কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাশেদ খানসহ ২৪ জনের জামিন দিয়েছেন আদালত। সোমবার তাদের জামিন দেন। এর আগে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর আসামির জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, ৮ জুলাই কোটা সংস্কার নিয়ে ফেসবুক লাইভে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় ৫ দিন এবং আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসায় ভাঙচুরের অপর মামলায় রাশেদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
রিমান্ড শেষে এদিন রাশেদকে আদালতে হাজির করে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অপরদিকে রাশেদের পক্ষে জামিন আবেদন করা হয়।
জামিন শুনানিতে রাশেদের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম, নূর উদ্দিন, জাইদুর রহমান আদালতকে বলেন, রাশেদকে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। চিকিৎসার জন্য হলেও তার জামিন জরুরি। রাশেদ একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, জামিন দিলে সে পলাতক হবে না। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে রাশেদের জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের ৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১২টা থেকে ২টার মধ্যে শতাধিক মুখোশধারীরা উপাচার্যের বাড়িতে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র লোহার রড, পাইপ, হেমার, লাঠি
ইত্যাদি নিয়ে উপাচার্যের বাড়ির ওয়াল টপকে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে।
দুষ্কৃতকারীরা ঐতিহ্যবাহী ভবনে সংরক্ষিত মূল্যবান জিনিসপত্র, আসবাবপত্র, টিভি, ফ্রিজ, ফ্যানসহ সকল মালামাল ভাঙচুর করে। ভবনে রক্ষিত দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। ভবনে রক্ষিত সিটি ক্যামেরা ভাঙচুর করে ও আলামত নষ্টের জন্য কম্পিউটারে রক্ষিত ডিভিআর পুড়িয়ে দেয়।
এতে কমপক্ষে দেড়কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এ ঘটনায় ১০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সিকিউরিটি অফিসার এসএম কামরুল আহসান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের মামলা করেন। এ ছাড়া একই সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের রাস্তা বন্ধ করে টায়ার ও আসবাবপত্র জ্বালানোসহ নাশকতা সৃষ্টি এবং পুলিশকে মারধরের ঘটনায় আরও তিনটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। তবে কোনো মামলার এজাহারেই আসামির নাম উল্লেখ নেই। অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতিটি মামলাই রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের করা হয়।
এছাড়া কোটা সংস্কার নিয়ে ফেসবুক লাইভে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে মানহানিকর বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে রাশেদের বিরুদ্ধে চলতি মাসের ১ জুলাই তথ্যপ্রযুক্তি আইনে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।