Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কলাপাড়ার ১৩০ পরিবার পাচ্ছে স্বপ্নের ঠিকানা

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৮, ১১:৩৯ পিএম

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ধানখালী ইউনিয়নে নির্মানাধীন এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে বসতবাড়ি-জমি হারানো ক্ষতিগ্রস্ত ১৩০টি পরিবারকে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’ নামের প্রকল্পে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। সেখানে চলছে শেষ মুহূর্তের ধোয়া মোছা-সাজগোছের কাজ।

আগামী ২৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর করবেন। পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র লাগোয়া পশ্চিম পাশে এ প্রকল্পটি নির্মিত হয়েছে। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নিশানবাড়িয়া মৌজার পায়রা এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য এক হাজার একর ভ‚মি অধিগ্রহণের ফলে ১৩০টি পরিবার হারায় বসতভিটা। ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবারের জন্য পুনর্বাসনে প্লান্টের পাশেই ১৬.২২ একর জমির ওপর ৫০ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একটি আধুনিক উপশহর। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত পশ্চিমাদেশের আধুনিক শহরের আদলে তৈরি এ স্বপ্নের ঠিকানা। দু’টি ডিজাইনে করা হয়েছে সেমিপাকা ঘরগুলো। যেসব পরিবারের ২০ শতকের বেশি জমির বসতি নষ্ট হয়েছে তাদের জন্য সাড়ে সাত শতক জমিতে ১২ শ’ বর্গফুট আয়তনের ৮২টি এবং যাদের কম ক্ষতি হয়েছে তাদের জন্য সাড়ে পাঁচ শতক জমিতে এক হাজার বর্গফুট আয়তনের ৪৮টি ঘর করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ঘরে ১৫ দশমিক সাত ফুট আয়তনে বাথরুমসহ একটি মাস্টার বেডরুম, দুইটি ১৫ ফুট আয়তনের বেডরুম, ১০ দশমিক চার ফুট আয়তনের একটি ডাইনিং রুম, ১২ দশমিক দুই ফুটের রান্না ঘর ও একটি কমন বাথরুম রয়েছে।

প্রত্যেকটি ঘরের সামনেই থাকছে খালি জায়গা। যেখানে সবজির আবাদ কিংবা গবাদিপশুসহ হাঁস-মুরগি পালনের সুযোগ থাকছে। রয়েছে ৩৬ হাজার ৯২৯ এবং ২৪ হাজার ৫৫৪ বর্গফুট আয়তনের দুটি পুকুর। নিরাপদ পানির জন্য ৪৮টি গভীর নলক‚প। ২৩ শতক জমিতে আধুনিক দ্বিতল মসজিদ। ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের দ্বিতল কমিউনিটি সেন্টার। যার নিচতলায় থাকছে ক্লিনিক। রাখা হয়েছে খেলার মাঠ, একটি শপিং সেন্টার, ঈদ-গাঁ মাঠ, নির্দিষ্ট কবরস্থান। একটি স্কুলভবন। যেখানে টেকনিক্যাল শাখার অগ্রাধিকার থাকছে। ভেতরের পানি নিষ্কাশনের সাড়ে চার কি.মি. ড্রেনসহ ভেতরের ১২ ফুট প্রস্থ দুই কি.মি. পাকা সড়ক। এনডিএ সূত্র জানায়, এখান থেকে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ বিক্রি থেকে দশমিক তিন পয়সা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জীবন মানের উন্নয়নে ব্যয় করা হবে।

২০১৬ সালে জমি অধিগ্রহণের পর থেকেই বেরিবাধের স্লোপে মানবেতর জীবন যাপনকারী করছে ক্ষতিগ্রস্ত ১৩০টি পরিবার। আবাসনের ঘর ও পরিবেশ দেখে অত্যন্ত খুশি ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবার এখন পুনর্বাসন পল্লীতে বসবাসের স্বপ্নে বিভোর। তবে এর পাশাপাশি প্রতি পরিবার থেকে অন্তত একজন কর্মসংস্থানের সুযোগ দাবি তাদের। স্থানীয় রিপন হাওলাদার, নাসির, জামালসহ একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি জানান, তারা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ। যে ঘর প্রধানমন্ত্রী তাদের উপহার দিয়েছেন তারা তা কোনো দিনই নির্মাণ করতে পারতেন না। একদিকে তারা জমির ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন, অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঘর পাচ্ছেন। তাদের দাবি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের যেন চাকরির ব্যবস্থা করে সরকার। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, পটুয়াখালীতে চলমান উন্নয়নম‚লক কার্যক্রমের আওতায় অনেক ভ‚মি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে শঙ্কিত না হয় এ জন্য এ প্রকল্পটি মাইল ফলক হয়ে থাকবে। এই প্রকল্পের ফলে স্থানীয় মানুষের আস্থা আরো বাড়বে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পরিবার


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ