Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফিকে স্বপ্ন নিয়েই যাচ্ছেন মাবিয়া

জাহেদ খোকন : | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

আর ক’দিন পরেই আরেকটি আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসরে অংশ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী ১৮ আগষ্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ও পালেমবাং শহরে অনুষ্ঠিত হবে ১৮তম এশিয়ান গেমস। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ক্রীড়াযজ্ঞের ১৪ ডিসিপ্লিনে অংশ নেবেন বাংলাদেশের প্রায় দেড়শত ক্রীড়াবিদ। অলিম্পিক গেমসের পরেই এশিয়াডের অবস্থান হওয়ায় এ আসরে ভালো পারফরমেন্স করা প্রতিটি ক্রীড়াবিদের লালিত স্বপ্ন। এ স্বপ্ন লাল-সবুজের ক্রীড়াবিদদেরও। কিন্তু স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারা কতটা সফল তা অতীতের এশিয়াডগুলোর দিকে নজর দিলেই জানা যায়। এশিয়ান গেমসের আগের আসরগুলোতে দলগত ইভেন্টে বাংলাদেশ পদক জিতলেও ব্যক্তিগত ইভেন্টে এখন পর্যন্ত পদকহীন তারা। যদিও এবার বুকভরা আশা আর স্বপ্ন নিয়েই ইন্দোনেশিয়া যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। দলগতের পাশাপাশি ব্যাক্তিগত ইভেন্টেও পদক জেতার আশা তাদের। কিন্তু তা কি সম্ভব?
এবারের এশিয়াডে বাংলাদেশের অংশ নেয়া ডিসিপ্লিনগুলোর মধ্যে সম্ভাবনাময় একটি ভারোত্তোলন। দু’বছর আগে গৌহাটি-শিলং সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে এই ভারোত্তোলন থেকেই স্বর্ণ জিতে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন দেশের তরুণ প্রতিভা মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। ব্যস ওই পর্যন্তই। ১২তম এসএ গেমস শেষে যেন চুপষে যায় বাংলাদেশ ভারোত্তোলন ফেডারেশন। একটি আন্তর্জাতিক আসরে সাফল্য পাওয়ার পর যেখানে সারাবছর ওই খেলাটি নিয়ে মেতে থাকার কথা ফেডারেশন কর্মকর্তাদের, সেখানে তারা নিজেদের চেয়ার বাঁচাতেই ব্যস্ত। গৌহাটি-শিলং এসএ গেমসের পর বিরতিহীন অনুশীলনে থাকার কথা ছিল সোনাজয়ী ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্তের। কিন্তু তা আর হয়নি ফেডারেশনের ব্যর্থতায়। তিনি বিরামহীন অনুশীলনে থাকতে পারেননি। থাকবেন কিভাবে? বিদেশী কোচ, মাল্টি জিমতো দূরে থাক, একটি ভালোমানের ওয়েটলিফটিং জিমও নেই বাংলাদেশে। তাই অনুশীলনও ঢিমেতালে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম সংলগ্ন আইভি রহমান সুইমিং পুলের পার্শ্বের জিমে মাত্র একমাসের অনুশীলনে সীমান্ত যাচ্ছেন ইন্দোনেশিয়ায়। তাই অতৃপ্তি আর ফিকে স্বপ্ন নিয়েই এশিয়ান গেমসে যাচ্ছেন সীমান্ত। যে কারণে তিনি ভালো করার প্রতিশ্রæতি দিতে পারলেন না। তবে চেষ্টার কথা বললেন।
১২তম এসএ গেমসে ৬৩ কেজি ওজন শ্রেণীতে ১৪৯ কেজি তুলে সোনা জিতে দেশকে সালাম ঠুকেছিলেন সীমান্ত। সেই দৃশ্য আজও ক্রীড়াপ্রেমীদের হৃদয়ের মণিকোঠায় জ্বলজ্বল করছে। একটি স্বর্ণপদকই বদলে দিয়েছে সীমান্তের জীবন। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পেয়েছেন উত্তরায় ফ্ল্যাট। গোল্ডকোস্ট কমনওয়েলথ গেমসে ১৮০ কেজি তুলে নিজের ওজন শ্রেণীতে ষষ্ঠ হয়েছিলেন। এরপর অনেক জল গড়িয়েছে। নানা ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে ভারোত্তোলন ফেডারেশন। একের পর এক বদল হয়েছেন কর্মকর্তারা। টালমাটাল এমন অবস্থা ভারোত্তোলকদের উপরেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন এই স্বর্ণকন্যা।
আক্ষেপ এখানেই শেষ নয়। বিদেশী কোচের অভাবে পারফরম্যান্স দিনকে দিন তলানীতে গিয়ে নাকি ঠেকছে তাদের। সীমান্ত বলেন,‘ফিরোজা পারভীন কিংবা বিদ্যুৎ কুমার রায় যুব গেমসের ভারোত্তোলকদের কোচ হতে পারেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক গেমসের ভারোত্তোলকদের জন্য বিদেশী কোচের প্রয়োজন। এমন ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই আমাদের পারফরম্যান্স দিনকে দিন কমে যাচ্ছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘২০১৪ সালে ঢাকায় এসেছিলেন রাশিয়ান কোচ অবিনাশ পান্ডে। একটি কোচেস কোর্স করিয়েছিলেন ১৫ দিন থেকে। এই অবিনাশই পরে ইন্দোনেশিয়ার কোচ হয়ে গেছেন। যার ফলে অলিম্পিকে রুপা জিতেছে ইন্দোনেশিয়া। এমন কোচের প্রয়োজন আমাদের।’
এবারের এশিয়ান গেমসে ৬৩ কেজি ওজন শ্রেণীতে লড়বেন মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। ভারোত্তোলক হিসেবে তিনি একাই যাচ্ছেন ইন্দোনেশিয়া। তার কথায়,‘বাংলাদেশ থেকে আমি একাই ভারোত্তোলক হিসেবে যাচ্ছি। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) একজনের কথাই বলেছে। অথচ সেখানে তিন থেকে পাঁচজন গেলে মানসিকভাবে আমি চাঙ্গা থাকতে পারতাম। তারপরও আমি চেষ্টা করবো এশিয়ান গেমসে ভালো পারফরমেন্স করার। এ ব্যাপারে দেশবাসীর দোয়া কামনা করছি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: এশিয়ান গেমস

৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ