Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মা-যমুনায় আগ্রাসীরূপ

ভাঙন ঝুঁকিতে ১১ জেলার প্রায় ২৩শ’ হেক্টর এলাকা, ৩০০ বসতবাড়ি, ১১৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, ৩ হাজার মিটার সড়ক ও ২৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

আসিফ তাসনীম | প্রকাশের সময় : ১৭ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৬ এএম

টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে কয়েক দিন আগে সৃষ্ট আকস্মিক মাঝারি আকারের বন্যা ও মৌসুমি পানি নেমে আসার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক হারে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন। ভাঙনে বহু এলাকার সড়ক, দোকানপাট, ঘর-বাড়ি, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি এতটা ভয়াবহ যে, কোথাও উপজেলা সদর চিরতরে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঘর-বাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব মানুষগুলোর আশ্রয় হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে কিংবা কয়েকশ শিক্ষা- প্রতিষ্ঠানে। কেউ কেউ কর্মসংস্থান বা বেঁচে থাকার আশায় এলাকা ত্যাগ করে শহর বা অন্য কোনো স্থানে অস্থায়ী বা স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত হচ্ছে। এসকল স্থানে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফসলের হয়েছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। চরম অবনতি ঘটছে ক্ষতিগ্রস্থ লোকজনের সামাজিক অবস্থানের। বৃদ্ধি পাচ্ছে পারিবারিক সঙ্কট ও বেকারত্ব।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থার (উন্নয়ন অন্বেষণ) এক হিসাবে দেখা গেছে, প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ শিকার হচ্ছে প্রায় ১০ লাখ মানুষ। বাংলাদেশে গড়ে আট হাজার সাতশ হেক্টর জমি নদীতে বিলীন হয়। এছাড়া সিইজিআইএসের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, এ পর্যন্ত পদ্মা ও যমুনার করাল গ্রাসের শিকার হয়েছে দেশের দেড় লক্ষাধিক হেক্টর এলাকা। সিইজিআইএসের সমীক্ষায় দেখা গেছে, চলতি বছর ১১ জেলার প্রায় ২৩শ’ হেক্টর এলাকা, ৩০০ বসতবাড়ি, ১১৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, ৩ হাজার মিটার সড়ক ও ২৬ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীতে তলিয়ে যেতে পারে। এছাড়া ভাঙন ঝুঁকিতে নড়িয়া উপজেলা সরকারি খাদ্য গুদাম, পৌর ভবন। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা এবং আমাদের রাজশাহী ব্যুরো প্রধান রেজাউল করিম রাজু শরীয়তপুর থেকে মোঃ হাবিবুর রহমান হাবীব, ফেনী থেকে মো. ওমর ফারুক কুড়িগ্রাম থেকে শফিকুল ইসলাম বেবু, ফরিপুর থেকে নাজিম বকাউল, সাতক্ষীরা থেকে আবদুল ওয়াজেদ কচি, মাদারীপুর থেকে আবুল হাসান সোহেল, টাঙাইল থেকে আতাউর রহমান আজাদ পাঠানো তথ্যে এমন ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠে।
নদী ভাঙনের পূর্বাভাস নিয়ে কাজ করে থাকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস)। সংস্থাটি ‘নদীভাঙন পূর্বাভাস-২০১৮’ সালে একটি গবেষণা করেছে। তাতে বলা হয়েছে, এ বছর কেবল দেশের প্রধান দুই নদী অববাহিকা ব্রহ্মপূত্র-যমুনা ও গঙা-পদ্মার ২২টি স্থান ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে। গত বছরও সংস্থাটির পূর্বাভাসের ৮৬ শতাংশই সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে।
রাজশাহীতে বান ডেকেছে মরা পদ্মায়
ভাঙছে দু’পাড়, বিলীন হচ্ছে গ্রাম জনপদ, স্কুল, বাজার, অফিস আর মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু। পানি ফারাক্কা গেট পেরিয়ে হানা দিচ্ছে চাপাইনবাবগঞ্জ তীরবর্তী এলাকায়। ইতোমধ্যে সদর উপজেলার চর বাগডাঙায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী পাড়ের বিজিবি ক্যাম্পের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। বালির বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে। হুমকির মুখে রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের কমপ্লেক্সে, ভূমি অফিস, হাট বাজার, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ তিনটি গ্রামের ছয়শো পরিবার। চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছুটে এসে হানা দিয়েছে রাজশাহীর গোদাগাড়ি, পবাতে বিলিন হয়েছে গ্রাম জনপদ। রাজশাহী মহানগর রক্ষার মূল গ্রোয়েণ টি-বাঁধের পাশের ম্যাট্রেসিং করা অংশ দেবে গেছে। গ্রায়েণ রক্ষায় জিও ব্যাগে বালি ভরে ফেলা হচ্ছে। ভাঙন দেখা দিয়েছে চারঘাটের টাঙনে। হুমকিতে পড়েছে স্কুলসহ কয়েক হাজার ঘর বাড়ি। ইউসুফপুর ইউনিয়নের এই গ্রামটি ২০০১ সালে তীর রক্ষার জন্য ম্যাট্রেসিং করায় বেশ সুরক্ষিত ছিল। গত বছর ধরে একটু একটু করে ভাঙতে থাকলেও এবার ভাঙন তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে।
এলাকাবাসি অভিযোগ করে বলেন প্রভাবশালীরা সকল নিয়ম নীতি লংঘন করে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালি তোলার কারণে নদী তীরের মাটি ও বøক সরে গিয়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন শুরু হলেও বন্ধ হয়নি বালি উত্তোলন। ইউসুফপুর ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল আলম রতন জানান, বিলীন হয়েছে দশ গ্রামের দেড় হাজার বিঘা জমিসহ গাছ পালা ঘরবাড়ি। চোখের পলকে হারিয়ে গেল চকরাজাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ২০১২ সালে নদী গর্ভে চলে যাবার পর ২০১৫-১৬ সালে সরকারীভাবে কালিদাস খালি মোজায় সরিয়ে এনে আঠাত্তর লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মান করা হয়। এবার সেটিও নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষা লাভ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আর বাসিন্দারা চোখের সামনে তাদের জমি জিরাত ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে যাবার দৃশ্য অবাক হয়ে দেখছে। হা হুতাশ করছে।
ভাঙনে বদলে যাচ্ছে নড়িয়ার মানচিত্র
পদ্মা নদীর অব্যাহত ভাঙন আতংকে রয়েছে নড়িয়া পৌরসভা ও উপজেলা শহরসহ আশপাশের এলাকা। প্রতিদিনই একের পর এক বসতভিটা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ফসলী জমি হারিয়ে যাচ্ছে আগ্রাসী পদ্মার গ্রাসে। নড়িয়া ও জাজিরার চন্ডিপুর, চরজুজিরা, বিলাসপুর, পাচুখাঁরকান্দি, কাইয়ুম খাঁরকান্দি, গফুর বেপারী কান্দি, কুন্ডেরচরসহ বিস্তৃর্ন এলাকার মানুষের কাছে সহায় সম্বল হারানোর আতঙ্কের নাম পদ্মানদী। গত এক সপ্তাহে দেড় হাজার পরিবারে বসতঘর, ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২টি মসজিদ সহ ৮শ একর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। শরীয়তপুর-ওয়াপদা সড়কের ১০০ মিটার পাকা রাস্তা নদীতে চলে গেছে। এছাড়াও হুমকির মুখে রয়েছে মুলফৎগঞ্জ হাসপাতাল, নড়িয়া উপজেলা সরকারি খাদ্য গুদাম, পৌর ভবন, শতাধিক সরকারি প্রতিষ্ঠান ও হাজার হাজার বাড়িঘরসহ স্থাপনা। আতঙ্কে দিন কাটছে পদ্মা পারের মানুষের। বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য টাকা বরাদ্দ হলেও আইনি প্রক্রিয়ার জন্য কোনো কার্যক্রম শুরু হচ্ছে না। নির্বাহী প্রকৌশলী বলছেন, তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত বরাদ্দ দিয়ে কিছু জিও ব্যাগ ফেলে নদীর গতি পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, প্রতি বছরই এ এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দেয়। বর্তমানে ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
ফরিদপুরে আড়িয়াল খাঁ নদে ভাঙন
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে চরমানাইর ইউনিয়নের চর বন্দর খোলা ফাজিল মাদরাসার অফিস কক্ষ ভবনের একাংশ নদীতে চলে গেছে। ভবনের অন্য অংশও অত্যন্ত ঝুঁকিতে রয়েছে। যে কোনো সময় বিলীন হতে পারে পাড়ে থাকা ভবনের অংশটুকু। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে স্কুল ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে মাদরাসা ভবনের আরো দুটি বিল্ডি ও চরবন্দর খোলা নাদেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ছাড়াও ইউনিয়নের ৫০০ বিঘা ফসলি জমি ও বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দুই শতাধিক গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত জানিয়েছেন, তারা নদের ভাঙনে চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। নদীতে তাদের ঘরবাড়ি এবং খাদ্যসামগ্রীও চলে গেছে। অসহায় হয়ে পড়ে তারা এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সরেজমিন দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো কেউ আত্মীয়ের বাড়ি আবার কেউ সরকারি রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। নদী পাড়ের বাসিন্দারা তাদের বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। ভাঙনের মুখে চরমভাবে হুমকিতে থাকা চরবন্দর খোলা মাদরাসা ও চর বন্দর খোলা নাদেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটি প্রতিষ্ঠানের ভবন বিল্ডিং এর দরজা-জানালা, লোহার গ্রিল ভেঙে নেওয়া হচ্ছে।
ফেনীতে ভাঙন আতঙ্ক
ফেনী সদর উপজেলার ফরহাদনগর ইউনিয়নের কালিদাস পাহালিয়া নদীর জোয়ার-ভাটার ফলে ফের ভাঙনের কবলে পড়ে ভিটেবাড়িসহ সর্বস্ব হারাতে বসেছে দুই শতাধিক পরিবার। এলাকাবাসী জানায়, সামান্য বৃষ্টির ফলে জোয়ার-ভাটার কারণে ফরহাদনগর ইউনিয়নের চরকালিদাস গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালিদাস পাহালিয়া খালের ফকির আহাম্মদের বাড়ি সংলগ্ন স্থান থেকে ফের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওই গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার। স¤প্রতি নদী ভাঙনে জাগির মেম্বার বাড়ি, সর্দার বাড়ি, বেলু মিস্ত্রি বাড়ি, ফকির আহাম্মদের বাড়ি, সৈয়দ মেম্বার ও দুলাল মেম্বারের বাড়িসহ দুই শতাধিক পরিবার নদীগর্ভে বিলীন হতে বসেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে এসব পরিবারের ভিটেবাড়ি, ফসলি জমি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগে ভাঙনের কবলে পড়ে প্রায় শতাধিক পরিবার ভিটেবাড়িসহ সর্বস্ব হারিয়েছে।
কুড়িগ্রাম ধরলার ভাঙন
ধরলার পানি বাড়ার সাথে সাথে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার সারোডাবে এলাকায় পাকা সড়কটি ভেঙে যায়। পাশাপাশি গ্রামবাসীদের উদ্যোগে মেরামত করা বাঁধটি ভেঙে পানি ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবার পাশাপাশি পাকা সড়ক সংলগ্ন বসতভিটাগুলো একের পর এক বিলীন হচ্ছে। বিলীন হচ্ছে বাঁধ, রাস্তা, বসতভিটা আবাদী জমিসহ অনেক স্থাপনা। এ পর্যন্ত এই এলাকায় গৃহহীন হয়েছে ৩০টি পরিবার। ভাঙনে শেষ সম্বল হারিয়ে অনেকে বাঁধের রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছেন। নদী ভাঙনের শিকার আজিজল ইসলাম জানান, তারা কোন মতে বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়ে আছেন। আরো ৩০-৪০টি বাড়ি ভাঙনের ঝুঁকির মুখে রয়েছে। ভাঙনে এই এলাকার ইউপি সদস্য বাকিনুর মিয়ার বাড়িও বিলীন হয়েছে।
মাদারীপুরে নদী ভাঙন
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার চরজানাজাত এলাকায় পদ্মা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। ফলে বসতবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। জানা গেছে, পদ্মা নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চল হওয়ায় প্রতি বছরই উপজেলার চরজানাজাত এলাকাটি নদী ভাঙনের কবলে পরে। এর ফলে এ এলাকার সাধারণ জনগণের ব্যাপক ক্ষতি হয়। পূর্বেই এ এলাকার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পানি বৃদ্ধি ও প্রবল ¯্রােতের কারণে এ বছর এ অঞ্চলের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় বিলীন হওয়ার পথে। দু’এক দিনের মধ্যে পুরো বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে চলে যাবে। এ জন্য ভবনটি সরানোর কাজ চলছে। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ রাশিদা বেগম বলেন, কোন এক সময় আমার স্বামীর ৪০-৫০ বিঘা জমি ছিল। আজ আমাদের ১ বিঘা জমিও নাই। পদ্মা নদী আমাদের সব জমি কেড়ে নিয়েছে। এখন আমরা পরের জমিতে কোন রকমে ঘর তুলে বসবাস করছি।
সাতক্ষীরার তালায় টিআরএম’র বাঁধে ভাঙন
তালার দোহার গ্রামে টিআরএম’র প্রকল্পের বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে রাস্তা ও ছোট-বড় কয়েকটি ঘেরসহ মাদরা ও মাদরা গুচ্ছগ্রামের প্রায় অর্ধশত বাড়ি তলিয়ে গেছে। বুধবার রাত ১২ টার দিকে উপজেলার শালিখা টিআরএম প্রকল্পের পশ্চিম পার্শে¦ দোহার খাল সংলগ্নে উক্ত বাধঁ ভেঙে যায়। মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গনেশ দেবনাথ জানান, টিআরএম’র দোহার খাল সংলগ্ন বাঁধ ভেঙে যায়। এতে কপোতাক্ষ নদের পানি মাগুরাডাঙা বিল ও মাদরা গুচ্ছগ্রামে প্রবেশ করে। রাস্তা ও বাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। শত শত মৎস্য ঘের এবং বসত বাড়ি প্লাবিত হয়ে ব্যপক ক্ষয়-ক্ষতি হবে।
টাঙাইলে ভাঙন
টাঙাইলে ঝিনাই নদীর পানি বেড়ে বেশ কয়েকটি এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এরই মধ্যে বিলীন হয়েছে শতাধিক বসতভিটা ও ফসলের জমি। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে নদী পাড়ের কয়েক হাজার মানুষের। আর অর্থ বরাদ্দ পেলেই ভাঙন ঠেকাতে কাজ শুরুর কথা জানান জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সরেজমিনে টাঙাইল সদর, কালিহাতী ও বাসাইল উপজেলার আশেপাশের অন্তত বিশটি গ্রামের মানুষ ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। অনেকেই বসত ভিটা হারিয়ে পথের ধারে আশ্রয় নিয়েছে অথবা পরের জমিতে অস্থায়ীভাবে ঘর তুরে বসবাস করছে। কেউবা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌলী গ্রামের একাধিক ব্যক্তি বলেন, শুষ্ক মওসুমে নদী থেকে মাটি উত্তোলন করায় এখানে ভাঙনের তীব্রতা বেশি। এছাড়াও এখানকার প্রভাবশালী মহল নিয়ম বহির্ভূতভাবে মাটি কাটায় এখানকার রেলসেতুটি হুমকির মুখে রয়েছে। অথচ প্রশাসনের নাকের ডগায় এভাবে মাটি তুলে নিলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মা

১১ জানুয়ারি, ২০২৩
৩১ অক্টোবর, ২০২২
৪ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ