নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
কাজটা খুব সহজ ছিল না বাংলাদেশের জন্য। টি-টোয়েন্টি সিরিজ হোয়াইটওয়াশের পর আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরার কথা। ভুলগুলো না শুধরে মাঠে নামাও ছিল চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণিত করলেন মেয়েরা। নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্যরে ওপর ভরসা রেখে দৃঢ় মনোবল নিয়ে লড়াই করল রুমানা আহমেদের দল। পাকিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় জয় পেল বাংলাদেশ। কক্সবাজারে ৬ উইকেটে হারিয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে ওয়ানডেতে পাকিস্তানের মেয়েদের বিপক্ষে শতভাগ সাফল্য ধরে রাখল মেয়েরা।
বাংলাদেশের জয়ের নায়ক খাদিজাতুল কুবরা। ডানহাতি এ অফস্পিনারের দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তান ৩৪.৫ ওভারে অলআউট হয় ৯৪ রানে। জবাবে বাংলাদেশ ১২৬ বল আগে ৬ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেট আছে দুই জনের। অথচ ওয়ানডেতেই ছিল না কারও! সেই আক্ষেপ ঘুচল কুবরার ঘূর্ণিতে। বাংলাদেশের মেয়েদের হয়ে ৫ উইকেটের প্রথম স্বাদই শুধু পাননি, আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়েছেন ৬ উইকেট। দেশের হয়ে সেরা বোলিংয়ের কীর্তি এখন এই অফ স্পিনারের। ৯.৫ ওভার বোলিং করে ২০ রানে নিয়েছেন ৬ উইকেট।
গত বছর এই কক্সবাজারেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পরপর দুই ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন কুবরা। এবার শুধু নিজেকে নয়, ছাড়িয়ে গেলেন দেশের সবাইকে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সেরা বোলিংয়ের আগের রেকর্ড ছিল রুমানা আহমেদের। বাংলাদেশের এখনকার ওয়ানডে অধিনায়ক ২০১৩ সালে আহমেদাবাদে ভারতের বিপক্ষে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন ২০ রানে। বাংলাদেশের মেয়েদের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে ১৬ রানে ৫ উইকেট আছে পান্না ঘোষের, ২৮ রানে ৫ উইকেট জাহানারা আলমের।
কুবরার ২০ রানে ৬ উইকেট সব মিলিয়ে মেয়েদের ওয়ানডে ইতিহাসের ষষ্ঠ সেরা বোলিং কীর্তি। মেয়েদের ওয়ানডেতে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটি প্রায় অবিশ্বাস্য। ২০০৩ সালে জাপানের আনকোরা মেয়েদের বিপক্ষে ৮ ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়ে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন সাজিদা শাহ। সাবেক পাকিস্তানি অফ স্পিনারের সেই রেকর্ড টিকে আছে এখনও। সাজিদা যে রেকর্ড ভেঙেছিলেন, সেটিও ছিল চোখ কপালে তোলার মতো। ১৯৯১ সালে ডেনমার্কের মেয়েদের বিপক্ষে ৯ ওভারে ৮ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের জো চেম্বারলেন।
এই ম্যাচের ৬ উইকেটে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারিও হয়ে গেছেন কুবরা। ৩০ ম্যাচে তার উইকেট ৪২টি। এই ম্যাচের আগে ৩৭ উইকেট নিয়ে শীর্ষে ছিলেন রুমানা। এই ম্যাচে দুই উইকেট নিয়ে রুমানার উইকেট এখন ৩৬ ম্যাচে ৩৯টি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান : ৩৪.৫ ওভারে ৯৪ (জাভেরিয়া ২৯, আয়েশা ১৮, মুনিবা ১৮; জাহানারা ১/১৯, পান্না ০/১৩, লতা ১/১১, সালমা ০/১১, কুবরা ৬/২০, রুমানা ২/১৫, ফাহিমা ০/২)।
বাংলাদেশ : ২৯ ওভারে ৯৫/৪ (আয়েশা ০, শারমিন ৩, ফারজানা ৪৮, রুমানা ৩৪, লতা ৩*, ফাহিমা ৫*; সানা ২/২০, ডায়না ১/১৮)।
ফল : বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : খাদিজা-তুল-কুবরা (বাংলাদেশ)।
সিরিজ : এক ম্যাচের সিরিজে জয়ী বাংলাদেশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।