পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের এতো বছর পরও এদেশে এমন কিছু লোক দেখা যায় যারা তমদ্দুন মজলিসের কোন লোককে দেখলেই তাদের দিকে অঙুলি নির্দেশ করে বলে ওঠেন, এই এরাই পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার মাত্র কয়েকদিনের পর তমদ্দুন মজলিস নামের একটা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে পাকিস্তান ভাঙ্গার লক্ষ্যে ভাষা আন্দোলন শুরু করে দেন। ইতিহাস ও রাজনীতি সম্পদের এদের জ্ঞানের বহর দেখে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যায়।
এদের জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছা হয় পৃথিবীর ইতিহাসে এমন কোন নজীর তারা দেখাতে পারবেন কিনা যেখানে দেড় হাজার মাইলের অধিক একটি বৈরী জনপদ দ্বারা ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন দৃষ্টি ভূখন্ড নিয়ে একটি রাষ্ট্র গঠিত হয়েছে? পারবেন না। নিখিল ভারত মুসলিম লীগের ১৯৪০ সালের ঐতিহাসিক লাহোর অধিবেশনে অবিভক্ত ভারতবর্ষের পশ্চিম ও পূর্ব দিকের মুসলিম অধুষিত অঞ্চলসমূহ নিয়ে একাধিক স্বতন্ত্র সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবী গৃহীত হয় তার কোথাও ‘পাকিস্তান’ শব্দের উল্লেখ ছিল না। কিন্তু পরের দিন সকল হিন্দু সংবাদপত্রে খবরটি প্রকাশিত হয় ‘পাকিস্তান প্রস্তাব গৃহীত’ বলে।
কালক্রমে মুসলিম লীগও তাদের শুরু করা এ আন্দোলনকে পাকিস্তান আন্দোলন বলে অভিহিত করতে থাকে এবং তাদের উদ্দীষ্ট এ রাষ্ট্রের নাম ‘পাকিস্তান’ হবে বলে মেনে নিতেও রাজী হয়। বৃটিশ-শাসিত ভারতবর্ষের বৃটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে দুটি সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর একটি ছিল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, এটি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বৃটিশদের সহযোগিতা ছিল লক্ষ্যযোগ্য। আসলে ভারতবর্ষে বৃটিশ রাজত্ব প্রতিষ্ঠার আগে এই উপমহাদেশে কয়েক শত বছর ধরে মুসলমানদের রাজত্ব ছিল। মুসলমানদের কাছ থেকে ছলে বলে কৌশলে ইংরেজদের রাজত্ব ছিনিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়ায় রায়দুর্লভ, রাজবল্লভ, জগৎ শেঠ, উর্মিচাঁদ প্রমুখ হিন্দু নেতাদের সহযোগিতা ছিল বিধায় বৃটিশ রাজত্বের প্রথম দিকে তাদের মুসলিম বিদ্বেষ এবং হিন্দুদের প্রতি মিত্রতা ছিল লক্ষ্যণীয়।
ভারতের বৃটিশ রাজত্ব প্রতিষ্ঠা হয় ১৭৫৭ সালে। এতে প্রধানত নবাব সিরাজউদ্দৌলার দরবারের পূর্বে উল্লেখিত হিন্দু আমলাদের প্রধান ভূমিকা থাকলেও নবাবীর লোভ দেখি শেষ মুহূর্তে মীর জাফরকে এদলে ভিড়ানো হয়। তবে মীর জাফর যখন নবাবী লাভ করেন, তিনি টের পেয়ে যান তিনি নামকেওয়াস্তে নবাব হলেও আসলে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা চলে গেছে বৃটিশদের এবং তাদের অনুগত হিন্দু আমলাদের হাতে। এ অবস্থায় নবাবী ফলাতে গিয়ে তাকে চরম অপদস্ত হতে হয়।
ইংরেজ রাজত্বে মুসলমাদের অবস্থার দ্রুত পতন ঘটতে থাকে। ১৭৫৭ সালের পলাশী প্রহসনের অল্প কয়েক বছর পর ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত নামে যে নতুন ভূমি ব্যবস্থা প্রচলিত হয় তাতে যে নব্য জমিদারগোষ্ঠী গড়ে ওঠে, তার সিংহভাগই ছিল ইংরেজ অনুগত হিন্দু। মুসলমানরাও সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার থেকে আসা ইংরেজদের শাসন কিছুতেই সহজভাবে মেনে নিতে পারছিলেন না। তারা বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে বৃটিশ-বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এই আন্দোলন ক্রমে শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহ নামে ভারতবর্ষে ইংরেজ রাজত্বের ভিত্তিমূল কাঁপিয়ে দেয়। তবে প্রতিবেশী সম্প্রদায়ের অসহযোগিতার কারণে চুড়ান্ত পর্যায়ে এই আন্দোলন পরাজিত হয়।
সিপাহী বিপ্লবের ব্যর্থতা হিন্দু বুদ্ধিজীবীরা উল্লাসে ফেটে পড়ে। সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র ‘সংবাদ ভাষকর’ এ লিখলেন- হে পাঠক সকলে উদ্বাহ হয়ে পরম ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিয়া জয়ধ্বনি করিতে করিতে নৃত্য কর। হিন্দু প্রজাগণ দেবালয়ে পূজা দেও। আমাদের রাজ্যেশ্বর শত্রু জয়ী হইলেন।
আর কবি ঈশ্চরচন্দ্র কবিতা লিখলেন :
চিরকাল হয় যেন বৃটিশের জয়
বৃটিশের রাজশক্তি যেন চিরকাল রয়
এমন সুখের রাজ্য আর নাহি হয়।
শাস্ত্রমতে এই রাজ্য রাম রাজ্য কয়
সিপাহী বিপ্লবের ব্যর্থতায় দেশের রাজনীতির গতিধারা আমূল পাল্টে দেয়। প্রথম দিকে কিছু হিন্দু নেতা সিপাহী বিপ্লবে যোগ দিলেও প্রধানত মুসলমানদেরকেই এই বিপ্লবের জন্য দায়ী করা হয়। তাই নতুন করে মুসলমানদের উপর ইংরেজ শাসকদের স্টিমরোলার নেমে আসে। পলাশীর যুদ্ধের পর জাগিরদারী, জমিদারী হিন্দুরা ইংরেজদের সহযোগিতায় দখল করে নিচ্ছিলো। ফলে মাত্র একশ বছরের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ জাতি সম্পূর্ণ অসহায় জনগোষ্ঠিতে পরিণত হয়। ইংরেজপ্রবর্তিত শিক্ষাব্যবস্থাসহ সকল ক্ষেত্রে অসহযোগিতার কারণে শিক্ষা-দীক্ষা, প্রশাসন, ব্যবসা বাণিজ্যি সকল ক্ষেত্রে মুসলমানরা হিন্দুদের তুলনায় অনেক পিছিয়ে পড়েন।
এই পটভূমিতে মুসলমানদের সম্পূর্ণ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য সাময়িকভাবে হলেও ইংরেজদের সাথে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে গেলেন উত্তর ভারতের স্যার সৈয়দ আহমেদ খান এবং বাংলার নবাব আবদুল লতিফ।
নবাব আবদুল লতিফের জন্ম ফরিদপুর জেলার রাজাপুর গ্রামে। তাঁর আগে আরেক মহা পুরুষ পরাধীন দেশের মুসলমানদের শিক্ষার জন্য অনেক চিন্তাভাবনা করেন। তিনি হাজী মহসিন, যার জন্ম ১৭৩২ সালে আর মৃত্যু ১৮১২ সালে। তার চোখের সামনে একটি স্বাধীন জাতি পরাধীন হয়ে পড়ে। ইংরেজ শাসনে মুসলমানদের শিক্ষার কি দুর্গতি হতে পারে তা দিব্য চোখে দেখতে পান তিনি। ফলে তাঁর বিশাল সম্পত্তি পরাধীন মুসলমানের শিক্ষার জন্য ওয়াকফ করে দিয়ে যান।
দু:খের বিষয় ইংরেজরা মহসিনের মৃত্যুর পর ঐ সম্পত্তি দখল করে নিয়ে মুসলমানদের শিক্ষার পথ বন্ধ করে দেয়। নবাব আবদুল লতিফ অনেক দেন দরবার করে মহসিন ফান্ড থেকে মুসলমানের শিক্ষার ব্যয় নির্বাহের পথ সুগম করে দেন।
ইংরেজরা লোক দেখানোর জন্য ১৭৮০ সালে কলকাতায় একটা মাদ্রাসা স্থাপন করলেও তাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ থাকত না। অথচ সরকারী উদ্যোগে স্থাপিত সংস্কৃত কলেজের জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ থাকতো। ১৮১৭ সালে সরকারী ব্যয়ে হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলেও সেখানে মুসলমানদের প্রবেশাধিকার ছিল না। নবাব আবদুল লতিফ অনেক চেষ্টা করে সরকারী হিন্দু কলেজকে প্রেসিডেন্সী কলেজে রূপান্তরিত করে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মুসলমানদের সুযোগ সৃষ্টি করে দেন।
নবাব আবদুল লতিফ শুধু শিক্ষা, ধর্ম, বিজ্ঞান প্রভৃতি ক্ষেত্রেই তাঁর কাজ সীমাবদ্ধ রাখেননি। গরীব চাষীদের উপর যে নির্যাতিন চালানো হচ্ছিল তা বন্ধের জন্যও তাঁর আন্তরিক চেষ্টা ছিল। সেসময় গরীব কৃষকদের নীল চাষে বাধ্য করা হত। সে সময় রাজা রাম মোহন রায়, প্রিন্স দ্বারিকা নাথ ঠাকুর প্রমুখের সাথে সুসম্পর্ক ছিল ইংরেজ শাসকদের। অনেকের বিশ্বাস ছিলো তারা কৃষকদের এই বিপদ থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করবেন। কিন্তু তারা সে চেষ্টা চালাননি। তারা নীল চাষীদের চেয়ে ইংরেজদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতেই অধিক গুরুত্ব দেন। সে সময় নবাব আবদুল লতিফ ছিলেন ইংরেজ সরকারের অধীনে একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হয়েও নীল চাষীদের দু:খ কষ্ট সম্পর্কে ইংরেজ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ভুলেননি তিনি। তিনি এমন কি নীল ও কমিশনের সামনে নীল কুঠিয়ালদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে কুণ্ঠিত হননি। সংশ্লিষ্ট শ্বেতাঙ্গ নীলকরেরা তাঁর এই দূর:সাহসে অবাক হয়ে তাকে এর এই প্রতিফল ভুগতে হবে বলে হুমকি দিলেও আবদুল লতিফ বিবেকের তাড়নায় তার কর্তব্য থেকে নিবৃত্ত হননি।
এই সহযোগিতা যুগের আরেক মহা পুরুষ ছিলেন সৈয়দ আমির আলী ১৮৪১ সালে ৮ এপ্রিল এই প্রতিভাধর মমতার জন্ম। তিনি এমন যুগে জন্মগ্রহণ করেন যখন এদেশে ইংরেজ শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত। সেই সুবাদে অনেকেই ইসলামের ব্যর্থতা ও খৃষ্ট ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রচারে লেখালেখি করেন। এই পটভূমিতে তিনি ‘দি স্পিরিট অব ইসলাম’ ও হিসটরি অব দ্যা স্যারাসিন্স প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করে ইসলামের শ্রেষ্ঠত প্রচারে এগিয়ে আসেন।
এই সহযোগিতার যুগের আরেক মহাপুরুষের জন্ম ১৮৬১ সালে এবং মৃত্যু ১৯০৭ সালে। বাঁচেন মাত্র ৪৬ বছর। তিনি ছিলেন যশোর জেলার এক গ্রাম্য দর্জী। কিন্তু তিনি মুসলিম জাতির সেই ঘোর দুর্দিনে এমন দু:সাহসী ভূমিকা পালন করেন যার কারণে আজও বাংলার মুসলিম সমাজ তাকে মুসলমাদের নবজাগরণের নায়ক বলে মনে করেন। মুসলমানদের মধ্যে সরকারের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব লক্ষ্য করে এক শ্রেণীর ইংরেজ সরকারের প্রশ্রয়প্রাপ্ত পাদ্রী ইসলাম ও কোরআন সম্পর্কে আপত্তিকর বই লিখে ও সমাবেশ করে ইসলাম বিরোধী অপ-প্রচারের চেষ্টা শুরু করে দেন। তখন দেশে আলেম-ওলামা আরোও অনেক ছিলেন। কিন্তু কেউ এদের প্রতিরোধে এগিয়ে এলেন না। এগিয়ে এলেন মুন্সী মেহেরউল্লা নামের গ্রাম্য দর্জী। খৃস্টানদের লেখা ‘বই আসল কোরআন কোথায়?’ এর জবাবে তিনি লিখলেন ‘আসল কোরআন সর্বত্র’।
খ্রিস্টানরা ইসলাম বিরোধী জনসমাবেশ করলে সেখানে গিয়ে তাদের চ্যালেঞ্জ জানালেন এই সংগ্রামী মনিষী। ট্রেনিংপ্রাপ্ত পাদ্রীরা ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বাহাছের কথা শুনে মহাখুশী। তারা বাহাছের প্রস্তাবে স্বাগত জানান এ কারণে যে, গ্রাম্য প্রায় অশিক্ষিত দর্জী, তাকে সহজেই পরাজিত করবেন এ বিশ্বাস ছিল তাদের।
কিন্তু বাস্তবে ফল হলো উল্টা। সামান্য এক গ্রাম্য দর্জীর কাছেই বাঘা বাঘা ট্রেনিংপ্রাপ্ত প্রার্থীরা পরাজিত হলেন। ফলে দ্বিতীয়বার পুনরায় আরো প্রস্তুতি নিয়ে এলেও একই ফল হলো। এভাবে একের পর এক কয়েক বার পরাস্ত হবার পর পাদ্রীরা আর প্রকাশ্যে বাহাছের সাহসই পেলেন না।
পলাশী বিপর্যয়ের মধ্যদিয়ে বৃটিশ রাজত্বদের সুচনা হলেও তাদের রাজত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত হতে প্রায় সময় লেগেছিল একশ বছর। বৃটিশ রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার এই একশ বছরের মধ্যে প্রথমে হিন্দু পরে মুসলমানরাও যে ইংরেজ শাসকদের সাথে সহযোগিতার পথ অবলম্বন করা শুরু করে তা আগেই বলা হয়েছে। এই সহযোগিতা যুগের একটা বড় ঘটনা ছিল বঙ্গভঙ্গ। ১৯০৫ সালে প্রধানত প্রশাসনিক সমস্যার কারণে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সী বিভক্ত করে কলিকাতায় রাজধানী হিসাবে রেখে পশ্চিম বঙ্গ, বিহার ও উড়িষ্যাকে নিয়ে একটি প্রদেশ এবং ঢাকায় রাজধানীসহ ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম’ নামের আরেকটি প্রদেশ সৃষ্টি করা হয়। বৃটিশ শাসনে সবচাইতে অবহেলিত জনপদ ছিল পূর্ববঙ্গ। নতুন ব্যবস্থায় এই চির অবহেলিত জনপদের উন্নতির কিঞ্চিত সুযোগ হওয়ার এতে কলকাতা-প্রবাসী হিন্দু জমিদাররা পূর্ববঙ্গে অবস্থিত তাদের জমিদারীতে তাদের প্রভাব হ্রাসের আশঙ্কায় বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে অধিক উৎসাহী হয়ে ওঠেন। যে হিন্দু নেতৃবৃন্দ পলাশী থেকে এ পর্যন্ত সব সময় ইংরেজ শাসকদের সহযোগিতা দান করেছেন, তাদের এই আকর্ষিক অগ্নিমূর্তি ইংরেজদের ভীত করে তোলে। ফলে মাত্র ছয় বছরের মাথায় শাসকরা তাদের মিত্রদের ক্ষোভের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়। ১৯১১ সালে ১২ ডিসেম্বর দিল্লী দরবারে বঙ্গভঙ্গ রদের ঘোষণা দেয়ায় পূর্ববঙ্গ ও আসাম” নামের নতুন প্রদেশটির অবসান ঘটে। বঙ্গভঙ্গ রদ এবং পূর্ব ও আসাম নামক প্রদেশটির অবলুপ্তি হওয়ার নবাব সলিমুল্লাহ মনে খুব ব্যথা পান। তার এই ব্যথা দূর করার লক্ষ্য তার অন্যতম দাবী ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয় সরকার।
এতেও ঘোর আপত্তি কলকাতা-প্রবাসী হিন্দু বুদ্ধিজীবীদের। বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তাদের যুক্তি ছিল এতে বঙ্গ-মাতার অঙ্গছেদ হবে। এবার তাদের যুক্তি দেখা গেল এতে নাকি বঙ্গ সংস্কৃতির বিভক্তি দেখা যাবে। কিন্তু তাদের আরেক কথায় তাদের মনের আসল মতলব বেরিয়ে তাই এলো সেটা হলো: পূর্ববঙ্গের অধিকাংশ অধিবাসী মুসলমান চাষী, তাদের উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ পূর্ববঙ্গের লোকজন অশিক্ষিত আছে তাই থাকুক, শিক্ষা বা উচ্চ শিক্ষা কোনটারই তাদের প্রয়োজন নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।