নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ মহিলা ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে শক্তিশালী ভিয়েতনামকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ কিশোরী দল। গতকাল বিকালে কমলাপুরস্থ বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ‘এফ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ ২-০ গোলে হারায় ভিয়েতনামকে। বিজয়ী দলের হয়ে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার তহুরা খাতুন ও ডিফেন্ডার আঁখি খাতুন একটি করে গোল করেন। এই জয়ে বাছাই পর্বে গ্রুপ সেরা হয়েই দ্বিতীয় পর্বে জায়গা পেল বাংলাদেশ। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় পর্বের খেলা।
এবারের এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্বে অংশ নেয়া ছয় গ্রুপের শীর্ষ ছয় দল ও সেরা দুই রানার্সআপকে নিয়ে হবে আরেক বাছাই। সেখানে আটটি দল দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। দুই গ্রুপ থেকে সেরা চারটি দল সুযোগ পাবে চূড়ান্ত পর্বে খেলার। যা আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে। আগেই চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করে রেখেছে আয়োজক থাইল্যান্ড, গত আসরের চ্যাম্পিয়ন উত্তর কোরিয়া, রানার্সআপ দক্ষিণ কোরিয়া ও তৃতীয়স্থান পাওয়া জাপান।
এবারের বাছাইপর্বে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যকার ম্যাচটি ছিল অলিখিত ফাইনাল। পয়েন্ট ও গোল ব্যবধান সমান থাকায় দু’দলের সামনেই ছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় পর্বে ওঠার হাতছানি। লক্ষ্যপূরণ হয়েছে লাল-সবুজদের। তারা বাছাইপর্বে জয়ের ধারা অব্যহত রেখেই অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে পৌঁছে গেল পরের রাউন্ডে। আগের আসরের বাছাই পর্বেও সেরা হয়েছিলো বাংলাদেশ। সাফল্যের ধারা ধরে রেখে মেয়েরা জানান দিলো তাদের নিয়ে ভাববার সময় হয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। যেখানে পুরুষ ফুটবল দল একের পর এক টুর্নামেন্টে ব্যর্থ হয়ে জাতিকে লজ্জা দিচ্ছে, সেখানে লাল-সবুজের মেয়েরা টানা সাফল্য তুলে এনে দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নিচ্ছে। অথচ তারা পুরুষদের চেয়ে সুযোগ-সুবিধায় সবদিক দিয়েই বঞ্চিত।
কাল ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রণাত্মক ফুটবল উপহার দেয় বাংলাদেশের কিশোরীরা। ভিয়েতনামের মেয়েরা রক্ষণাত্মক খেলতে থাকলে ম্যাচের কর্তৃত্বও থাকে মারিয়া মান্ডা-আঁখি খাতুনদের হাতে। তবে মাঝে মাঝে পাল্টা আক্রমণ করে খেলেছে ভিয়েতনাম। কিন্তু সময় নষ্টের প্রবণতা তাদের ছিল শুরু থেকেই। একের পর এক আক্রমনে ভিয়েতনামের রক্ষণদূর্গকে তছনছ করে দিলেও গোলের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষায় থাকতে হয় ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে তহুরার গোলে স্বস্তি আসে বাংলাদেশ শিবিরে। এসময় আনাই মোগনির ক্রসে ভিয়েতনামের গোলরক্ষক দাও থি ফ্লাইট মিস করলে জটলায় উঁচু করে শট নেন শামসুন্নাহার। গোললাইনের কাছ থেকে তহুরা হেডে গোল করেন (১-০)। ম্যাচে রেফারির কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হন গ্যালারির দর্শকরা। ৫৯ মিনিটে তহুরা বল জালে পাঠিয়ে গোল উদযাপন শুরু করলেও তার আগেই সহকারী রেফারি অফসাইডের পতাকা উঁচিয়েছিলেন। এর আগে একবার শামসুন্নাহারের প্লেসিং জালে জড়ালেও রেফারি ও সহকারী রেফারি মিলে গোল বাতিল করে সবাইকে অবাক করেন।
৬৩ মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় বাংলাদেশ। এসময় বামপ্রান্ত থেকে অধিনায়ক মারিয়া মান্ডার কর্নারে শামসুন্নাহার হেড নিলে বল ফিরে আসে ক্রসবারে লেগে। পরে আখি খাতুনের প্রথম শট গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিয়েও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। ফিরতি বলে আঁখির বাঁ পায়ের টোকা জালে জড়ালে দ্বিতীয় গোলের উল্লাসে মেতে ওঠে গ্যালারি (২-০)। ৮৫ মিনিটে তহুরার আরেকটি গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হওয়ায় ২-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে গ্রুপে সেরা হয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ কিশোরী দল। টুর্নামেন্টের বাছাইপর্বে এবারও দুর্দান্ত ছিল লাল-সবুজের মেয়েরা। তারা চার ম্যাচ খেলে ২৭টি গোল করলেও একটিও হজম করেনি। পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ কিশোরী দলের নজরকাড়া পারফরমেন্সে দেশের নারী ফুটবলের জাগরন ঘটেছে বলেই মনে করেন ফুটবলবোদ্ধারা।
বাংলাদেশ ২ : ০ ভিয়েতনাম
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।