Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অ্যাথলেটিক্সেও নেই পদকের আশা!

জাহেদ খোকন : | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক যে কোন গেমসেরই মুল আকর্ষণ থাকে অ্যাথলেটিক্স ডিসিপ্লিন। তবে গেমসের আকর্ষণ ‘ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড’ হলেও এই ডিসিপ্লিনে সর্বশেষ ২০১৪ ইনচোন এশিয়ান গেমসে অংশ নেয়নি বাংলাদেশ। শুধু অ্যাথলেটিক্সই নয়, এশিয়াডের ওই আসরে সাঁতার ডিসিপ্লিনেও কোন ক্রীড়াবিদ পাঠায়নি বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ)। যে কারণে নানা সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাদেরকে। তবে এবারের এশিয়ান গেমসে বিওএ সাঁতার ও অ্যাথলেটিক্স ডিসিপ্লিনে দল পাঠাচ্ছে। আগামী ১৮ আগষ্ট ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ও পালেমবাং শহরে বসছে এশিয়ান গেমসের ১৮তম আসর। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ক্রীড়াযজ্ঞের পর্দা নামবে ২ সেপ্টেম্বর। এবার এশিয়াডে বাংলাদেশ ১৪টি ডিসিপ্লিনে অংশ নেবে। যার অন্যতম একটি হচ্ছে অ্যাথলেটিক্স। এশিয়ান গেমসে অংশ নিতে বাংলাদেশের দু’জন অ্যাথলেট ইন্দোনেশিয়ায় যাওয়ার অপেক্ষায় থাকলেও সাঁতারুদের মতো তাদেরও নেই কোন পদকের আশা। তাদের লক্ষ্য শুধু নিজেদের টাইমিংয়ে উন্নতি করা।
গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সিনিয়র অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করেই এশিয়াডের দলে জায়গা পেয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুমি আক্তার ও আবু তালেব। দু’জনেই জাতীয় সিনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে সোনাজয়ী। জাকার্তায় সুমি ৪০০ ও ৮০০ মিটার স্প্রিন্টে দৌঁড়াবেন। তবে আবু তালেব কেবল ৪০০ মিটারে অংশ নিবেন।
অতীতে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্সের সাফল্য চোখে পড়ার মতো থাকলেও এখন সেটা নেই বললেই চলে। সাউথ এশিয়ান গেমসে (এসএ) এই ডিসিপ্লিন থেকে নিয়মিতই পদক জিততেন লাল-সবুজের অ্যাথলেটরা। ঢাকায় অনুষ্ঠিত ১৯৮৫ ও ১৯৯৩ সালের এসএ গেমসে দ্রুততম মানব হয়েছিলেন বাংলাদেশের দুই অ্যাথলেট যথাক্রমে শাহ্ আলম ও বিমল চন্দ্র তরফদার। তাদের সাফল্যে অ্যাথলেটিক্সের উজ্জ্বল ভবিষ্যত আশা করেছিলেন দেশের ক্রীড়াবোদ্ধারা। ক্রীড়ামোদী মহলের স্বপ্ন ছিল শাহ্ আলম-বিমলদের উত্তরসূরীরা দক্ষিণ এশিয়ার গন্ডি পেরিয়ে স্বপ্নের এশিয়ান গেমসে আলো ছড়াবেন । কিন্তু না ক্রীড়ামোদীদের সেই স্বপ্নপূরণ হয়নি।
এখন এশিয়ান গেমসেতো দূরের কথা, এসএ গেমসেই বাংলাদেশের অ্যাথলেটিক্স শ্রীহীন। এই গেমসে পদক জেতাটা এখন স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নানা কারণে দিনের দিন পিছিয়ে পড়ছেন অ্যাথলেটরা। দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনতে হলে উপযুক্ত প্রশিক্ষণসহ যেসব সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা তা থেকে বরাবরই বঞ্চিত তারা। তবে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের বর্তমান অ্যাডহক কমিটি কিছুটা ব্যতিক্রমী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ঘরোয়া আসর ছাড়া নিয়মিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় দল পাঠাচ্ছে তারা। যদিও অ্যাথলেটদের দীর্ঘমেয়াদী অনুশীলনের ব্যাপারে এখনো বেশ উদাসীন তারা।
এবারের এশিয়ান গেমসে আবু তালেব ৪০০ স্প্রিন্টে এবং সুমি ৪০০ ও ৮০০ মিটার স্প্রিন্টে অংশ নিলেও ‘ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের’ প্রধান আকর্ষণ ১০০ মিটার স্প্রিন্টে কেন অ্যাথলেট পাঠানো হচ্ছে না- এমন প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রকিব মন্টু বলেন, ‘অবশ্যই অ্যাথলেটিক্সের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। তবে এই ইভেন্টেই দল পাঠাতে হবে- তা বাধ্যতামূলক নয়। দেশের সাবেক দ্রুততম মানব মেজবাহ ও টানা সাতবারের দ্রুততম মানবী শিরিন গেল ক’বছরে বেশ ক’টি আন্তর্জাতিক আসরে অংশ নিয়ে ভালো পারফরমেন্স করতে পারেননি। তাই এবার নির্বাচক কমিটি এশিয়াডের জন্য দুই উদীয়মান অ্যাথলেটকে বাছাই করেছে। আশা করছি ওরা খুব একটা খারাপ করবে না।’
জাতীয় সিনিয়র মিটে সুমি ৪০০, ১৫০০ ও তিন হাজার মিটারে স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। এবারের সামার মিটে এই তিন ইভেন্টের সঙ্গে ৮০০ মিটারেও স্বর্ণ জিতে সেরা অ্যাথলেট নির্বাচিত হয়েছেন সুমি। অন্যদিকে জাতীয় মিটে ৪০০ মিটার স্প্রিন্টের ইভেন্টে স্বর্ণ জিতলেও সামারে ব্রোঞ্জপদক জিতেছেন আবু তালেব। অসুস্থতার কারণে তালেবের পারফরমেন্সে খারাপ হয়েছে বলে জানান সেনাবাহিনীর কোচ ফরিদ খান চৌধুরী। তবে এ দুই অ্যাথলেটকে নিয়ে খুব বেশি আশাবাদী নন এবারের এশিয়াডে বাংলাদেশ দলের কোচ রাজিয়া সুলতানা অনু। তিনি বলেন, ‘ওরা ওদের নিজেদের টাইমিংয়ের উন্নতি ঘটাবে। এরচেয়ে বেশি কিছু আশা নেই এশিয়ান গেমসে।’ কোচের কথায় সুর মেলালেন দুই অ্যাথলেটও।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ