যেভাবে মাছ ভাজলে ভেঙে যাবে না
বাঙালির প্রতিদিনের খাবারে মাছ তো থাকেই। এটি সব খাবারের মধ্যে পুষ্টির অন্যতম উৎস। তাড়াহুড়ো করে
মানুষের শরীরে চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য গ্রহণ যেমন জরুরী তেমনি শরীরের প্রয়োজনে উপবাস থাকা অত্যন্ত জরুরী। এই উপবাস ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নয়, থাকতে হবে শরীরের প্রয়োজনে। ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে যে উপবাস রাখা হয় তা রোজা, যা সমস্ত দিন কোন ধরনের আহার ব্যতিত এবং পানিও পান নিষেধ। কিন্তু শরীর সুস্থ রাখার জন্য যে উপবাসের কথা বলা হচ্ছে তা উপবাস থাকাকালীনও পানি পান করতে হবে শরীরকে কখনও ডিহাইড্রেশন করা চলবে না এবং উপবাস থাকতে হবে ২৪ ঘন্টা থেকে ৯৬ ঘন্টা পর্যন্ত। প্রয়োজন অনুযায়ী উপবাসের কারণে শরীরের অনেক জটিল সমস্যাই সমাধান হয়ে যায়, এটা একটা ম্যাজিক যে শুধু উপবাসের কারণে অনেক রোগ দূর হয়ে যায়।
বিশেষ করে পেটের অনেক রোগই উপবাসে দূর হয়, তেমনি মেটাবলিক সিস্টেম, ইউমিউনিটি সিস্টেম কে ঠিক করে ক্ষুদামন্দা, রক্তের ভারসাম্য বজায় রেখে ওজন কমাতে সাথে শরীরে ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে অত্যন্ত কার্যকর এই উপবাস; যার দরুণ এই উপবাসকে বলা হয় ডিটক্সিফিকেশন।
উপবাস করার নিয়ম হচ্ছে ভোরে ঘুম থেকে উঠেই ১ গ্লাস কুসুম গরম পানি পান তার দু মিনিট পর একগ্লাস কুসুম গরম পানি, এক চামচ মধু, একটি লেবুর রস মিশিয়ে পান তার দুমিনিট পর আরো একগ্লাস কুসুম গরম পানি পান করতে হবে। ঠিক দু’ঘন্টা পর একগ্লাস কুসুম গরম পানি, এক চামচ মধু, একটি লেবুর রস মিশিয়ে পান এভাবে রাত ৮টা পর্যন্ত এভাবে প্রতি দুঘন্টা পর পর এই একগ্লাস কুসুম গরম পানি, এক চামচ মধু, একটি লেবুর রস মিশিয়ে পান করে যেতে হবে। আর কোন ধরনের খাবারের প্রয়োজন হবে না।
দ্বিতীয়দিনও সকাল থেকে একগ্লাস কুসুম গরম পানি, এক চামচ মধু, একটি লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে হবে প্রতি দুমিনিট পর পর। তৃতীয়দিনও একই পদ্ধতিতে পানি পান করে যেতে হবে। তিন দিনের উপবাস হচ্ছে একটি ভারসাম্য মূলক, চার দিনের টা হচ্ছে যদি পেটের বেশি পরিমাণে অসুখ থাকে আর ৫ দিনের উপবাস হচ্ছে যারা কোন ক্রোণিক সমস্যায় ভুগছেন তারা ৫ দিন উপবাস করবেন। উপবাস শেষ করে পরের দিন আধা বেলা যে কোন ফল খেয়ে কাটিয়ে স্বাভাবিক খাবারে ফিরে আসবেন। এতে করে শরীরের ডিটক্সিফিকেশন হয়ে যাবে শরীর থেকে অনেক কিছুই বেরিয়ে আসবে।
উপবাসের সময় প্রথম দিন একটু খারাপ লাগে, বিশেষ করে বিকাল থেকে মাথা ব্যথা, শরীর গরম গরম ভাব, প্রচন্ড ক্ষুদা লাগে, এটি হচ্ছে চোখের খাদ্য নেশা, শারিরিক কোন দুর্বলতা হবে না কিন্তু ক্ষুদা লাগবে, দ্বিতীয় দিন আর কোন সমস্যা হবে না, তৃতীয় দিন দুপুরের পর থেকে একটু দুর্বল লাগবে, অনেকের পাতলা পায়খানা হবে, কারও যদি পেটে আমশায় থাকে তাহলে তা বেড়ে যাবে কিন্তু ঘাবড়ানো যাবে না, এটা ডিটক্সিফিকেশনের জন্য অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ, এই পেট পরিস্কার হলে শরীর হালকা হবে এবং মূল কাজের কাজটি হবে। চতুর্থ ও পঞ্চমদিন ও দুর্বল লাগবে কিন্তু কোন সমস্যা হবেনা।
এই উপবাস শেষে দেখা যাবে শরীর হালকা হয়ে যাবে, শরীরে কোন ব্যথা থাকলে তা কমে আসবে, পেটের কোন অস্বত্বি থাকবে না, শরীরের ত্বকের রং বদলাবে, ওজন কমবে ৩ থেকে ৫ কেজি কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। এই সব হবে দৃশ্যমান আর অদৃশ্যে থাকবে শরীরে সেল গঠনের প্রক্রিয়া ঠিক হয়ে উঠবে। শরীরে মৃত সেল বেড়িয়ে আসবে নতুন সেল তৈরী হবে, রক্তে অভ্যন্তরে সুঠাম গঠন তৈরী হবে। বিশেষ করে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকবেন, পেটের অভ্যন্তরে পরজীবিগুলো নতুন কাঠামোয় তৈরী হবে, শরীর অসিড কন্ডিশণ থেকে এ্যালকালাই ফর্মে আসবে। আর এ্যালকালাই পরিবেশে ক্যান্সারের জীবাণু বাড়ে না বরঞ্চ মারা যায়, সাথে শরীরে বিষ বেদনা কমতে শুরু করে। শরীরে টিউমারারের বাড়ন্তভাব কমে আসবে, এলার্জি থাকলে কমবে, পেটে গ্যাস হওয়ার সম্ভবনা কমে আসবে। এই উপবাস অনেকটা নবজন্ম হিসেবে শরীরটাকে তৈরী করবে।
আর এই নবজন্ম শরীরটাকে যত্ন নিতে হবে। যে যে কারণে অনেক সমস্যা বাধিয়ে শরীরকে রোগাকান্ত করে ফেলেছিলেন সেই অভ্যাসগুলো ত্যাগ করে শরীরের প্রয়োজনীয় যত্ন নিতে হবে।
উপবাস হচ্ছে প্রাকৃতিক নিয়মে শরীরের শুদ্ধতা আনার একটি কার্যকর প্রক্রিয়া, তাই এটি করতে ইচ্ছাই যথেষ্ট। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় এর কোন গুরুত্ব নেই, এই আধুনিক চিকিৎসকরা পরামর্শ দিবেন খাবেন আর ঔষধ খাবেন। কিন্তু আমরা দেখেছি ঔষধ খেয়ে মানুষের সুস্থ্য হয়ে উঠার সংখ্যা অনেক কম, বিশেষ করে ক্রোণিক সমস্যাগুলোতে বলাই হয় যতদিন বেঁচে থাকবেন ঔষধেই বেঁচে থাকবেন। কিন্তু উপবাস এমনই একটি অস্ত্র যা দিয়ে ক্যান্সারের মত দুরারোগ্য ব্যাধিও দূর করা সম্ভব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।