Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ওপেনিংয়ের দাবিদার ইমরুল

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

দেখতে দেখতে এই আঙিনায় কাটিয়ে দিয়েছেন ১০টি বছর। চলতি মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক দশক পূর্ণ হল ইমরুল কায়েসের। এত দিনেও পায়ের নিচে মাটি শক্ত নয় বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের। এখনও লড়াই করছেন টিকে থাকার সংগ্রামে। খুঁজে ফিরছেন জাতীয় দলে নিজের জায়গা। বাদ পড়া আর লড়াই করে দলে ফেরা- গত এক দশকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সংক্ষেপে এটাই ইমরুলের ক্যারিয়ারের চিত্র। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দলের দাপুটে জয়ে দারুণ এক সেঞ্চুরিতে বড় অবদান রাখা এই ওপেনার জানান, কখনও হাল না ছাড়ার মানসিকতা তাকে বারবার দলে ফিরিয়েছে।

নিয়মিত দল থেকে বাদ পড়ছেন। সময়ের ধারাবাহিকতায় আবার ফিরে আসছেন। গোটা কয়েক সিরিজ খেলছেন, আবার বাদ পড়ছেন। মিউজিক্যাল চেয়ারের মতোই তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার! দল খারাপ করলে প্রায়ই তাকে যেতে হয় সাইডবেঞ্চে। আবার ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রমাণ করে ফিরে পান জায়গা। এশিয়া কাপে আকস্মিকভাবে দলে জায়গা পান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ওপেনার নয়, ছয়ে খেলে দলকে জেতান। ৭২ রানের নজরকাড়া ইনিংস খেলে আবার জায়গা করে নেন। সেই ধারাবাহিকতা এখনও ধরে রেখেছেন বাঁহাতি ওপেনার।

গতপরশু ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেন ১৪৪ রানের ইনিংস। তার ম্যাচ জেতানো ইনিংসে দল জিতেছে। তাইতো বুক উচুঁ করে বলতে পারছেন, তিনি এখনও ফুরিয়ে যাননি। দলকে দেওয়ার মতো অনেক কিছুই এখন বাকি, ‘আমার সঙ্গে অনেক ক্রিকেটারের অভিষেক হয়েছে। তারা এখনও খেলেছে। আবার এমন ক্রিকেটারেরও অভিষেক হয়েছে তারা এখন দৃশ্যপটেও নেই। আমার কাছে মনে হয় যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি যে আমার ক্যারিয়ারে এত দ্রুত শেষ হতে পারে না। আমি সবসময় নিজেকে প্রস্তুত রাখি। যতদিন খেলব, জাতীয় দলে খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখি। যেদিন জাতীয় দলে খেলার সুযোগ থাকবে না, নিজেই বলব থ্যাংক ইউ।’

তার কাছে প্রতিটি ফিরে আসা নতুন সুযোগ, নতুন শুরু। তাইতো পুরনো দৃশ্যপট ও দুঃস্মৃতি নিয়ে ততটা উদ্বিগ্ন নন তিনি,‘আমি যখন জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাই তখনই নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। দেশের হয়ে খেলা অনেক সম্মানের। যখনই সুযোগ পাই তখনই শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করি। কখনো সফল হই কখনো হই না। কিন্তু আমি আমার পরিশ্রম এবং সবকিছু শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করি।’ ব্যাডপ্যাচ, অফফর্ম কিংবা ফর্ম সবকিছুই ক্রিকেটীয় জীবনের অংশ। তাইতো নিজের খারাপ সময় নিয়ে না ভেবে বর্তমানকে নিয়ে থাকতে চান ইমরুল,‘ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ারে আপ অ্যান্ড ডাউন থাকবেই। কেউ ভালো খেলবে, আবার ভালো খেলতে খেলতে খারাপ খেলবে। এভাবেই ক্যারিয়ার হয়। কেউ কখনও একই ধারাবাহিকতায় টানা খেলতে পারে না। আমারটা হয়ত একটু ভিন্ন হয়ে গেছে। অন্য কেউ এসে ভালো খেলে ফেলেছে, এজন্য আমার হয় নাই। এখন আমি ওগুলো নিয়ে চিন্তা করি না। দেশের হয়ে খেলায় ভালো অনুভূতি কাজ করে, সুযোগটার জন্য তাই অপেক্ষা করি এবং কঠোর পরিশ্রম করি।’

ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের একজন যোগ্য সঙ্গীর খোঁজে অনেকদিন থেকেই অস্থিরতা বাংলাদেশ দলে। সৌম্য সরকার ছন্দ হারিয়ে ফেলার পর একে, ওকে, তাকে দিয়ে চেষ্টা করা হয়েছে বারকয়েক। ফল মেলেনি। টানা কয়েক ম্যাচ সুযোগ পেয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে গিয়ে সমাধানের প্রথম পথ দেখান লিটন দাস। এশিয়া কাপের ফাইনালের মতো বড় মঞ্চে, ভারতের মতো শক্তিধর প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সব আলো নিজের দিকে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। নয়নভোলানো ব্যাটিং করে দারুণ এক সেঞ্চুরিতে মাত করেছিলেন। তার ১১৭ বলে ১২১ রানের ইনিংসের তারিফ করেছেন দেশি বিদেশি বহু ক্রিকেট বিশ্লেষক। মনে করা হচ্ছিল, তামিমের সঙ্গী হওয়ার দৌড়ে তিনি অনেকখানিই বুঝি এগিয়ে গেছেন। ইমরুল হয়ত তখন মনে মনে বলছিলেন, আস্তে ভায়া আস্তে। আমিও তো আছি। ইমরুল ফিরে পেয়েছেন নিজেকে। তার ফিরে আসায় নিশ্চিতভাবেই স্বস্তি ফিরবে বাংলাদেশ শিবিরে। ইমরুলের ব্যাট হাসলে হাসবে বাংলাদেশও।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইমরুল

৬ অক্টোবর, ২০২০
৩ অক্টোবর, ২০১৯
৮ জুলাই, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ