এনজিও থেকে নেয়া ঋণের টাকা মওকুফ পেতে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসসরোধে ঘাতক স্বামী হত্যা করে স্ত্রী গোলাপীকে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর স্বামী নাছির উদ্দিন বেপারীকে (৩২) আটক করে পুলিশ। স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, স্ত্রী গোলাপীকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসসরোধে করে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে ঘাতক স্বামী। দীঘ ৪ মাস পর এভাবেই চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে তিন মাসের অন্তঃসত্তা গৃহবধু গোলাপী খুনের রহস্য উদঘাটিত হয়।
গত ২০ আগস্ট পুলিশ গৃহবধূর স্বামী নাছির উদ্দিন বেপারীকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, বালিশ চাপা দিয়ে সে তার স্ত্রী গোলাপী আক্তার খাদিজাকে হত্যা করে। সে আরো জানায়, গত ১০ এপ্রিল ২০১৮ মঙ্গলবার রাতে গোলাপীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক শেষে তার বুকের উপর বসে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। সকাল ৬-৭ টার দিকে দোকানে যায় সে। নাস্তা নিয়ে ঘরে ডুকে ডাক-চিৎকার আর কান্নাকাটি করে এই বলে যে তার স্ত্রী বেঁচে নেই, ঘুমের মধ্যে মারা গেছে। ঠান্ডা মাথায় গোলাপীকে হত্যা করে পাক্কা অভিনেতা হিসেবে দাফন সম্পন্ন করে। পুলিশ সূত্র জানায়, তার প্রথম স্ত্রীর সন্তানকে মারধর করার অভিযোগে দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যা করা হয় বলে স্বীকারোক্তি দেয় নাছির। সে জানায়, দ্বিতীয় স্ত্রী গোলাপী অসুস্থ, তাকে অনেক চিকিৎসা করানো হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি। তার প্রথম স্ত্রীর সন্তানকে মারধর করতো গোলাপী। তাই তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা নেয় নাছির।
এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে, প্রথম স্ত্রীর নামে বেশ কয়েকটি এনজিও থেকে মোটা অংকের টাকা ঋণ নেয় নাছির। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ওই ঋণের টাকা মওকুফ পায়। এরপর দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গোলাপীকে ঘরে আনে। তার নামেও বিভিন্ন এনজিও থেকে মোটা অংকের টাকা ঋণ নেওয়া হয়। দ্বিতীয় স্ত্রীও ঘুমন্ত অবস্থায় মারা গেছে। তার নামের ঋণের টাকাও মওকুফ পাবে। তারপর তৃতীয় বিয়ে !
কিন্তু এবার আর শেষ রক্ষা হয়নি, ফেঁসে গেলেন নাছির। ময়নাতদন্তে শ^াসরোধ করে হত্যার রির্পোট পাওয়ার পর হত্যা মামলা করেন গোলাপীর পিতা সোলেমান। আটক করা হয় ঘাতক নাছিরকে। হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জাবেদুল ইসলাম জানান, শারিরিক তৃপ্তি দিতে না পারায় এবং প্রথম স্ত্রীর সন্তানকে মারধর করার অভিযোগে বালিশ চাপা দিয়ে গোলাপীকে খুন করে বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে স্বামী নাছির। তার বিরুদ্ধে ৩০২/৩১৬ এবং ২০১ ধারায় হত্যার অভিযোগ এনে গোলাপীর বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন।