নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
টানা ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে অবশেষে ব্যাট হাসল নাজমুল হোসেন শান্তর। ওয়ালটন জাতীয় ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডের দ্বিতীয় দিন রাজশাহীর হয়ে রংপুরের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন শান্ত। থেমেছেন ১৭৩ রানে। আগের রাউন্ডেই ৩৫০ রানের রেকর্ড উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন আব্দুল মজিদ ও রনি তালুকদার। মিজানুর রহমানকে নিয়ে সেই রেকর্ডকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিলেন শান্ত। শেষ পর্যন্ত রেকর্ড হয়নি, তবে রাজশাহীর দুই ওপেনারের তিনশ ছাড়ানো জুটিতে পিষ্ট হয়েছে রংপুরের বোলিং। দিন শেষে রাজশাহীর রান ২ উইকেটে ৪১৯। আগের দিন রংপুর প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গিয়েছিল ১৫১ রানেই। রাজশাহী এগিয়ে গেছে ২৬৮ রানে।
টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ১৬৫ রানে আউট হয়েছেন মিজানুর। আগের রাউন্ডে ৪৬ রানে আউট হলেও এবার শুরুটা হেলায় হারাননি শান্ত। দুজনে গড়েছেন ৩১১ রানের উদ্বোধনী জুটি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের পঞ্চম সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি।
গত আগস্টে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে আয়ারল্যান্ড সফরে প্রথম আনঅফিসিয়াল টি-টোয়েন্টি ম্যাচে শান্ত করেছিলেন ৩৮ রান। কিন্তু পরের তিন ম্যাচে দুই অঙ্কই ছুঁতে পারেননি। পরের মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এশিয়া কাপে তামিম ইকবালের চোটে ওয়ানডে অভিষেক হয় শান্তর। কিন্তু দলের প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। তিন ম্যাচে ৭, ৭ ও ৬ রান করায় শেষ দুই ম্যাচে একাদশে সুযোগ পাননি। ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে একের পর এক খেলোয়াড়ের চোটে হঠাৎ করেই একটি টেস্ট খেলে ফেলা শান্তর সামর্থ্য নিয়ে যদিও সংশয় ছিল না কারও। জাতীয় লিগে ফিরেই সামর্থ্যরে প্রমাণ দিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
শান্ত ডাবল সেঞ্চুরি হারালেও সেদিকে ঠিকই এগিয়ে যাচ্ছেন সাদমান ইসলাম। বলতে গেলে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সময়টা দারুণ কাটছে তরুণ এই ওপেনারের। আগের ম্যাচে ক্যারিয়ারের প্রথম দেড়শ ছোঁয়া ইনিংস খেলা সাদমান দাঁড়িয়ে আছেন প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির দুয়ারে। ফতুল্লায় তার ব্যাটেই ঢাকার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে বড় লিড নেওয়ার পথে ঢাকা মেট্রো। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে মেট্রোর সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৩১২ রান। সাদমান ১৮৬ ও মেহরাব হোসেন জুনিয়র ৩৭ রানে ব্যাট করছেন। প্রথম ইনিংসে ঢাকাকে ২০৬ রানে গুটিয়ে দেওয়া মেট্রো ১০৬ রানে এগিয়ে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি সাদমানের সপ্তম ও শেষ সাত ম্যাচে চতুর্থ সেঞ্চুরি। তার ৩১৩ বলের ইনিংসটি গড়া ২১ চার ও ১ ছক্কায়। এনসিএলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি পেলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। সিলেটের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তিনি করেছিলেন ১৫৭ রান। সেই রান ছাড়িয়ে আশা জাগিয়েছেন ডাবল সেঞ্চুরির।
খুলনায় প্রথম দিনই রোমাঞ্চের গল্পের ইতি হয়েছে দ্বিতীয় দিনে এসেই। শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপ নিয়েও স্বগতিক শিবির ছিল বিপাকে। সেখান থেকে দলকে টানলেন মোহাম্মদ মিঠুন ও জিয়াউর রহমান। বিপদ যদিও কাটেনি পুরোপুরি। বরং লিড নেওয়ার সম্ভাবনায় এগিয়ে বরিশালই। দ্বিতীয় দিন শেষে বরিশালের চেয়ে ঠিক ১০০ রানে পিছিয়ে খুলনা, হাতে উইকেট কেবল চারটি।
খুলনায় জাতীয় লিগের প্রথম স্তরের ম্যাচটিতে প্রথম ইনিংসে বরিশাল করেছে ২৯৯। ৮ উইকেটে ২৬৬ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল বরিশাল। শেষ দুই জুটিতে এ দিন তারা যোগ করতে পারে আর ৩৩ রান। ৪৮ রান নিয়ে অপরাজিত থাকা নুরুজ্জামান শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন ৭৬ রান করে। খুলনা দিন শেষ করেছে ৬ উইকেটে ১৯৯ রান নিয়ে।
আগের ম্যাচে সাতে নেমে সেঞ্চুরি করা সৌম্য এবার সোহাগ গাজীর অফ স্পিনে কাটা পড়েন ৩৩ রানে। ঐ রাউন্ডে জোড়া সেঞ্চুরি করা তুষার এবার শুরুটা ভালো করেও লম্বা করতে পারেননি ইনিংস। ৩১ রানে তিনিও শিকার সোহাগের। ৮৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন ধুঁকছিল খুলনা। পাঁচে নামা মিঠুন ও অভিজ্ঞ জিয়ার ব্যাট সেই বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করে খুলনাকে। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের জুটিতে আসে ১০৬ রান। এশিয়া কাপ খেলার পর বিশ্রাম কাটিয়ে জাতীয় লিগের প্রথম সুযোগে মিঠুন করেছেন চারটি চার ও তিন ছক্কায় ৭২ রান। শেষ বিকেলে তাকে হারিয়ে আরেকটি ধাক্কা হজম করে খুলনা। তবে ১১২ বলে ৪৬ রান করে টিকে আছে জিয়াউর। তরুণ আফিফ হোসেনকে নিয়ে তৃতীয় সকালে শুরু হবে তার লড়াই।
এদিকে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের মধ্যকার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে বৃষ্টির কারণে একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় স্তরের এই ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল সাড়ে ৯টায়। কিন্তু সকাল থেকেই কক্সবাজারে বৃষ্টি। ফলে নির্ধারিত সময়ে তো নই, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও খেলা শুরু করা যায়নি। দুপুর ২টার দিকে দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা-বরিশাল, খুলনা
বরিশাল ১ম ইনিংস : ২৯৯।
খুলনা ১ম ইনিংস : ৭৫ ওভারে ১৯৯/৬ (ইমরুল ৬, এনামুল ৬, সৌম্য ৩৩, তুষার ৩১, মিঠুন ৭২, জিয়াউর ৪৬*, আফিফ ০*; কামরুল ২/২৬, মনির ১/৫১, সোহাগ ২/৫৮, সালমান ১/২৭)।
রংপুর-রাজশাহী, রাজশাহী
রংপুর ১ম ইনিংস : ১৫১।
রাজশাহী ১ম ইনিংস : ১১৬ ওভারে ৪১৯/২ (আগের দিন ৯৯/০) (শান্ত ১৭৩, মিজানুর ১৬৫, জুনায়েদ ৩৯*, ফরহাদ ২৬*; আরিফুল ১/৫৬, মাহমুদুল ১/৬৭)।
ঢাকা-ঢাকা মেট্রো, ফতুল্লা
ঢাকা ১ম ইনিংস : ২০৬।
ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: (প্রথম দিন শেষে ২৬/০) ১০২ ওভারে ৩১২/৪ (সাদমান ১৮৬*, সৈকত ২৩, আশরাফুল ৪৯, মেহরাব জুনিয়র ৩৭*; শাহাদাত ২/৫৪, সালাউদ্দিন ১/৬৪, শুভাগত ১/৬৪)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।