মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর কোণঠাসা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবিলম্বে অ্যাটর্নি জেনারেলকে পদত্যাগ করিয়ে নিজের বিরুদ্ধে তদন্ত বানচাল করার চেষ্টা করলেন। সংসদের নিম্ন কক্ষে ডেমোক্রাটদের জয়ের পর ঝুঁকি কমাতে চান তিনি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ট্রাম্প সত্যি তার বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়ে যে উদ্বিগ্ন, বুধবারই তার প্রমাণ পাওয়া গেল। তারই উদ্যোগে অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস এ দিন পদত্যাগ করলেন। পাশাপাশি ডেমোক্রাটদের সাথে সমঝোতার জন্য তাদের নেত্রী ন্যান্সি পেলোসিকে স্পিকার পদে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি।
শীর্ষ এই আইন প্রণেতার সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তিনি টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, সেশনসকে সরিয়ে তার স্থানে চিফ অব স্টাফ মাথ্যু হুইটাকেরকে অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব দেয়া হবে।
বুধবার ওই টুইট বার্তায় ট্রাম্প লেখেন, ‘আমরা অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনসকে তার কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি একই সঙ্গে তার জন্য শুভ কামনা করছি।’
তবে এই বরখাস্তের ঘটনা যে খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়াই ঘটেছে মোটেও তেমনটি নয়। তারিখবিহীন একটি পদত্যাগ পত্রে সেশনস যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেননি সেটা স্পষ্ট ধরা পরেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এর পেছনে রয়েছে ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের পক্ষে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগের ব্যাপারে বিচার বিভাগের তদন্ত। সেশনসের সঙ্গে ট্রাম্পের বিবাদের শুরুটা হয়েছিল ২০১৭ সালের মার্চ মাসে। তখনই সেশনস রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়ে যে তদন্ত হচ্ছিল সেখান থেকে সরে আসেন। এবং এই দায়িত্ব তার অধীনস্ত রড রোজেনস্টেইনকে দেন। এর পর থেকেই প্রকাশ্যে ট্রাম্প সেশনসের বিরুদ্ধে নানা ধরণের সমালোচনামূলক কথা বলতে থাকেন। ২০১৭ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাতকার ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি এই তদন্ত থেকে সরে যাবেন এই কথা আমাকে আগে বললে আমি তাকে এই দায়িত্ব তাকে দিতাম না। আমি অন্য কাউকে এই কাজের জন্য নিতাম।’
এদিকে, মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্রাটরা এগিয়ে যাওয়ায়, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নয়া কর ব্যবস্থা থেকে শুরু করে মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল তোলার মতো নানা প্রকল্পে এ বার বাধা দেওয়ার সুযোগ আসবে ন্যান্সি পেলোসিদের হাতে। আর বিশেষ করে ট্রাম্পের জন্য তিনি যদি ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু করতে চান, তা হলে মার্কিন প্রেসিডেন্টের পক্ষে আগামী দিনগুলো আরও কঠিন হবে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও ন্যান্সি এত দিন বলে এসেছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অত শক্তিশালী রাজনৈতিক অস্ত্র ব্যবহার করার পক্ষপাতী নন তিনি।
এসব ব্যাপারে কোণঠাসা ট্রাম্প বিরোধী দলের সাথে এখন সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছেন। সংসদের নিম্ন কক্ষ হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে ডেমোক্রাট দলের জয়ের পর ট্রাম্প তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এমনকি স্পিকার পদের জন্য সে দলের নেত্রী ন্যান্সি পেলোসি-র প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প বলেছেন, যদি ডোমোক্রাট দলের কিছু সংসদ সদস্য ন্যান্সির পক্ষে ভোট না দেন, রিপাবলিকান দল তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে। তবে গঠনমূলক সহযোগিতার প্রত্যাশার পাশাপাশি ট্রাম্প বিরোধী দলের উদ্দেশ্যে প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, তারা যদি তার বিরুদ্ধে তদন্ত বা অন্য কোনো উদ্যোগ নেয়, সে ক্ষেত্রে তিনিও সংঘাতের পথে যেতে প্রস্তুত। সে ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনে যুদ্ধের মতো পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে বলে সতর্ক করে দেন তিনি।
কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেলের আচমকা বিদায়ের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে বিরোধী ডেমোক্রাটিক দল। তাদের নেতা ন্যান্সি এক টুইট বার্তায় এই পদক্ষেপকে রাশিয়া সংক্রান্ত তদন্ত বানচাল করার প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ণনা দেন। কার্যনির্বাহী বিচারমন্ত্রীর উদ্দেশ্যেও তিনি স্বার্থের সংঘাত এড়াতে সেই তদন্ত থেকে নিজেকে দূরে রাখার ডাক দেন।
এদিকে, বুধবারের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প যেভাবে একাধিকবার মেজাজ হারিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে বচসা ও সংঘাতের পথে গেছেন, সেই বিষয়টিরও সমালোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে সিএনএন-এর সাংবাদিক জিম অ্যাকোস্টার সঙ্গে তার বাকযুদ্ধ অত্যন্ত দৃষ্টিকটু ঘটনা ছিল। এই ঘটনার পর হোয়াইট হাউসে তার প্রবেশাধিকার আপাতত প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তবে, প্রকাশ্যে এখনো নির্বাচনে সাফল্য নিয়ে গর্ব করছেন ট্রাম্প। তবে সেই সাফল্য ব্যক্তির হিসেবে তার নিজের, রিপাবলিকান দলের নয়। এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প সাফ জানিয়ে দিলেন, তিনি যেসব প্রার্থীর হয়ে প্রচার চালিয়েছেন, তাদেরই জয় হয়েছে। অন্যদিকে তার ইঙ্গিত ছিল, যারা তার প্রতি যথেষ্ট আনুগত্য দেখাননি, তাদের হার হয়েছে। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের দল মধ্যবর্তী নির্বাচনে বহুকাল এমন সাফল্য পাননি বলেও দাবি করেন ট্রাম্প। সূত্র: রয়টার্স, এএফপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।