এডিট করা যাবে পাঠানো মেসেজ! অতি প্রয়োজনীয় ফিচার আনছে হোয়াটসঅ্যাপ
অ্যাপেল কিংবা টেলিগ্রামের মতো অ্যাপগুলিতে মেসেজ পাঠিয়ে দেয়ার পরও তাতে কোনও ভুল থাকলে এডিট করা
অনলাইনের এ যুগে বেকার শব্দটি বড্ড বেশি বেমানান। কারণ অনলাইন সারা বিশ্বকে নিয়ে এসেছে আপনার ঘরের কোণে। এখন ঘরে বসেই বিদেশে বসবাস করা আপনজনদের সাথে ভিডিও কথোপকথন করা সম্ভব হচ্ছে, যা আজ থেকে মাত্র তিন বছর আগেও মানুষের কাছে অসম্ভব এবং অবিশ্বাস্য মনে হতো। বিষয়টি এখন গ্রামের স্বল্প শিক্ষিত মানুষের কাছেও অতিপরিচিত। যোগাযোগব্যবস্থার একটি বিশাল মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেটের এই উন্নত যোগাযোগব্যবস্থার ফলে সারা বিশ্ব আজ ছোট হয়ে গেছে এবং এসেছে বিশাল বড় পরিবর্তন। সারা বিশ্বে ছোট ছোট কোম্পানির পাশাপাশি বড় কোম্পানিগুলোও ভাবতে শুরু করেছে, তাদের কাজের জন্য সব স্টাফকে অফিসে বসানোর দরকার নেই। খরচ কমানোর পরিকল্পনায় তারা সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কাজের জন্য লোক নেওয়া শুরু করল, যারা অফিসে না এসে অন্য দেশে ঘরে বসেই সব কাজ করতে পারবেন। অনলাইন বিষয়টিকে এতই সহজ করে দিল, যার জন্য এখন আর প্রয়োজন হচ্ছে না নিজের দেশ ত্যাগ করে, নিজের পরিচিত পরিবেশ, বন্ধু-আত্মীয়স্বজনকে ত্যাগ করে দূরে চলে গিয়ে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া। ঘরে বসেই মানুষ এখন বড় বড় কোম্পানিতে চাকরি করছে। দিনে দিনে এ সংখ্যা আরও বাড়ছে, সামনে আরও বাড়বে। কারণ অনলাইনে কাজ করতে গিয়ে এখনো যেসব বাধা আছে, সেগুলোও ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাচ্ছে। অনলাইনে বসে এ রকম কাজ করে যারা নিজেদের ক্যারিয়ারকে গড়ে তুলেছেন, তাদেরই ফ্রিল্যান্সার বলে। আর এ ধরনের কাজকেই ফ্রিল্যান্সিং বলে।
ওপরের কথা থেকে বুঝেছি, ফ্রিল্যান্সিংটা আসলে কী? যদি সত্যিকারভাবেই ওপরের অংশ থেকে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে থাকেন, তাহলে হয়তো মানুষের মধ্যে চলে আসা ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে ভুল ধারণাটি দূর হবে।
ফ্রিল্যান্সিং বিষয়ে প্রচলিত কয়েকটি ভুল ধারণা
১. কোথাও কোনোভাবে আয় করতে পারছে না, তাহলে শেষ গন্তব্য ফ্রিল্যান্সিং।
২. ফ্রিল্যান্সিং মানেই আপওয়ার্ক, ইল্যান্স ইত্যাদি জায়গায় কাজ করা।
৩. ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য খুব বেশি যোগ্যতার দরকার নেই।
৪. ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য অসাধারণ গুণের অধিকারী হতে হয়।
৫. ফ্রিল্যান্সিং চাকরি কিংবা পড়ালেখার পাশাপাশি পার্টটাইম চাকরি হতে পারে, ফুলটাইম নয়।
৬. চাকরিতে সব সময় টাকা আসার নিশ্চয়তা থাকলেও ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে বিষয়টা অনিশ্চিত।
৭. বিদেশিদের মতো ইংরেজি না জানলে ফ্রিল্যান্সার হওয়া যাবে না।
৮. পড়ালেখা না জেনেও ফ্রিল্যান্সিং করা যাবে।
৯. ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য সাত দিন কিংবা এক মাসের প্রস্তুতি যথেষ্ট।
১০. ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য নিজের নামে পেপ্যাল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
১১. ফ্রিল্যান্সিং শিখতে হলে ট্রেনিং সেন্টারে যেতে হবে।
১২. সায়েন্সের স্টুডেন্ট না হলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয় করা যায় না।
ফ্রিল্যান্সিংকে আরও বেশি জনপ্রিয় করতে হলে এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা দরকার। সাধারণত ইন্টারনেট থেকে আয়ের অনেক পথ আছে, আবার প্রতারণার ফাঁদও আছে। তাই সাবধানতার সঙ্গে বুঝেশুনে আপনাকে পথ চলতে হবে। অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে পথ চললে সফল হতে পারবেন। এখন চাকরি না পেলে বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। ঘরে বসেই মাসে ১৫ হাজার থেকে লাখ টাকার বেশি আয় করা সম্ভব ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে। আমরা ধারাবাহিকভাবে অনলাইন আয়ের বিভিন্ন উপায় নিয়ে এ আর্টিকেলটি লিখতে থাকব। তবে এক ক্লিকে এক কোটি ডলার বা সাইনআপ করেই ৫০ হাজার ডলার নিয়ে নিন, এমন কিছু এখানে পাবেন না। প্রথম পর্বেই বলে নিচ্ছি, যারা রাতারাতি বড়লোক হতে চান, তারা মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন না এ ধারাবাহিক লেখাটি পড়ে। মনে রাখবেন, পিটিসি, অ্যাড ক্লিকের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন ক্ষণস্থায়ী এবং অনেক সময় এটি প্রতারণার একটা অভিনব পদ্ধতি।
ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হওয়ার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা
— টাকা নয় কাজকে ভালোবাসতে হবে।
— ফ্রিল্যান্সিংকে শুধু পার্টটাইম হিসেবে নয়, ফুলটাইম ক্যারিয়ার ভাবা শুরু করতে হবে।
— কমিউনিকেশন দক্ষতা ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফলতা অনেক বাড়িয়ে দেয়।
— ইংরেজিতে যত ভালো হবেন, তত বেশি সফল হবেন।
— যত বেশি দক্ষ হবেন, সফল হতে পারবেন তত বেশি।
— সব সময় নিজের আরও বেশি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নেশা থাকতে হবে।
— যে যত বেশি গুগলের ওপর নির্ভরশীল, তার সফলতার সম্ভাবনা তত বেশি।
— ইন্টারনেটের ওপর জীবনকে নির্ভরশীল করতে পারলে ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হবেন।
— প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি ছাড়া কিছুতেই সফল হওয়া যায় না।
— ধৈর্যশক্তি এই সেক্টরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জেনে রাখা দরকার, কোনো ধরনের যোগ্যতা ছাড়া, কোনো কষ্ট ছাড়া আয়ের পরিমাণ হলেও অনেক কম হবে এবং বেশিদিন স্থায়ী হবে না। ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে দক্ষ লোকের মূল্য অনেক বেশি। দক্ষ লোকের জন্য অনলাইন থেকে মাসে এক-দুই লাখ টাকা আয় করা খুবই স্বাভাবিক। সে ক্ষেত্রে আপনার একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড কিংবা আপনার বয়স কোনো ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। এ দেশে নারী কিংবা প্রতিবন্ধী যাদের জন্য ঘরের বাইরে গিয়ে কাজ করা কষ্টসাধ্য, তারাও ফ্রিল্যান্সিং শিখে পুরুষের পাশাপাশি পরিবারের অর্থনীতিতে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাইলে কোন সেক্টরে কাজ করবেন?
এ বিষয়টি নিয়ে নতুনদের মনে অনেক প্রশ্ন থাকে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অনলাইনে আয় করতে আগ্রহী; কিন্তু কোন পথে হাঁটবেন, সেটি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। এ উত্তরটি আসলে নিজেকেই খুঁজে বের করতে হবে। তবে যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং বিষয়গুলো নিয়ে ধারণা কম, সে জন্য এখানে প্রধান বিষয়গুলো নিয়ে সংক্ষিপ্তভাবে বলার চেষ্টা করছি। ধারাবাহিকটির পরের পর্বগুলোতে প্রতিটি বিষয় বিস্তারিত নিয়ে আসব। প্রতিটি পর্ব পড়ার চেষ্টা করুন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।