Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হেলেঞ্চা শাকের উপকারিতা

ডা: মাও: লোকমান হেকিম | প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৮ এএম

হেলেঞ্চো বা হেলেঞ্চা বা হিঞ্চা এক প্রকার জলজ শাক। পানির ওপরে লতিয়ে চলে। যেমন-কলমি শাক পানির ওপরে ভাসে। হেলেঞ্চাকে ভারতে কেউ কেউ হিমমোচিকাও বলে। বাংলাদেশের খালবিলে, নদনদী, পুকুরে সর্বত্র জন্মে। তবে নোনাপানিতে হেলেঞ্চা হয় না। গাঁওগেরামের অনেকে পুকুরে হেলেঞ্চা ও কলমি লতা জন্মাতে দেয়। কারণ যে পুকুরে হেলেঞ্চা বা কলমি লতা থাকে, সে পুকুরের পানি সর্বদা পরিস্কার বা স্বচ্ছ থাকে। তারপরও হেলেঞ্চার লতায় এক প্রকার আঁশ জন্মে, এগুলো মাছের প্রিয় খাদ্য। এই হেলেঞ্চার পাতা শাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। শাক স্বাদে তিক্ত এবং কষায়। তবে হেলেঞ্চা শাক উপকারী। শীতের প্রথমেই ফুল ফোটে, ফুলের রং সাদা। পাতা ১ থেকে ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। 

চলুন তাহলে জেনে নেই হেলেঞ্চা শাকের কিছু বিস্ময়কর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে। বিভিন্ন রোগে প্রয়োগ-খোস পাচড়া ও চুলকানী : শীত এবং বর্ষাকালে এ দু’টি রোগ মানুষের খুবই কষ্টদায়ক । হেলেঞ্চা শাকের ৩/৪ চামচ রস সকালে একবার করে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। তবে কয়েক দিন নিয়মিত খাওয়া দরকার।
ঘামাচি ও ফুসকুড়ি : গায়ে কাঁটা বা ঘামাচি, প্রথমটি শীতে এবং দ্বিতীয়টি গরমকালে মানুষের জন্য খুবই কষ্টদায়ক হয়ে দাঁড়ায়। এ উভয়বিধ রোগের জন্য হেলেঞ্চা পাতা সামান্য পানি দিয়ে বেটে তার রস সারা শরীরে মাখলে খুব শিঘ্রই উপকার পাওয়া যায়।
বসন্ত রোগের আক্রমণে : শরীরে দু’একটি গুটি দেখা দেয়া মাত্রই অর্থাৎ রোগের প্রথম অবস্থায় শ্বেতচন্দন গুঁড়ো দেড় থেকে দুই গ্রাম এবং হেলেঞ্চা শাকের রস আধা কাপ, এ দু’টি ভালভাবে মিশিয়ে খেলে শিঘ্রই গুটি বের হয়ে যায়।
যকৃৎ দুর্বল হলে : যকৃৎ অর্থাৎ লিভার দুর্বল হলে শরীরে নানা ধরনের রোগ দেয়া দেয়। ১০০ গ্রাম হেলেঞ্চা শাক ছোট ছোট করে কেটে, ১৫০ মিলিলিটার পানিতে পরিমাণ মতো লবণ মিশিয়ে সিদ্ধ করতে হবে। পানি ফুটে এক কাপ পরিমাণ হলে পাত্রটি আচ থেকে নামিয়ে ফেলতে হবে। ঠান্ডা হলে ভাত খাবার আগে ৪/৬ ফোঁটা সরষে তেল মিশিয়ে খেলে যকৃৎ সবল হয়। অবস্থা বুঝে ২ থেকে চার সপ্তাহ পর্যন্ত নিয়মিত খাওয়া দরকার।
পিত্ত বাড়লে : হেলেঞ্চার পাতা বেটে তার ৩০ মিলিলিটার রস এবং গরু কিংবা ছাগলের দুধ (অবশ্যই গরম করে এবং ঠান্ডা অবস্থায়) ৫০মিলিলিটার এ দু’টি একসঙ্গে মিশিয়ে রোজ খেলে শরীরে পিত্তের পরিমাণ স্বাভাবিক হবে। গনোরিয়া রোগের জন্য একই পদ্ধতি এবং পরিমাণে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
কোমরের যন্ত্রণা : কোমরের ঠিক নীচে ব্যথা বা যন্ত্রণা, পায়ের পেশীতে রাতের দিকে টান ধরে, এসব ক্ষেত্রে ৩ চামচ হেলেঞ্চার শাকের রস, হাল্কা গরম করে সকালের দিকে খালিপেটে খেলে ভাল হয়ে যায়। নিয়মিত বেশ কিছুদিন খেলে আরও ভাল।
রক্ত দূষিত হলে : ২০ মিলিলিটার হেলেঞ্চার শাকের পাতা ও ডাঁটা বাটা রস, এক চামচ চিনির সঙ্গে মিশিয়ে সকালে একবার করে খেলে দূষিত রক্ত পরিষ্কার হয়ে যায়। আবার অনেকের জিহবায় মোটা সাদা প্রলেপ পড়ে। ফলে অরুচি হয়। তারা কয়েক দিন হেলেঞ্চার রস গরম করে খান, অরুচি চলে যাবে। যারা নিম্ন রক্তচাপে ভূগছেন, তারা হেলেঞ্চার পাতার রস দুই চামচ, কলমি পাতার রস দুই চামচ, দুই চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে এক মাস রোজ সকালে খান, নিম্ন রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

চিকিৎসক-কলামিস্ট
মোবা : ০১৭১৬২৭০১২০।



 

Show all comments
  • রঞ্জিৎ রায় ১২ জুলাই, ২০২২, ৮:১৬ এএম says : 0
    ভবিষ্যতে আপনার সঙ্গে কথা বলা যাবে কী?
    Total Reply(0) Reply
  • Md.Hamim Hossain ৩০ এপ্রিল, ২০২০, ৯:৪১ পিএম says : 0
    thanx
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শাক

২৩ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন