Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০২৪, ২৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পদ্মা সেতুর ছোঁয়ায় ফের সচল হচ্ছে খুলনার অর্থনীতি

আসছে বিনিয়োগকারীরা

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

প্রতি মুহুর্তে এগিয়ে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর কাজ। আর সেই পদ্মা সেতুর ছোঁয়ায় এ অঞ্চলের ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনরুজ্জীবীত হচ্ছে। মংলা বন্দরে ক্রমেই গতিশীলতা আসছে। খুলনা-মংলা রেললাইনের কাজ চলছে দ্রুত। সোয়া কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে খুলনার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়ক নির্মান প্রকল্পের বাস্তবায়ন হচ্ছে। খুলনার দু’টি উপজেলা এখন ঘোষিত অর্থনৈতিক জোন। আর আধুনিক রেল ষ্টেশন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। খুলনা-সাতক্ষীরা-শ্যামনগর-সুন্দরবন সড়ক এবং খুলনা-নলিয়ন-সুন্দরবন সড়ক নির্মানের মাধ্যমে পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে বৃহত্তর খুলনাঞ্চল আবারও ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও বাণিজ্যের সম্ভাবনাময় জোন হিসেবে নয়া রূপে আত্মপ্রকাশ করছে। বিনিয়োগকারীরা আবারও ফিরে আসছে এ অঞ্চলে। এ জনপদ এখন পদ্মার এপারের এক সম্ভাবনাময় বাণিজ্যের নতুন চালিকা শক্তি। মরা গাছে ফুল ফোটার মতই ভঙ্গুর অর্থনীতি যেন প্রান ফিরে পাচ্ছে। পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়নে এ অঞ্চল ফুলে ফলে সুশোভিত হয়ে ওঠার প্রত্যাশা। এমন ভবিষ্যত বাণী করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। 

বৃহত্তর খুলনাঞ্চল বিগত বিভিন্ন সরকারের আমলে বিমাতাসুলভ আচারণের শিকার। পাট শিল্প ও শিল্প কারখানা অধ্যুষিত এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড বিভিন্ন সময়ে পরিকল্পিতভাবে ভেঙ্গে দেয়া হয়। গত এক যুগে একের পর এক শিল্প কল কারখানা বন্ধ হতে থাকে। শিল্প সেক্টরে শুরু হয় নৈরাজ্য। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে মৃত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার চেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও আমজনতার প্রাপ্তি যথেষ্ট নয়। তথাপি পদ্মাসেতু এখন সূর্যের মত বঞ্চিত এ জনপদকে আলোকবর্তিকা ছড়ানোর অপেক্ষায়।
নেপাল ও ভুটান মংলা বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে রেলযোগে পন্য আমদানী ও রফতানি করতে পারবে। সে লক্ষ্যে শিগগিরি ভারত বাংলাদেশের যৌথ বিনিয়োগে খুলনা-মংলা রেল লাইন নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। অন্যদিকে দ্রুত গতিতে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ। খুলনার বটিয়াঘাটা ও তেরখাদার দু’টি এলাকাকে অর্থনৈতিক জোন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। সে লক্ষ্যে কাজও চলছে দ্রুত। এ ছাড়া শেষ পর্যায়ে খুলনার আধুনিক রেলষ্টেশনের নির্মাণ কাজ। স¤প্রতি খুলনা সফরকালে শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতলকে দ্রুত পূর্ণতা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী। সাথে সাথে এগিয়ে চলছে ওয়াসার আড়াই হাজার কোটি টাকার কাজ। ফলে খুলনাঞ্চলের মানুষের ঘরে ঘরে পৌছে যাবে পানি। সব মিলিয়ে খুলনার ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনর্জীবীত হচ্ছে।
সূত্রমতে, খুলনার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পদ্মা সেতু হবে ভবিষ্যতের মাইল ফলক। ফলে ব্যবসায়ীদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে। নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখাচ্ছে। খুলনা মংলা রেল লাইন প্রকল্পের কাজ যাতে যথাসময়ে সমাপ্ত হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে প্রকল্পকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। রেলসেতু, রেললাইন এবং টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং এই তিন ভাগে বিভক্ত করে প্রায় ৭৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে খুলনা মহানগরীর যানজট অনেকাংশে কমে যাবে। পাশাপাশি যখন পদ্মা সেতুর সফল বাস্তবায়ন হবে তখন এই রেললাইনকে ঘিরে এ অঞ্চল হয়ে উঠবে গুরুত্বপূর্ণ ইকনোমিক জোন।
এদিকে, এক সময়কার শিল্প ও বন্দরনগরী বলে খ্যাত খুলনার জৌলুস ফিরিয়ে আনতে খুলনায় দু’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এ দু’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত করতে পারলে তা আঞ্চলিক ও জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা রাখবে। বেজা এ লক্ষ্যে খুলনার বটিয়াঘাটার তেতুলতলা এবং তেরখাদার কোলাকে বেছে নিয়েছে।
এ ছাড়া, বাগেরহাটে রামপাল উপজেলার ফয়লাহাটে নির্মাণাধীন খানজাহান আলী বিমান বন্দরের উন্নয়ন কাজ শেষ হলে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মংলার উন্নয়নের পাশাপাশি ঘুরে দাঁড়াবে দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের অর্থনীতির চাকা। মংলা বন্দরসহ সারা বছরই গোটা সুন্দরবনও থাকবে দেশি বিদেশী পর্যটকে মুখরিত । পর্যটন খাতে প্রতিবছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে জানান এ খাতে সংশ্লিষ্টরা ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মা

১১ জানুয়ারি, ২০২৩
৩১ অক্টোবর, ২০২২
৪ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ