Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে ৫০ হাজার পরিবার

সৈয়দ শামীম শিরাজী, সিরাজগঞ্জ থেকে : | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০১৮, ১২:৩৫ এএম

 বৃহত্তর সিরাজগঞ্জ-পাবনার উত্তরের বেড়াকোলা থেকে রংপুরের কাউনিয়া পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রিত প্রায় ৫০ হাজার পরিবার ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। উত্তাল যমুনা যেন তাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। কখন নদী ভাঙে, এই চিন্তায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রিত মানুষ নির্ঘূম রাত কাটাচ্ছে।
প্রতি বছর নদী ভাঙে। অপরিকল্পিতভাবে বালু দস্যুদের বালু উত্তোলন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর বসবাস, মাটি কেটে বাঁধ তৈরী, বাঁধে ইঁদুরের সরূ গর্ত চুইয়ে পানি বের পানি বের হওয়া, বাঁধে তাড়াহুড়া অল্প সময়ের মধ্যে অধিক সংখ্যক সিসি ব্যাগ তৈরী, তা কিউরিন না করা, সিডিউল মতো বাঁধের কাজ না করা, রিং বাঁধ, নদীর তীর সংরক্ষন বাঁধ ও স্পার তৈরীতে অনিয়ম কারচুপি সেচ্ছাচারিতা, লো হাইটের নিমাইওচড়া বালু দিয়ে বাঁধ তৈরী, ৫০ কোটি টাকার বাঁধ নির্মাণের পর তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের একশ্রেনীর কর্মকর্তাদের স্বার্থান্নেষী মনোভাব, উৎকোচ গ্রহণ, পাউবো ঠিকাদারদের অপ্রতিরোধ্য সিন্ডিকেট, বাঁধে বাড়ি নির্মান বন্ধে রাজনৈতিক চাপ, ড্রেজিং এ মূল নকশার পরিবর্তনের ধৃষ্টতা, বড় মাপের পাথরের স্থলে অপেক্ষাকৃত ছোট পাথর সরবরাহ, ভরা মৌসুমে নদীতে পানি বৃদ্ধি ও ফুলে ওঠা এবং পানিতে ঘ‚র্নাবর্তের সৃষ্টি হওয়া, পানি কমে যাওয়ার টানে নদী ভেঙে যাওয়া, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর অধিক ওজনের ভারী মালামাল রাখা ও বঙ্গবন্ধু সেতুর গাইড বাঁধের অংশে বালু উত্তোলন প্রভৃতি নানাবিধ কারণে যমুনা ভাঙন দেখা দিয়ে থাকে ।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের উত্তর প্রান্তের পাবনার বেড়াকোল থেকে শুরু করে রংপুরের কাউনিয়া পর্যন্ত দীর্ঘ ১৩৫ মাইল বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে প্রায় ৫০ হাজার পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
প্রতিবছর এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। খোলা আকাশের নীচে নানাবিধ ঝড়-ঝাপটা সহ্য করে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তারপরেও এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ আশ্রিত মানুষ প্রতিনিয়ত জীবন সংগ্রামে যুদ্ধ করে চলেছে। তাদের দু:খের সীমা নেই। নেই কোন সমাধান। সমস্যা যে তিমিরে ছিলো সেই তিমিরে রয়ে গেছে।
সিরাজগঞ্জ অঞ্চলসহ ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভাঙছে প্রায় ৬৭ বছর যাবৎ। নদী ভাঙনে সিরাজগঞ্জ-কাজীপুর উপজেলা ভেঙ্গে জামালপুরের সাথে মিলে গেছে আর চৌহালী উপজেলা মানচিত্র থেকে মুছে গিয়ে মিলেছে টাঙ্গাইল জেলার সাথে।
সিরাজগঞ্জসহ চৌহালীর এনায়েতপুরে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ এখন হুমকির মুখে। সদরের বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ের গাইড বাঁধের অবস্থা একই। পূর্ব পাড়ের টাঙ্গাইল অংশেও ভাঙনে বাঁধ।
বেড়া পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী ভাঙনরোধ প্রকল্পের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো: ওসমান গনি জানান, চরপেঁচাকোলায় ভাঙনরোধে এ পর্যন্ত প্রায় ৯ হাজার বালু ভর্তি জিও ব্যাগ নদীতে ডাম্পিং করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর বরাদ্দ চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে আবার ভাঙনরোধ কাজ শুরু করা হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পরিবার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ