Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রূপনগর থানা হাজতে আসামির মৃত্যু

পুলিশের দাবি আত্মহত্যা, তদন্ত কমিটি গঠন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

রাজধানীর মিরপুরে রূপনগর থানার হাজতে ধর্ষণের অভিযুক্ত এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। তার নাম কাউসার (১৯)। গতকাল সকাল সোয়া ৮টার দিকে হাজতখানার ভেতরে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ দাবি করছে, কাউসার হাজতখানার দরজার গ্রিলের সঙ্গে নিজের শার্ট গলায় পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে মৃতের স্বজনদের খোঁজ না পাওয়ায় প্রকৃত ঘটনা বা মৃত্যু নিয়ে তাদের কোন বক্তব্য জানা যায়নি। এদিকে ঘটনার সত্যতা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশের মিরপুর বিভাগ। 

রূপনগর থানা পুলিশ জানায়, গত বুধবার রাতে রূপনগরের দোহারিকা এলাকার এক বিবাহিত নারীর বাসায় যায় কাউসার। ওই নারী গার্মেন্টসকর্মী। তাকে কোমল পানীয়র সঙ্গে নেশা জাতীয় ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করে কাউসার। বিষয়টি ওই নারী এলাকাবাসীকে জানায়। পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে কাউসারকে ওই এলাকায় দেখে তাকে আটক করে এলাকাবাসী। তারা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানালে রূপনগর থানা পুলিশ দোহারিকা এলাকায় কাউসারকে আটক করে। এর মধ্যে ভুক্তভোগী নারীও থানায় এসে ধর্ষণ মামলা করেন। মামলা নং ২৯। গতকাল সকালে স্বাস্থ্য পরিক্ষার জন্য ভিকটিমকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়।
পুলিশ জানায়, মামলার পর আসামি কাউসারকে থানা হাজতে রাখা হয়। গতকাল সকাল সোয়া ৮টার দিকে থানা এলাকায় বিদ্যুৎ চলে যায়। এ সময় কাউসার হাজতখানার লোহার দরজার সঙ্গে নিজ গায়ের শার্ট লাগিয়ে গলায় ফাঁস দেয়। ডিউটি অফিসার গোঙানোর শব্দ পেয়ে হাতজখানায় গিয়ে কাউসারকে শার্ট দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পান। তাৎক্ষণাৎ তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
রূপনগর থানার ওসি শাহ আলম বলেন, দরজার সঙ্গে দাঁড়ানো অবস্থায় ফাঁস দেওয়ার কোনো কায়দা নেই। কিন্তু আসামি গ্রিলের সঙ্গে নিজের শার্ট বেঁধে পা উঁচু করে ঝুলে পড়ায় গলায় ফাঁস লেগে যায়। হাজতখানায় তখন অন্য কোন আসামি ছিল না।
আসামির নিরাপত্তায় কোন পুলিশ সদস্য হাজতখানার সামনে দায়িত্বরত ছিল কি না- এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, হাজতখানায় একজন পুলিশ সদস্য দায়িত্বে ছিল। ওই সময় বিদ্যুৎ না থাকায় ওই পুলিশ সদস্য হয়তো পাশে কোথাও গিয়েছে। পরে ওই পুলিশ সদস্যই মূলত আসামির গোঙানোর শব্দ শুনে ডিউটি অফিসারকে বললে ডিউটি অফিসারসহ অন্যরা গিয়ে আসামিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাজতখানার সামনে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের কোন গাফলতি আছে কি না- জানতে চাইলে ওসি বলেন, খবর শুনে সিনিয়র স্যাররা থানায় এসেছেন। গাফলতির বিষয়টিও তারা খতিয়ে দেখবেন।
রূপনগর জোনের এডিসি শাহেন শাহ বলেন, এ ঘটনায় তাকে (শাহেন শাহ) প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আসামি কাউসারের ঘটনা আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু তা তদন্তের পর জানা যাবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃত কাউসার ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার মৃত মজিবর রহমানের ছেলে। রূপনগর দুয়ারীপাড়া এলাকার ১০ নম্বর রোডের ১৫ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকতেন এবং শাড়ীতে জড়ি লাগানোর কাজ করতেন। গতকাল সন্ধ্যার দিকে পুলিশ জানায়, ঘটনার পর মৃতের পরিবারকে খরব দেয়া হয়েছে। তারা ঢাকায় রওয়ানা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ