Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিজেকে ছাড়িয়েই যাচ্ছেন তুষার

চারটি ম্যাচই নিরুত্তাপ ড্র, তুষার-নাফিসের সেঞ্চুরি, নাঈমের ছয় উইকেট

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০১ এএম

নাহ! জাতীয় লিগে তৃতীয় রাউন্ডের শেষ দিনে নাটকীয় কিছুই ঘটেনি। চারটি ম্যাচই হয়েছে নিরুত্তাপ ড্র। তবে এই পর্বেও নিজেকে চেনালেন তুষার ইমার। নিজেকে তুললেন আরো উচ্চতায়। প্রথম শ্রেণিতে দেশের সর্বোচ্চ রান ও সেঞ্চুরির মালিক আবারো পেয়েছেন তিন অঙ্কের দেখা। দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে স্পর্শ করেছেন ১১ হাজার রানের মাইলফলক। শেষ দিনে প্রপ্তি খাতায় যোগ হয়েছে শাহরিয়ার নাফিসের সেঞ্চুরি ও তরুণ স্পিনার নাঈম হাসানের ছয় উইকেটও।
তৃতীয় রাউন্ডের শেষ দিনে ম্যাচের ফল বের করতে বোলারদের এগিয়ে আসতে হত। কিন্তু তেমনটা হয়নি। বগুড়ায় চট্টগ্রামকে গুটিয়ে দিতে দুই সেশনেরও বেশি সময় হাতে ছিল ঢাকা মেট্রোর। কিন্তু মেট্রোর নির্বিষ বোলিং তো ছিলই, চট্টগ্রামেরও ছিল সাবধানী ব্যাটিং। ৩০৬ রানের জয়ের লক্ষ্যে টপ অর্ডারদের দৃড়তায় চট্টগ্রামের রান যখন ৩ উইকেটে ১৫৯ তখন ড্র মেনে নেন দুই অধিনায়ক। ফিফটি পূর্ণ করে অপরাজিত ছিলেন পিনাক ঘোষ। এর আগে ৬ উইকেটে ১৯১ রান নিয়ে দিন শুরু করা মেট্রো ৭ উইকেটে ২৫৪ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। শামসুর রহমানের একমাত্র উইকেটটি নেন আগের দিনই পাঁচ উইকেট নেয়া নাঈম। প্রথম ইনিংসে তিন উইকেট নেয়া ১৭ বছর বয়সী ডানহাতি অফ-স্পিনার এবার নিলেন ১১৯ রানে ছয়টি।
খুলনায় উত্তাপের আগুনে জল ঢেলে দেন তুষার ইমরান। প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে এদিন তুলে নেন ৩১তম সেঞ্চুরি। শেষ পাঁচ ইনিংসে এটি তার তৃতীয় শতক। প্রথম রাউন্ডের মত এবারো তার ব্যাটেই মূলত হার এড়ায় খুলনা। আগের দিন অপরাজিত ছিলেন ৬৩ রানে। এদিন জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কাটিয়ে দেন প্রথম সেশনের পুরোটাই। জিয়াউর ৬৩ রানে ফিরলেও দলকে নিরাপদে রেখে ব্যাক্তিগত ১০৩ রানে আউট হন তুষার। ৯ উইকেটে ৩৩৪ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে খুলনা। অফ স্পিনে ৪ উইকেট নেন মাহমুদুল। ৩২৪ রানের লক্ষ্যে রংপুরের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৯১ হওয়ার পর দুই অধিনায়ক ড্র মেনে নেন। দুই ইনিংসেই সত্তোরোর্ধো ইনিংসের পর বল হাতে মিডিয়াম পেসে পাঁচ উইকেট নেয়ায় এই পুরষ্কার উঠেছে সৌম্য সরকারের হাতে।
বরিশাল ও কক্সবাজারে বৃষ্টির বাধায় প্রথম দুই দিন ম্যাচ মাঠে গড়ায়নি। তবে তৃতীয় দিনে ১৯ উইকেটের পতনে জমে উঠে স্বাগতিক বরিশাল ও রাজশাহীর মধ্যকার ম্যাচ। কিন্তু শেষ দিনে বোলাররা তেমন কিছুই করতে না পারায় এখানকার ম্যাচও অনুমিতভাবেই ড্র হয়। হাতের এক উইকেটে এদিন আরো ৩০ রান যোগ করে রাজশাহী। ৫৯ রানে অপরাজিত থাকেন মুক্তার আলী। আব্দুল গফ্ফারকে নিয়ে শেষ উইকেটে তিনি যোগ করেন ৭০ রান। জবাবে শাহরিয়ার নাফিসের সেঞ্চুরি ও সামাজুল ইসলানের ফিফটিতে ৭ উইকেটে বরিশালের সংগ্রহ যখন ২২৯ তখন ড্র মেনে নেন দুই অধিনায়ক।
আর কক্সবাজারে তো দু’দলের প্রথম ইনিংসও শেষ হয়নি। ২ উইকেটে ২২৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা সিলেট তাদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ৯ উইকেটে ৩৫৫ রান তুলে। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান জাকির হাসান ও রাজিন সালেও সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও পারেননি। ৯৬ রানে আউট হন রাজিন, ৮৮ রানে জাকির। চার উইকেট নেন তাইবুর, তিনটি শুভাগত।
২০তম জাতীয় লিগের তৃতীয় রাউন্ড শেষে প্রথম স্তরে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে রাজশাহী বিভাগ (১২.৯৮)। একই পয়েন্ট নিয়েও বরিশালের (৯.৬১) চেয়ে ভগ্নাংশের ব্যবধানে এগিয়ে দুইয়ে খুলনা (৯.৯৫), চারে রাজশাহী বিভাগ (৮.৪৩)। এই স্তরের কোন ম্যাচই জয়-পরাজয়ের মুখ দেখেনি। তবে দ্বিতীয় স্তরে দ্বিতীয় রাউন্ডে জয় পায় ঢাকার দুই দল। সেই সুবাদে ও দুই ড্রয়ে পরিস্কার ব্যবধানে এগিয়ে শীর্ষে ঢাকা মেট্রো (১৮.৫৯)। সমান পরিসংখ্যান নিয়েও পয়েন্টের ব্যবধানে বেশ পিছিয়ে ঢাকা (১৩.৫)। তিন ও চারে যথাক্রমে চট্টগ্রাম (৬) ও সিলেট (৪.৫)।

খুলনা-রংপুর, খুলনা (১ম স্তর)
খুলনা : ৩০৪ ও (তৃতীয় দিন শেষে ১৮১/৫) ১০০.৪ ওভারে ৩৩৪/৯ ডি. (তুষার ১০৩, জিয়া ৬৩, মেহেদি ৩১, বিশ্বনাথ ৩*, আল আমিন ৯; সাজেদুল ১/৩৩, রবিউল ১/৪২, সাদ্দাম ০/৩১, সঞ্জিত ১/৭৫, শুভ ০/৭৯, মাহমুদুল ৪/২৯, তানবীর ২/২৫)।
রংপুর : ৩১৫ ও (লক্ষ্য ৩২৪) ২৩ ওভারে ৯১/১ (জাভেদ ৬৪*, মারুফ ১২, মাহমুদুল ১১*; আল আমিন ১/১৮, সৌম্য ০/১৫, মেহেদি ০/১৮, বিশ্বনাথ ০/১৬, এনামুল ০/১৮, আফিফ ০/২, রবি ০/০)।
ফল : ড্র। ম্যাচসেরা : সৌম্য সরকার (খুলনা)
বরিশাল-রাজশাহী, বরিশাল (১ম স্তর)
বরিশাল : ১৩৩ ও ৭৫ ওভারে ২২৯/৭ (নাফিস ১০২, রাফসান ৯, শামসুল ৬২, আল আমিন জুনিয়র ১২, মোসাদ্দেক ১০, সোহাগ ১১, নুরুজ্জামান ৩, রাব্বি ৯, সালমান ০; রেজা ০/৩২, মুক্তার ০/২১, গাফ্ফার ০/২৯, তাইজুল ৩/৫৫, সানজামুল ০/৫২, ফরহাদ ১/১৩, সাব্বির ৩/১৯)।
রাজশাহী : (তৃতীয় দিন শেষে ১২৫/৯) ৪৩.৪ ওভারে ১৫৫ (মুক্তার ৫৯*, গাফ্ফার ৭; রাব্বি ২/৪৫, সোহাগ ৩/৪১, তানভীর ৩/৪২, মনির ২/১৫, মোসাদ্দেক ০/১)।
ফল : ড্র। ম্যাচসেরা : মুক্তার আলী (রাজশাহী)

ঢাকা মেট্রো-চট্টগ্রাম, বগুড়া (২য় স্তর)
ঢাকা মেট্রো : ২৮৭ ও (তৃতীয় দিন শেষে ১৯১/৬) ৯০ ওভারে ২৫৪/৭ ডি. (শামসুর ৫২, শরিফউল্লাহ ৩১, তাসকিন ১৩; ইয়াসিন ০/৮, নাঈম ৬/১১৯, রানা ০/৩৫, শাখাওয়াত ১/৯১)।
চট্টগ্রাম : ২৩৬ ও (লক্ষ্য ৩০৬) ৫৪ ওভারে ১৫৯/৩ (সাদিকুর ২৭, পিনাক ৫৯*, মুমিনুল ৩২, ইয়াসির ২৩, মাহিদুল ১৪*; তাসকিন ০/১৪, আশরাফুল ০/১৭, সানি ২/৭৭, শরিফউল্লাহ ১/১৭, শহিদুল ০/১৩, সাদমান ০/৭, মেহরাব জুনিয়র ০/১০)।
ফল : ড্র। ম্যাচসেরা : নাঈম হাসান (চট্টগ্রাম)
সিলেট-ঢাকা, কক্সবাজার (২য় স্তর)
সিলেট ১ম ইনিংস : ৮৪ ওভারে ২২৯/২ (ইমতিয়াজ ৪১, তৌফিক ৩৫, জাকির ৮৮, রাজিন ৯৬, কাপালি ৩৬, শামসুর ৮,রুমন ৩৪, এনামুল জুনি. ০, আবু জায়েদ ৯, নাবিল ০*; শাহাদাত ১/৩৬, শাকিল ০/৩৫, মোশাররফ ০/১০৩, শুভাগত ৩/৭২, তাইবুর ৪/৭৪, মিলন ১/২৪, মাজিদ ০/৩)।
ঢাকা ১ম ইনিংস : ২৭ ওভারে ৫৫/৩ (জয়রাজ ৫, মাজিদ ১০, সাইফ ২২, শুভাগত ৭*, অনিক ৬*; আবু জায়েদ ১/২৭, খালেদ ০/১৪, এনামুল জুনি. ২/৭, নাবিল ০/৬)।
ফল : ড্র।



 

Show all comments
  • মামুন ১৯ অক্টোবর, ২০১৮, ২:৩৭ এএম says : 0
    ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • আতাউল্লাহ বুখারী ১৯ অক্টোবর, ২০১৮, ৪:১৮ পিএম says : 0
    আল্লাহ তাকে জাতিয় দলে খেলার তাওফিক দান করুন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তুষার

২২ নভেম্বর, ২০২১
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ