রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনের রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় সরগরম হয়ে ওঠছে কুমিল্লা-২ (হোমনা-তিতাস)-এর রাজনৈতিক মাঠ। নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় ভোটের উত্তাপ বাড়ছে। আ.লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও ইসলামি ঐক্যজোটসহ ছোট দলগুলোর সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচারণায় বিরামহীন সময় কাটাচ্ছেন। একটি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনটি। এ আসনে টানা পাঁচবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মরহুম এম কে আনোয়ার। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে আ.লীগ প্রার্থী মোজাফফর আলী এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর দলটি আর আলোর মুখ দেখেনি। মরহুম এম কে আনোয়ার ১৯৯১ সালে প্রথম নির্বাচিত হয়ে অবহেলিত মেঘনা-কাঁঠালিয়া ও তিতাস নদীবেষ্টিত দ্বীপাঞ্চলকে একটি উপ-শহরে পরিণত করেন। হোমনা পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করেন। নবম জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী এমকে আনোয়ারের সাথে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে আ.লীগ প্রার্থী অধ্যক্ষ আবদুল মজিদ ১৭ হাজার ৪৩৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা ভোটে এমপি হন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ মো. আমির হোসেন ভূঁইয়া। এম কে আনোয়ারের মৃত্যুর পর বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে ভাটা পড়ে এবং নেতৃত্ব কে দেবে এই প্রশ্নে নেতাকর্মীদের মাঝে নীরব বিভক্তি দেখা দেয়। তা এখনো চলমান। তাই বিএনপির দলীয় বিভেদ ও শাসক দলের চাপের মধ্যেও নীরবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে নেতাকর্মীরা জানান। এখানে বিএনপির একাধিক প্রার্থী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও কেন্দ্রীয় শ্রমিকদল যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে এম ফজলুল হক মোল্লার নাম শোনা যাচ্ছে।
অপরদিকে নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে আছেন বর্তমান এমপি আলহাজ মো. আমির হোসেন ভূঁইয়া (জাতীয় পার্টি), হোমনা আ.লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল মজিদ, বিশিষ্ট শিল্পপতি সেলিমা আহমদ মেরি (সিআইপি), তিতাস উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান এবং জেলা আ.লীগ নেতা মো. পারভেজ হোসেন সরকার ও কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার হোসেন বাবু। তবে পারভেজ হোসেন গত দুই বছর ধরে এলাকায় না থাকলেও তার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরনবি ও জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আহমদ ফকির। সারোয়ার হোসেন বাবুর পক্ষে স্থানীয় যুবলীগ একাট্টা হয়ে প্রচারণার কাজ করছেন। বর্তমান এমপির পক্ষে স্থানীয় জাতীয় পার্টির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা আসনটি ধরে রাখতে কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছেন। তিনি এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। হোমনা ও তিতাসে তিনটি কলেজ জাতীয়করণ করেছেন। এমপি আমির হোসেনের চেষ্টায় এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন গোমতী ব্রিজ হওয়ায় কয়েকটি উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা শতভাগ আশাবাদি মহজোট থেকে তাদের নেতা আমির হোসেন মনোনয়ন পাবেন। তা না হলে তিনি জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী হবেন এবং আসনটি ধরে রাখবেন ইনশাল্লাহ। এদিকে হোমনা ও তিতাস উপজেলা আ.লীগসহ অঙ্গ দলগুলোর নেতাকর্মীরা চারজন প্রার্থীকে নিয়ে চারভাগে বিভক্ত হলেও একটি বড় অংশ অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদকে নিয়ে মাঠে নেমেছেন। এখানে বিএনপির প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করার জন্য আবদুল মজিদের বিকল্প নেই। বিএনপি এখানে যাকেই প্রার্থী করে তার সাথেই মহাজোট অথবা আ.লীগ প্রার্থীর তুমুল লড়াই হবে।
এদিকে হোমনা বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি তাদের এলাকার দলের কাউকে মনোনয়ন দিলে আসনটি উদ্ধার সম্ভব। মরহুম এম কে আনোয়ারের অনুসারীরা ও হোমনা বিএনপির নেতাকর্মীরা অন্য এলাকার প্রার্থীকে ভোট দেবে না বলে অনেক নেতাই স্পষ্ট বলেছেন। এ বিষয়ে তারা একমত। তাই কেন্দ্রীয় শ্রমিক দল নেতা একেএম ফজলুল হক মোল্লা আসনটি উদ্ধার করার লক্ষ্যে কোমর বেঁধে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন। তিনি গ্রামে গ্রামে ভোটারদের সাথে মতবিনিময় করছেন। ফজলুল হক মোল্লা এলাকায় জনপ্রিয় ও ক্লিনইমেজের প্রার্থী হিসেবে পরিচিত।
অপরদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এক ঘনিষ্ঠ সূত্রমতে তিনি কুমিল্লা-১ আসনের পাশাপাশি কুমিল্লা-২ আসন থেকেও নির্বাচন করবেন যদি দল মনে করেন।
মোট কথা নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা ততই বাড়ছে। বাড়ছে মাঠ দখলের ও ভোটারদের আকৃষ্ট করার কৌশল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।