নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
দলকে আরেকটি এশিয়া কাপ ফাইনালের স্বপ্ন দেখিয়ে ফিরেছিলেন সেমির মঞ্চ থেকেই। দুবাই থেকে যখন দেশে ফেরেন তখনও বাংলাদেশের ক্রিকেটে অমানিশার অন্ধকার। একদিন পর যখন হাসপাতালে ভর্তি হলেন তাতে শঙ্কা জেগেছিলো তার হাত হারানো নিয়েই! সেই মেঘ সঙ্গী করেই যখন অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন, চেহারায় ছিল শঙ্কার ছায়া। কণ্ঠে ছিল সংশয় ও উৎকণ্ঠা। ফেরার সময় সেই সাকিব আল হাসানের মুখেই হাসি। দেশে ফিরেই শোনালেন আশার কথা। আঙুলে শক্তি ফিরলে মাঠে ফিরতে পারেন আগামী মাসেও।
সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় বাঁ হাতের কনিষ্ঠা আঙুল প্রায় হারাতে বসেছিলেন সাকিব। তবে বড় দুর্ঘটনা ঘটার আগেই ছোট একটি অস্ত্রোপচারে সে যাত্রা পার পেয়েছিলেন তিনি। এরপর অস্ট্রেলিয়ায় নিয়েছেন উন্নত চিকিৎসা। ফলে সংক্রমণ পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে। দেশে ফিরে এমনটাই জানিয়েছেন এ অলরাউন্ডার। তবে এখনও আঙুলে পূর্ণ শক্তি ফিরে আসেনি। শক্তি ফেরাতে এর মধ্যেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় নেমে পড়েছেন তিনি।
গতকাল বেলা ১১.৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন সাকিব। এরপর আঙুলের সর্বশেষ পরিস্থিতির কথা জানান এ অলরাউন্ডার, ‘সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে প্রতি সপ্তাহে রক্ত পরীক্ষা করে জানতে হবে ব্যথা আবার বাড়ল বা অন্য কোনো সমস্যা হলো কিনা। তবে এখন পর্যন্ত সংক্রামণ নিয়ন্ত্রণেই আছে।’
এশিয়া কাপ শেষেই আঙুলের অস্ত্রোপচার করাতে চেয়েছিলেন সাকিব। তবে পরবর্তীতে এশিয়া কাপ খেলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। মূলত ফিজিও কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেয়েই খেলতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আসরের মাঝপথে আঙুলের ব্যথা বেড়ে যাওয়ায় দেশে ফিরে আসেন তিনি। এরপর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সে অস্ত্রোপচার আর করা হয়নি তার। খুব শিগগিরই করারও সম্ভাবনা নেই। তবে অস্ত্রোপচার ছাড়া পুনর্বাসনের মাধ্যমে খেলায় ফিরে আসার কথা ভাবছেন দেশ সেরা এ অলরাউন্ডার, ‘অস্ত্রোপচার ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে করা যাবে না। কিন্তু ভালো দিক হচ্ছে অস্ত্রোপচার না করেও হয়তো খেলা সম্ভব হতে পারে। আমি বলেন আর ফিজিওর পরামর্শে বলেন, ওই দিকটা চিন্তা করা হচ্ছে যে অস্ত্রোপচার বাদে কিভাবে খেলা যায়।’
তবে ঠিক কবে মাঠে ফিরতে পারবেন তা ঠিকভাবে বলতে পারছেন না সাকিব। আপাতত আঙুলে শক্তি ফিরে পাওয়ার মিশনে নামবেন এ অলরাউন্ডার, ‘এর (মাঠে ফেরা) আসলে কোনো সময় বাঁধা নাই। হতে পারে যে সামনের মাসেও খেলতে পারি। এখন আমার হাতে ব্যথা নেই। খুব ভালো অনুভব করছি। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমার হাতের শক্তি কতক্ষণে ফিরে আসে। পুনর্বাসনের মাধ্যমে তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে পারে। যদি আসে তাহলে সামনের মাসেও খেলতে পারি। আবার পুনর্বাসনের পর যদি ব্যথা অনুভব করি তাহলে আবার অপেক্ষা করতে হবে যে কখন অস্ত্রোপচার করতে পারব। এটা আসলে খুব অনিশ্চিত। তারপরও যেহেতু (আঙুলে) শক্তি আসার ব্যাপার আছে, একমাসে হয়তো হবে না। একটু সময় বেশিই লাগবে।’
বসে নেই সাকিব। দেশে ফেরার আগেই শুরু করে দিয়েছেন ফেরার প্রক্রিয়া। এর মধ্যেই পুনর্বাসন শুরু করে দিয়েছেন থেরাপিস্ট দেখিয়ে। দ্রুতই আঙুলে শক্তি ফিরে পেতে চান এ অলরাউন্ডার, ‘আমি এর মধ্যেই শুরু করে দিয়েছি। ওখানে থাকতেই শুরু করেছি। ওখানে হাতের থেরাপিস্টকে দেখানো হয়েছে। উনি যেভাবে বলেছেন, সেভাবে কাজ করতে হবে। যত বেশি করা যাবে ততো আমার জন্য ভালো। যত বেশি সম্ভব আঙুলে শক্তি আনা, সেটাই এখন প্রধান উদ্দেশ্য।’
আগামী সপ্তাহেই আবার শুরু হচ্ছে ক্রিকেটের ডামাডোল। বাংলাদেশ সফরে আসছে জিম্বাবুয়ে। এরপর আসবে উইন্ডিজ। জিম্বাবুয়ে-তো বটেই, সম্ভবত খেলা হচ্ছে না উইন্ডিজ সিরিজেও। ওয়ানডেতে না থাকলেও তামিম ইকবালকে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই জানা গেছে। সেটা নির্ভর করবে তামিমের হাতের ইনজুরি কতো দ্রুত সেরে ওঠে। তবে উইন্ডিজ সিরিজে সাকিবকে না পেলেও তামিমকে পাওয়া যাবে বলেই জানিয়েছিলেন বিসিবি চিকিৎসকরা। দলের সেরা দুই তারকাকে ছাড়া খেলা কিছুটা দুশ্চিন্তারই বটে। তবে এ দুই তারকাকে ছাড়াই কদিন আগে এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছে বাংলাদেশ। তাই জিম্বাবুয়ে ও উইন্ডিজের বিপক্ষে তাদের ছাড়া না জেতার কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না সাকিব।
তবে সাকিব ও তামিমকে ছাড়া খুব বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশের। এশিয়া কাপের সাম্প্রতিক সাফল্য কিছুটা হলেও অনুপ্রেরণা দেবে টাইগারদের। আর এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার মতো দলের বিপক্ষে পারলে এ দুই দলের বিপক্ষে পারবেন এমন আত্মবিশ্বাসই ঝরে সাকিবের কণ্ঠে, ‘সত্যি কথা বলতে কারো জন্য কোনো কিছু অপেক্ষা করে না। আমি আশা করি বাংলাদেশ আরও ভালো করবে। আমি তামিম ছাড়া যদি এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ফাইনাল খেলতে পারি তাহলে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে না জেতার কোনো কারণই দেখি না।’
শক্তির বিচারে জিম্বাবুয়ের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। উইন্ডিজেরও সেই সুবর্ণ সময় নেই। কিন্তু তারপরও সাকিব-তামিম না থাকা কিছুটা হলেও ভাবাচ্ছে বাংলাদেশকে। তবে এ ইনজুরিকে তরুণদের জন্য সুযোগ মনে করছেন সাকিব, ‘এটা (ইনজুরি) আসলে খেলার অংশ। একজন দুইজন খেলোয়াড় সব সময় ফিট থাকবে না। সব সময় খেলতেও পারবে না। সুবিধা হচ্ছে নতুন নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ আসে। আশা করি তারা কাজে লাগাতে পারবে এবং ভালো করবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।