পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ লক্ষ্যে প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এমনটাই জানিয়েছেন। সংবিধান অনুযায়ী দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসে। সেই হিসাবে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে শুরু হবে নির্বাচনের কাউন্ট ডাউন। নির্বাচন কমিশন সচিবের মতে, এরপর যে কোনো সময় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। এর মাধ্যমে শুরু হয়ে যাবে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা।
নির্বাচনের অংশীপক্ষগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান শীর্ষে। তাদের প্রস্তুতি ও অবস্থান কোন্ পর্যায়ে আছে, সেটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বোচ্চ প্রণিধানযোগ্য বিষয়। এক্ষেত্রে, স্বীকার করতেই হবে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সবচেয়ে এগিয়ে আছে। অন্তত বছর খানেক আগে থেকে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের প্রচারণা জোরেসোরে চালিয়ে যাচ্ছে। দলটির প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে অন্যান্য উদ্যোগ, নির্বাচনী, ইশতেহার প্রণয়নসহ কৌশল নির্ধারণ ইত্যাদি অনেকটাই চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। সরকারের অংশীদার এবং একই সঙ্গে সংসদে বিরোধীদল জাতীয় পার্টিও নির্বাচনের প্রচরণা, প্রার্থী মনোনয়ন ইত্যাদিতে অনেকদিন ধরে তৎপর রয়েছে। পক্ষান্তরে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি ও তার নেতৃত্বাধীন জোটের শরীক দলগুলো নির্বাচনী প্রস্তুতির দিক দিয়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির তুলনায় লক্ষ্যণীয়ভাবে পিছিয়ে আছে। বিশেষ করে বিএনপি দমন-পীড়ন, বাধা-বিপত্তি ও হামলা-মামলায় এতটাই বিপাকে রয়েছে যে, তার পক্ষে নির্বাচনের প্রতি মনোননিবেশ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তারপরও অন্যতম বৃহত্তম দল হিসাবে তারও নির্বাচনের প্রস্তুতি আছে দাবি করেছেন দলের নেতৃবৃন্দ।
ঈদের পর সব রাজনৈতিক দলের মধ্যেই একটা গা-ঝাড়া দেয়া ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পর্যবেক্ষকরা আগেই ধারণা দিয়েছিলেন, ঈদের পর রাজনৈতিক আবহাওয়ায় পরিবর্তন ঘটবে। রাজনীতি হয়ে উঠবে নির্বাচনমুখী। কয়েকদিনের আলামত ও ঘটনাপ্রবাহদৃষ্টে তাদের ধারণার সত্যতাই প্রতীয়মান হচ্ছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার প্রায়াস অনেকদিন ধরেই আছে। কিছু উদ্যোগও লক্ষ্য করা গেছে। তবে তা চূড়ান্ত রূপ পায়নি। সম্প্রতি গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন এবং যুক্তফ্রণ্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারার সভাপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মধ্যে ঠিক ঐক্য নয়, একসঙ্গে কাজ করার একটা সমঝোতা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, নতুন করে ঐক্য গড়ার কিছু নেই। আমরা একসঙ্গে অনেকদিন ধরেই পথ চলছি। আমাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়। আমরা একসঙ্গে আছি, একসঙ্গে থাকবো। একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে জনগণের ঐক্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করবো।
ড. কামাল হোসেন ও ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্কিত আছেন কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব প্রমুখ। তাদের সবারই জনগণের মধ্যে বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা আছে। তাদের একসঙ্গে পথচলা কিংবা জনগণের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত রাজনীতিতে অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বড় ঘটনা। তবে তাদের এই একসঙ্গে চলা কি জনগণের ঐক্যগড়ে তোলার জন্য, নাকি নির্বাচনকে উপলক্ষ করে, সেটা যথেষ্ট স্পষ্ট নয়। তারা আলাদা আলাদা অবস্থানে থেকে লক্ষ্যে পৌঁছাতে চান কেন? একজোট হয়ে নয় কেন? পর্যবেক্ষকদের মতে, ড. কামাল হোসেন, ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্না, আসম আব্দুর রব রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে জনগণের কাছে স্বনামধন্য ও সম্মানীয় হলেও সাংগঠনিক দিক দিয়ে বিশেষত ভোটের রাজনীতিতে তাদের অবস্থান মোটেই শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত নয়। বর্তমান অবস্থার তাদের পক্ষ ভোট বা গণউৎক্ষেপের মাধ্যমে রাজনৈতিক পটের পরিবর্তন সাধন করা সম্ভবপর নয়। বিশেষ কোনো রাজনৈতিক লক্ষ্য বা দর্শনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ করা একটি দীর্ঘমেয়াদী কাজ। এটা করতে হলে তাদের চেষ্টা অব্যাহত রেখে অপেক্ষা করতে হবে। আর আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এবং ওই নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে যদি তারা রাজনৈতিক পরিবর্তন করতে চান তবে তাদের বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট, অন্যান্য দল ও জোটের সঙ্গে ঐক্য ও সমঝোতা গড়ে তুলতে হবে।
বিএনপির তরফে অনেকদিন ধরে বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। এর নেতারা বিভিন্ন সময় নানা মাধ্যমে ড. কামাল হোসেন, ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী প্রমুখের সঙ্গে মত বিনিময় করেছেন বলে জানা যায়। এ ধরনের একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে উঠলে রাজনৈতিক পরিবর্তন দ্রæতায়িত ও সহজ হতো বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করেন। অবশ্য এই বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলার সম্ভাবনা তিরোহিত হয়ে যায়নি। সম্ভবনা বিদ্যমান আছে এবং সামনের দিনগুলোতে তেমন কোনো ঐক্য গড়ে উঠলে আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না। খবর আছে, কিছু ইসলামী দল জোটবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যেই বাম আট দলের একটি জোট হয়েছে। এখনো জোটবদ্ধ হয়নি এমন দল ও সকল জোটকে যদি একটি প্লাটফর্মে এনে দাঁড় করানো যায়, তবে রাজনৈতিক পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠতে পারে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। বৃহত্তর ঐক্যই তাদের প্রকৃত সুরক্ষা দিতে পারে এবং তাতে জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকারও সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবদলের অংশগ্রহণভিত্তিক অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। এটাই জাতীয় প্রত্যাশা। আন্তর্জাতিক মহলও এমন নির্বাচনই কামনা করে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো বিনা ভোটের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন কারোই কাম্য হতে পারে না, একমাত্র যারা ওই ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হয়েছেন তারা ছাড়া। ওইরকম একটি নির্বাচন করার সক্ষমতার অভাবেই হোক কিংবা দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহলের চাপের মুখেই হোক, ক্ষমতাসীনরাও বলছেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য হোক, সেটা তারাও চান। এই চাওয়াটা যে আন্তরিক, তা মনে করার কোনো কারণ নেই। আসলে তারা ওইরকম একটি নির্বাচনই চাইছেন যাতে পুনরায় ক্ষমতাসীন হতে পারেন। অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে তাদের অবস্থা ও পরিণতি কি হবে, তা তারা ছাড়া ভালো কেউ জানেন না। তাই মুখে যাই বলুন, আসলে তারা তাদের আঁকা নকশা অনুযায়ীই পথ হাঁটছেন। যদি তারা অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই চাইতেন, তবে নির্বাচনের কাঙ্খিত পরিবেশ প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করতেন। রাজনৈতিক দলগুলোর দাবিদাওয়া বিবেচনায় নিতেন। সমঝোতায় আসতেন। নির্বাচনে সকল দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার উদ্যোগ-পদক্ষেপ নিতেন। এসবের কোনোটাই তারা করছেন না।
অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে অনেকগুলো অন্তরায় রয়েছে। সে অন্তরায়গুলো দূর না করলে নির্বাচন আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এর সঙ্গে রাজনৈতিক পরিবেশ, সাংবিধানিক বিধান, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ইত্যাদি সম্পর্কিত রয়েছে। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতা জরুরি। এটা কার না জানা, দেশের প্রধান দুটি দলের একটি বিএনপি। বিএনপি যদি কোনো কারণে নির্বাচনে অংশ না নেয় তবে নির্বাচন যথার্থ অংশগ্রহণমূলক হবে না। ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। আরো বেশ কিছু দল নেয়নি। ফলে ওই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক বলে বিবেচিত হয়নি। এবারও বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে, তার জোটভুক্ত দলগুলো ছাড়াও অন্য অনেক দলও নির্বাচনে অংশ নেবে না। সেক্ষেত্রে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। অথচ বাস্তবতা এই যে, বিএনপির নির্বাচনে আসার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়তা করার বদলে ক্ষমতাসীনদের তরফে এমন সব কথাবার্তা বলা হচ্ছে, পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে যাতে বিএনপি নির্বাচনে আসতে নিরুৎসাহিত হয় কিংবা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়। বিএনপির মহাসচিব কদিন আগে তার দলের নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নে কতিপয় শর্তের কথা উল্লেখ করেছেন। দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা ওই শর্তগুলোর মধ্যে প্রধান। এছাড়া শর্তের মধ্যে আরো রয়েছে, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি, নির্বাচন কমিশন ভেঙে পুনগঠন, নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙ্গে দেয়া, সব দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন ইত্যাদি। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে দলের না-রাজির কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন। বিএনপির এসব শর্ত বা দাবি আসলে নতুন নয়। বিএনপির চেয়ারপাসনের মুক্তির দাবিকে প্রথম দাবি হিসাবে উপস্থাপন করার বিষয়টি সকলের কাছেই বোধগম্য। এছাড়া বাকী সব দাবি পুরানো এবং এগুলো সকল বিরোধী দলের কমন দাবি। নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে দিয়ে পুর্নগঠন করার দাবি অপেক্ষাকৃত নতুন হলেও এখন তা সাধারণ দাবিতে পর্যবসিত হয়েছে। পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন যে ভূমিকা প্রদর্শন করেছে তাতে তার প্রতি জনগণের আস্থা আর অবশিষ্ট আছে বলে মনে হয় না। প্রমাণ হয়েছে, এই নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবাহী, দুর্বল, অক্ষম ও অপারগ। তার পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সর্বশেষ আরপিও সংশোধনের উদ্যোগ এবং ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তাব গ্রহণ থেকেও বুঝা যায়, সরকারের ইচ্ছার বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা এই নির্বাচন কমিশনের নেই। অনেকেরই জানা, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো বড় দল ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে মত দেয়নি। এর ব্যবহার নিয়ে খোদ নির্বাচন কমিশনেই মতভেদ রয়েছে। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের নোট অব ডিসেন্ট দেয়ার ঘটনাই এর বড় প্রমাণ। বস্তুত, ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে প্রস্তাব গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন নিজেকে বিতর্কের চূড়ান্ত খাদে নিক্ষেপ করেছে।
নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙ্গে দেয়া, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করা, সব দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, সেনাবাহিনী মোতায়েন করা, নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করা ইত্যাদি, বিরোধী দলগুলোর এই সাধারণ দাবির যৌক্তিকতা অনস্বীকার্য। এগুলো মানা না হলে নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না, এই বিশ্বাস সকলের মধ্যেই দৃঢ় রূপ লাভ করেছে। অভিজ্ঞতাও এর সাক্ষ্য বহন করে। অথচ ক্ষমতাসীন দল ও মহল এই দাবিগুলো কিছুমাত্র পাত্তা দিতে রাজি নয়। তাদের বক্তব্য, সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে। এর অর্থ দাঁড়ায়, বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে এবং সংসদ বহাল থাকবে। অন্যদিকে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ প্রতিষ্ঠার কোনো তাকিদ ক্ষমতাসীন মহলে নেই। বর্তমান নির্বাচন কমিশনে তারা অতিশয় সন্তুষ্ট বলেই প্রতীয়মান হয়। তার প্রতি আস্থাও তাদের প্রবল। সেনাবাহিনী মোতায়েন কিংবা ইভিএম ব্যবহারের প্রশ্নে তাদের কথা, নির্বাচন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা মেনে নেবো। বলা বাহুল্য, নির্বাচন কমিশন ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তাব নিলেও সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রস্তাব কিন্তু নেয়নি। ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও মন্ত্রীরা প্রায়ই বলেন এবং এখনও বলছেন, নির্বাচন সময়মতো হবে, তাতে কেউ আসলে আসবে, না আসলে না। অর্থাৎ তারা আগের মতো একতরফা নির্বাচন হলেও করবেন।
এই যদি মনোভাব, তাহলে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আশা দুরাশা মাত্র। জাতীয় বৃহত্তর স্বার্থেই এই একতরফা নির্বাচনের খেলা চলতে পারেনা। এর বিপরীত একটি অংশগ্রহণমূলক অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে তাই বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার বিকল্প নেই। পরিবর্তনের জন্য বিরোধীদলগুলোর ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা ও তাৎপরতার এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।