পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দাবি করা হয় দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এই খাদ্যের জোগান দেন কৃষকরা। কোনো কৃষক ঋণের কিস্তি দিতে না পারলেই তাদের কোমরে দড়ি পড়িয়ে কারাগারে নেয়া হয়। অথচ খাদ্য নিরাপত্তার প্রধান নিয়ামক কৃষি ও কৃষক। কৃষকের কাছে অর্থ সরবারহের চেষ্টা করেও তা পুরোপুরি সফল হওয়া যায় না, নানা শর্তের বেড়াজালে আটকে যায় এমন অভিযোগ অহরহ শোনা যায়। কিন্তু তারপরও যে ঋণ কৃষকের কাছে পৌঁছায় তার ফেরতের হার অন্য যে কোনো ঋণের চেয়ে বেশি। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে এমন তথ্য মিলেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর ৬ মাসে কৃষকরা ব্যবহার শেষে ব্যাংককে ফেরত দিয়েছেন ১৬ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা। যা মোট ঋণ স্থিতির ৩২ দশমিক ২২শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত ৮ ব্যাংকে ফেরত দিয়েছে ৭ হাজার ২৭৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আর ৪৬ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকে ফেরত দিয়েছেন ৯ হাজার ১৫১ কোটি টাকা। ডিসেম্বর প্রান্তিকে কৃষি ঋণের স্থিতি রয়েছে ৫০ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা।
গত ২০২১-২২ অর্থবছরে একই সময়ে (জুলাই-ডিসেম্বর) কৃষকরা ফেরত দিয়েছিলেন মোট কৃষি ঋণ স্থিতির ২৮ দশমিক ৫২ শতাংশ। টাকার অংকে ১৩ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা। সে সময় মোট কৃষি ঋণ স্থিতি ছিল ৪৭ হাজার ৬৫৯ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে কৃষকের ফেরত দেওয়ার হার ছিল ২৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে একই সময়ে কৃষকের ফেরত দেওয়ার হার ছিল ৩১ শতাংশ।
কৃষি ঋণ ফেরত দেওয়ার এই প্রভাব কৃষকের খেলাপি ঋণেরও পড়েছে। করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাত সব মিলিয়ে আর্থিক খাতে বড় ধরনের চাপ তৈরি হয়েছিল, যা এখনো বিদ্যমান আছে। মানুষের আয় কমেছে, খরচ বেড়েছে। আর এই আঘাতে সঞ্চয় কমেছে। এ কারণে আর্থিক খাতে তারল্য কমছে। এর মধ্যেও কৃষকরা তাদের ঋণের অর্থ ফেরত দিয়েছেন। খেলাপি ঋণও এ সময়ে ফেরত বেড়েছে। আর্থিক খাতের উদ্যোক্তারা এটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮১৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। যা মোট কৃষি ঋণ স্থিতির ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আগের বছরে একই সময়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। টাকার অংকে যা ৩ হাজার ৭২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। পরিমাণ এবং মোট ঋণের অংশ- দুটোই কমেছে খেলাপি ঋণ।
করোনা মহামারি আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ে খেলাপি ঋণের হার ছিল ১০ দশমিক ৩৯ শতাংশ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে ১০ দশমিক ২৪ শতাংশ। করোনা মহামারির সময়ে ঋণের কিস্তি না দিলেও খেলাপি হবে না-এ ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়। এ কারণে খেলাপি ঋণে কিছু প্রভাব পড়েছে। কিন্তু করোনা পরবর্তী এ সুবিধা উঠে গেলেও খেলাপি কৃষক বাড়েনি।
কৃষি ঋণের মান নিয়ে কথা আছে। প্রশ্ন আছে এনজিওর মাধ্যমে কৃষি ঋণ বিতরণের ফলে উচ্চ সুদ হার নিয়ে। কিন্তু তারপরও পল্লী অঞ্চল বা কৃষি বিষয়ক ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থায়ন হচ্ছে। তা সময় মতো ফিরে আসার হারও ভাল। এটা কৃষক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্যও ভাল।
উৎপাদিত কৃষি পণ্য বিক্রি করে ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা ঋণ নিয়ে ব্যবহার শেষে ফেরত দিচ্ছেন বলে মনে করেন কৃষি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে ক্ষতি যেমন হয়েছে, কৃষি ক্ষেত্রে কিছু লাভও হয়েছে। চাষিরা সবজিসহ বিভিন্ন কৃষি পণ্যের দাম পাচ্ছেন। যে কারণে কৃষকরা টাকা ফেরত দিচ্ছেন। যদিও উৎপাদনের বড় একটি অংশ চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। ব্যাংকের ঋণ ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনের ভয় ও নৈতিকতাও অন্যতম একটি কারণ। সামাজিক মূল্যবোধের কারণে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কৃষকরা চেষ্টা করেন কোনো আইনি বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হওয়ার আগেই সময় মতো তা পরিশোধ করতে। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।