Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিরপেক্ষ সরকার ও বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েন চাই

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশে পীর সাহেব চরমোনাই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:২৬ এএম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে। তিনি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেয়ারও দাবি জানান। দলের আমীর বলেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনের পর থেকে সেনা মোতায়েন এবং নির্বাচনের দিন তাদের হাতে বিচারিক ক্ষমতা দিতে হবে। পীর সাহেব রেডিও, টিভিসহ সকল সরকারী বেসরকারী গণমাধ্যমে সবাইকে সমান সুযোগ দেয়ার দাবিসহ রাজনৈতিক নেতা কর্মীদেরকে হয়রানি বন্ধ এবং কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে গ্রেপ্তারকৃত সকল ছাত্রদের মুক্তি ও সকল মামলা প্রত্যাহার দাবি করেন। তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা এবং নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। পীর সাহেব জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির (চ.জ) নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানান। পীর সাহেব উল্লেখিত দাবিসমূহ বাস্তবায়নে তিনদফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচি হচ্ছে : ১২ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল, ১৪ অক্টোবর প্রতিটি জেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি পেশ, ১৬ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট বরাবর স্মারকলিপি পেশ।
গতকাল শুক্রবার বাদ জুম’আ রাজধানীর সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ মাদানী, মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, মাওলানা আবদুল হক আজাদ, প্রিন্সিপাল মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, আলহাজ্ব আমিনুল ইসলাম, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, প্রিন্সিপাল শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা আহমাদ আব্দুল কাইয়ূম প্রমুখ। জনসমুদ্রে শ্রমিক আন্দোলন, যুব আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলন, ওলামা-মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ, শিক্ষক ফোরাম, মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ ও আইনজীবী পরিষদ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মহাসমাবেশ বাদ জুম’আ হওয়ার কথা থাকলেও ফজরের পর থেকেই জনতার স্রোত সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানমুখি ছিল। জুম’আ নামাযের পর পরই সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান জনসমুদ্রে পরিণত হয়। সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান উপচিয়ে নেতাকর্মীদের অবস্থান মৎস্য ভবন, দোয়েল চত্ত্বর থেকে শাহবাগ মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। মহাসমাবেশের কারণে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
মহাসমাবেশে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে পীর সাহেব বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। প্রধান দু’টি রাজনৈতিক জোট নির্বাচনকে সামনে রেখে মুখোমুখি অবস্থানে থেকে এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ সরকারী দলের প্রতি সঙ্কট সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের কথা বললেও সরকার কোন উদ্যোগ নেয়নি। গত ১০ বছরে জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেনি। নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসন কেউই নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করছে না। কিন্তু আগামীতে মানুষ তামাশা ও প্রহসনের নির্বাচন মানবে না। এই অবৈধ সংসদ বহাল রেখে কোন নির্বাচন দেশবাসী মেনে নেবে না। সংসদ ভেঙে ৯০ দিনের মধ্যে একটি দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন চায় দেশবাসী।
পীর সাহেব বলেন, প্রতিহিংসা জিঘাংসা আর ধ্বংসের রাজনীতির অবসান দরকার। ইসলামী আন্দোলন দেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে বাংলাদেশকে একটি কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। তিনি বলেন, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে সকল ধর্মের লোকজন আরো বেশী রাষ্ট্রের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করবেন। ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা হলে নারীরা সবচেয়ে বেশী সম্মানিত হবেন। নারীরা নিরাপত্তা ও অগ্রাধিকার পাবে।
তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ একটি নিয়মতান্ত্রিক গণমূখি রাজনৈতিক দল। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরী হলে ইসলামী আন্দোলন ৩০০ আসনেই হাতপাখা প্রতীকে প্রার্থী দিবে। তাই প্রত্যেক ভোটারের কাছে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন এবং হাতপাখার দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। পীর সাহেব বলেন, ক্ষমতায় গেলে ইসলামী আন্দোলন দেশে ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে। দুর্নীতি, মাদক উৎখাত করবে। সমঝোতা ও সহনশীল রাজনীতির বিকাশ ঘটবে। শ্রমজীবী মানুষ. সংখ্যালঘু এবং পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষাসহ স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা কায়েম করা হবে। বাংলাদেশকে উন্নতি, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির মাধ্যমে বিশ্বে একটি উন্নত ও মডেল কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করতে সুদ, ঘুষ ও অপচয় বন্ধ করা হবে।
প্রিন্সিপাল মাদানী বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে খুন, গুম ও হত্যার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। ব্যাংক লুট, শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারী, ব্যাংক থেকে সোনা লুট করে দেশে লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে। তিনি ভারতের বিজেপি এমপি’র বাংলাদেশ দখলের হুমকির জবাবে বলেন, বাংলাদেশ দখল নয় বরং দিল্লিতে ইসলামের পতাকা উড়বে।
মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, আওয়ামী ও বিএনপি দু’টি দলই পরীক্ষিত দুর্নীতিবাজ দল। তাদের পুনরায় ক্ষমতায় আনার মাধ্যমে দেশ থেকে সন্ত্রাস ও দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না। এজন্য আগামী নির্বাচনে হাতপাখাকে বিজয়ী করতে হবে।
মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ বলেন, ইসলামী আন্দোলন যে শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চায় সেখানে সর্বস্তরের মানুষ স্বাধীনভাবে বলতে ও লিখতে পারবে। মানুষের দু:খ কষ্ট বলতে কিছু থাকবে না। #



 

Show all comments
  • rasel ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ৩:৫৮ এএম says : 1
    we are agree with you
    Total Reply(0) Reply
  • ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ৬:২৯ এএম says : 1
    সব মার্কার দেখা শেষ হাতপাখার বাংলাদেশ
    Total Reply(0) Reply
  • ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ৮:৪৪ এএম says : 0
    মহাসমাবেশ থেকে যে ঘোষণা দিয়েছেন,পীর সাহেব চরমোনাই তা দেশ জাতির শার্তে ।সুতরাং সরকারের উচিত হবে দাবি গুলো মেনে দেশ জাতিকে শান্তির মাধ্যমে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়া ।
    Total Reply(1) Reply
    • Kadir ৯ অক্টোবর, ২০১৮, ২:৩০ এএম says : 4
      Amon jodi hoto.kintu oronne rudon.
  • Md Abdullah ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:১২ পিএম says : 0
    yes
    Total Reply(0) Reply
  • Md Abdullah ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:৫৮ পিএম says : 0
    ইনসাআল্লাহ আগামিতে ভোটচুরি না হলে হাত পাখাই জিতবে
    Total Reply(0) Reply
  • Md Nuruzzaman Moyna ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১:৩৯ পিএম says : 0
    হুজুর আপনাকে ধন্যবাদ গনতন্ত্র পক্ষে কাজ করার জন্য।
    Total Reply(0) Reply
  • শাহজালাল শাকিব ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ১:৪০ পিএম says : 0
    আমি চরমোনাইকে ক্ষমতায় দেখতে চাই
    Total Reply(0) Reply
  • মু. ইকবাল হোসাইন। ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ৩:০২ পিএম says : 0
    ইসলামের বৃহৎ স্বাথে ইমলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যেকোন দলের সাথে জোট করতে রাজী আছে, কিন্তু নিরবাচন কেন্দ্রিক কোন সস্তা জোট মহাজোটে ইসলামী আন্দোলন যাবেনা।কারন, ইসলামী আন্দোলন ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করেনা, আসন ভাগাভাগির রাজনীতি করেনা। ইসলামী আন্দােলন বাংলাদেশ করে আদশের রাজনীতি।
    Total Reply(0) Reply
  • ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ৪:০৮ পিএম says : 0
    হে আল্লাহ তা আলা পীর সাহেব কে কবুল কর নেন।
    Total Reply(0) Reply
  • abu hanif ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ৪:৩০ পিএম says : 0
    সব মার্কার দেখা শেষ হাতপাখার বাংলাদেশ
    Total Reply(0) Reply
  • নূর বিন ইয়াসিন ৬ অক্টোবর, ২০১৮, ৬:০২ পিএম says : 0
    ইনশাআল্লাহ হাত পাখার বিজয় একদিন এদেশের মানুষ দেখবে
    Total Reply(1) Reply
    • Raki ৯ অক্টোবর, ২০১৮, ২:৪২ এএম says : 4
      Se din adu asbeki ?
  • কামরুজজামান ৯ অক্টোবর, ২০১৮, ৬:৪৬ পিএম says : 0
    انساء الله today or tomorrow ইসলামী আন্দোলন জয় হবেই৷
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পীর সাহেব চরমোনাই


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ