্রাম্প প্রশাসনকে নজরদারিতে রাখার উদ্যোগ নিতে পারবে। এখন হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন ডেমোক্র্যাট অ্যাডাম স্কিফ। এই কমিটি ২০১৬ সালে মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে। স্কিফ ঘোষণা দিয়েছেন, ট্রাম্পের বৈদেশিক অর্থ লেনদেনের বিষয় গভীরভাবে পর্যালোচনা করবেন। এমনকি ট্রাম্পের আয়কর প্রদানের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা ও প্রকাশ করা হতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসনের আরও কয়েকজন কর্মকর্তাও নজরদারির আওতায় আসতে পারেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রায়ান জিংকে থাকবেন এই তালিকার সর্বাগ্রে।
ঝামেলা এখানেই শেষ নয়, বিভক্ত কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ খড়্গহস্ত হতে পারে স্বয়ং ট্রাম্পের ওপরই। আমেরিকার অনেকেই বিশ্বাস করেন, গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার যথেষ্ট হাত ছিল। নিম্নকক্ষ এ ব্যাপারে সাক্ষী-সাবুদ, তদন্ত, ফাইলপত্র টানাটানি শুরু করে দিতে পারে। যেহেতু বাজেট অনুমোদনে নিম্নকক্ষের অনুমোদন দরকার, তাই সরকারের যেকোনো সংস্থা যথা এফবিআই, সিআইএ এ ব্যাপারে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারে। কোনো সংস্থা অসহযোগিতা করলে নিম্নকক্ষ তার বাজেটে ছুরি চালাতে পারে, এটা সবাই জানে। আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ট্যাক্স ফাইল নিয়ে লুকোছাপা অনেকেই ভালো চোখে দেখেন না। এবার নিম্নকক্ষ প্রেসিডেন্টের ট্যাক্স ফাইল নিয়ে টান দিলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। যেকোনো বড় ধরনের গলদ পেলে নিম্নকক্ষ ট্রাম্পের ইম্পিচমেন্টের প্রস্তাব তুলতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসীদের ওপর খড়্গহস্ত হওয়ার অবাধ সুযোগও থাকছে না। তাঁর প্রশাসন ইচ্ছে করলেই মেক্সিকোর সীমান্তে আর দেয়াল তুলতে পারবে না। সূত্র: সিএনএন, বিবিসি।



 

Show all comments
  • ২৩ নভেম্বর, ২০১৮, ২:৩৪ এএম says : 0
    টাম একজন বাজে বদমেজাজী লোভৗ লোক কাজেই ওকে সরাতেই হবে আমেরিকার জনগন কে.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কংগ্রেসে

১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ