মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক পালাবদলের প্রক্রিয়ার সময়কাল সহজভাবে অতিক্রম করার সুবিধার্থে চীন পাকিস্তানকে ১৫০ থেকে ১৭০ কোটি ডলারের ঋণ দিয়েছে। শিথিল শর্তে ইসলামাবাদকে ২০০ কোটি ডলার সহায়তা দেয়ার যে কথা হয়েছিল, তারই অংশ হিসেবে এটা দেয়া হয়েছে। এদিকে, পাকিস্তানে হবু সরকার বেশ কতগুলো বড় ধরনের অর্থনৈতিক, আর্থিক, প্রশাসনিক পুনর্গঠনের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে।
চীনা ঋণের অবশিষ্টাংশ স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানে (এসবিপি) শিগগিরই জমা দেয়া হবে। চীনের এক শীর্ষ কর্মকর্তা দ্য নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তবে, অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীনের এই ঋণ সহায়তা আইএমএফ কর্মসূচির বিকল্প হবে না। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যে ২ হাজার ৬ শ’ থেকে ২ হাজার ৮ শ’ কোটি ডলারের বাজেট ঘাটতি রয়েছে, সেটির কথা বিবেচনা করে তারা এ কথা বলছেন।
নির্বাচনে বিজয়ের পর প্রথম বক্তৃতায় পিটিআই প্রধান ইমরান খান অর্থনীতির কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এর মধ্যে রয়েছে কর এবং খরচ কমানোর বিষয়। কিন্তু ২ হাজার ৮ শ’ কোটি ডলারের বাজেট ঘাটতি নিয়ে তিনি কিছু বলেননি, যেটা পাকিস্তানের জন্য এখন বড় ধরনের একটা অর্থনৈতিক সমস্যা। কিন্তু পাকিস্তান অর্থ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালনকারী সাবেক এক আমলা বলেন, ইমরান খানের সরকারের ট্যাক্স মওকুফ স্কিমকে একটা সুযোগ দেয়া যেতে পারে, যাতে এর মেয়াদ এক মাস বাড়ানো হয়। তিনি বলেন, নতুন সরকারের জন্য এটা চমৎকার একটা সূচনা হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা বলেন, এ রকম ক্ষেত্রে পাকিস্তান হয়ত আইএমএফ কর্মসূচিকে এড়াতে পারবে। ইমরান খান ইসলামাবাদে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূতের সাথেও দেখা করেছেন। তিনিও আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, সৌদি সরকার হয়ত নতুন সরকারের প্রতি শুভেচ্ছার নিদর্শণ স্বরূপ কয়েক কয়েকশ’ ডলার অর্থ সহায়তা দিতে পারে। কারণ ২০১৪ সালে পিএমএল-এন নেতৃত্বাধীন সরকারকেও তারা ১৫০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছিল।
সাবেক অর্থমন্ত্রী ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হাফিজ পাশা বলেন, পাকিস্তানের যে অর্থনৈতিক ঘাটতি রয়েছে তার পরিমাণ বর্তমান অর্থবছরে ২ হাজার ৮ শ’ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এটা পূরণের জন্য নতুন সরকারকে কৌশল গ্রহণ করতে হবে।
অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের পথে পাকিস্তান
পাকিস্তানে হবু নতুন সরকার বেশ কতগুলো বড় ধরনের অর্থনৈতিক, আর্থিক, প্রশাসনিক পুনর্গঠনের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। এশিয়ার এই দেশটিতে প্রতিযোগিতার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে এবং কাঠামোগত দক্ষতা বাড়ানোর জন্য এই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সামনে মুদ্রা সঙ্কটের বড় বাধা রয়েছে। যেখান থেকে পূর্ণমাত্রার অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে। খান অবশ্য অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের মূল নীতিগুলো জানিয়েছেন। কর রাজস্ব বাড়ানোর পাশাপাশি বহু পাকিস্তানির জীবনমান উন্নয়নের কথা বলেছেন তিনি।
সাধারণ নির্বাচনে জয়ের মাত্র কয়েকদিন পরেই দেশের অর্থনীতিকে পুরো ঢেলে সাজাতে চলেছেন সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খান। দেশের স্টক একচেঞ্জ ও বন্ড মার্কেটে সংশ্লিষ্টরাও স্বাগত জানিয়েছেন তাকে। উচ্চাকাক্সক্ষী পুনর্গঠনের জন্য ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ডের (আইএমএফ) সাথেও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার কথা ভাবছেন তিনি।
বর্তমানে মুদ্রা সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান। আর্জেন্টিনা, তুরস্ক ও দক্ষিণ আফ্রিকার সারিতে গিয়ে দাঁড়াতে পারে পাকিস্তান। এই সবগুলো দেশেই বছরের শুরুতে মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে। সারা বিশ্বে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, কাঠামোগত বিধিনিষেধ এবং ফেডারেল রিজার্ভের কঠোর নীতির ফলে মার্কিন ডলারের উত্থানের কারণে এই সমস্যার তৈরি হয়েছে।
সঙ্কট কাটানোর জন্য আইএমএফ থেকে ১২তম অর্থ সহায়তা নিতে পারেন খান। কিন্তু এ জন্য পুনর্গঠন, আর্থিক বিধিনিষেধ, স্বচ্ছতার যে সব কঠিন শর্ত রয়েছে, সেগুলোর কারণে পাকিস্তানকে হয়তো আবার চীনের দিকে ঝুঁকতে হতে পারে। উল্লেখ্য, বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প এগিয়ে নেয়ার জন্য চীন পুরো এশিয়াতেই অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে।
নির্বাচনে প্রাথমিকভাবে বিজয়ী হওয়ার পর এক টেলিভিশন বক্তৃতায় খান বলেন, তিনি দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নয়ন এবং দুর্নীতি দূর করার দিকে মনোযোগ দেবেন। গত ডিসেম্বরের পর থেকে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ পর্যন্ত চার দফা রুপির অবমূল্যায়ন করেছে। রিজার্ভ কমে আসায়, এবং আমদানি ও জাতীয় ঋণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে এ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অগ্রাধিকারের কথা বলতে গিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য বাজেটে ব্যয়ের খাত কমানোর কথা বলেন খান।
আন্তর্জাতিক বাজারে পাকিস্তানের প্রতিযোগিতার অবস্থান ফিরিয়ে আনার কথাও বলেন খান। পণ্য রফতানির উপর সেটা অনেকাংশে নির্ভর করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিম্নমানের শ্রমিক, উচ্চ নির্মাণ ব্যায় এবং সরকারের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপের কারণে পাকিস্তানের অর্থনীতির গতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সূত্র ঃ এসএএম।
আফগান প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণ গ্রহণ ইমরানের
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি তাহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
রোববার টুইটারে দেয়া এক বিবৃতিতে আফগান প্রেসিডেন্ট তার দেশে ইমরানকে সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, তিনি শিগগিরই কাবুলে ইমরানের সফর আশা করছেন।
টুইটে গনি লিখেন, ‘আমি এইমাত্র ইমরান খানের সঙ্গে কথা বলেছি এবং জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার জন্য তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা দুজনেই অতীতকে অতিক্রম করে দুই দেশ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের জন্য একটি সমৃদ্ধ রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপনে সম্মত হয়েছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।