Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র

চীনে মুসলিমদের ধরপাকড়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:৪৪ এএম

চীনের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা জিনজিয়াং-এ সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর চালানো ধরপাকড় অভিযান ও তাদের আটকে রাখা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হিথার নোয়ার্ট এ উদ্বেগ জানান। কংগ্রেস সূত্রকে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে জ্যেষ্ঠ চীনা কর্মকর্তা ও কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও ভাবছে ট্রাম্প।
চীন দাবি করে আসছে ইসলামিক সশস্ত্র যোদ্ধা ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হুমকির মুখে আছে জিনজিয়াং প্রদেশ। এসব যোদ্ধা ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা হামলার পরিকল্পনা করছে বলেও দাবি করে তারা। এছাড়া সংখ্যাগরিষ্ঠ স্থানীয় চীনা আদিবাসী হানদের সঙ্গে উইঘুরদের সংঘর্ষের আশঙ্কাও প্রকাশ করে চীন। সাম্প্রতিক অস্থিরতায় সেখানে শত শত মানুষ নিহত হয়েছে। তবে সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি মানবাধিকার গ্রুপ দাবি করে, চীনে ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে কাউন্টার-এক্সট্রিমিজম সেন্টারগুলোতে আটকে রাখার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পেয়েছে তারা। জেনেভায় চীনের ওপর জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক কমিটির দুই দিনের বিশেষ সভায় এই অভিযোগ তোলে সংস্থাটির জাতিগত বৈষম্য বিষয়ক কমিটি। কমিটির সদস্য গে ম্যাকডুগাল বলেন, এতো বিপুলসংখ্যক উইঘুর আটকের ঘটনা উদ্বেগজনক।
মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হিথার নোয়ার্ট বলেন, ‘চীনের ওই অঞ্চলে শুধু উইঘুর নয়, কাজাখসহ অন্য মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে চালানো ভয়াবহ ধরপাকড় অভিযানের কারণে আমরা উদ্বেগে আছি। নির্ভরযোগ্য খবর থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে হাজারহাজার মানুষকে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত যা বলতে পারি তাতে এ সংখ্যাটা বেশ উল্লেখযোগ্যসংখ্যক।’
আগস্টের শেষের দিকে সাত চীনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ও অর্থমন্ত্রী স্টিভেন এমনুচিনকে অনুরোধ জানিয়েছিল মার্কিন আইনপ্রণেতাদের একটি দল। এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়ে আছে।
কংগ্রেস সূত্রকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স আরও জানায়, জিনজিয়াং-এ বন্দিশালা নির্মাণ এবং উইঘুরদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত নজরদারি ব্যবস্থা মোতায়েনে জড়িত চীনা কোম্পানিগুলো বিরুদ্ধেও অবরোধ আরোপের কথা ভাবছে মার্কিন সরকার। তবে মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে চীনের বিরুদ্ধে মার্কিন ব্যবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানান নোয়ার্ট।
বর্তমানে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে লিপ্ত আছে যুক্তরাষ্ট্র। একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপ করে যাচ্ছে দুই দেশ। আবার পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে অচলাবস্থা নিরসনে চীনের সহায়তা চায় যুক্তরাষ্ট্র।
চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ উইঘুর মুসলিম। এই প্রদেশটি তিব্বতের মত স্বশাসিত একটি অঞ্চল। বিদেশি মিডিয়ার ওপর সেখানে প্রবেশের ব্যাপারে কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিটির কাছে উইঘুরদের আটকের অভিযোগের ব্যাপারে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে,উইঘুর মুসলিমদের গণহারে ধরে বিভিন্ন বন্দিশিবিরে নেওয়া হচ্ছে। এরপর সেসব শিবিরে তাদের জোর করে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর প্রতি আনুগত্য প্রকাশে বাধ্য করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ