পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে শিশু রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে গঠিত দু’টি তদন্ত কমিটির কোন সুপারিশই বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেই। কোন গতি নেই চার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তদন্তেও। আর এরমধ্যে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) তদন্ত নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কোন সুপারিশ বাস্তবায়ন না করে একের পর এক তদন্তের নামে সময়ক্ষেপণকে আইওয়াশ বলে মন্তব্য করছেন অনেকে।
গতকাল (মঙ্গলবার) বিএমডিসির চার সদস্যের টিম ম্যাক্স হাসপাতালে যায়। আগে থেকে চিঠি দিয়ে অভিযুক্ত তিন চিকিৎসককে উপস্থিত থাকতে বলা হলেও তারা বিএমডিসির এ নির্দেশনাকে পাত্তাই দেননি। ম্যাক্সে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করেও তাদের পাননি তদন্ত কমিটির সদস্যরা। তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রুহুল আমিন ও অপর তিন সদস্য হাসপাতালে চার ঘণ্টা অবস্থান করে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেন। পরে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রুহুল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. বিধান রায় চৌধুরী, ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত, ডা. শুভ্রদেবকে উপস্থিত থাকতে বললেও তারা উপস্থিত হননি।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা অভিযুক্ত হাসপাতালে বসেই শিশু রাইফার পিতা-মাতার বক্তব্য নিতে চাইলে তারা হাসপাতালে যেতে অপারগতা প্রকাশ করেন। রাইফার বাবা-মা কমিটির সদস্যদের তাদের বাসা অথবা প্রেসক্লাব আর তা নাহলে সার্কিট হাউসে কথা বলার বিকল্প প্রস্তাব দেন। তবে এ প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি তদন্ত কমিটি। পরে অবশ্য কমিটির সদস্য বিএমডিসির পরিচালক প্রফেসর এম এ বসির বলেন, শিশু কন্যা রাইফার পরিবারের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করবেন।
গত ২৯ জুন নগরীর মেহেদীবাগের ম্যাক্স হাসপাতালে সামান্য গলাব্যথার চিকিৎসা করাতে গিয়ে মৃত্যু হয় শিশু রাইফার। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি ও সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াসহ বেশকিছু সুপারিশ করেন। ঘটনার ২৫ দিন পরও হাসপাতালটির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এরমধ্যে হাসপাতালটিতে অভিযান চালিয়ে র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত ব্যাপক অনিয়ম ও অপচিকিৎসার প্রমাণ পেয়ে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত তিন চিকিৎসকসহ চারজনের বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় ফৌজদারী মামলা করেছেন রাইফার বাবা সাংবাদিক রুবেল খান। এ মামলায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। মামলার তদন্তও শুরু করেনি চকবাজার থানা পুলিশ। এদিকে বিএমডিসির চার সদস্যের তদন্ত দল হাসপাতালটি পরিদর্শন করে শিশু রাইফার ভর্তি থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত যাবতীয় ডকুমেন্ট সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছেন। জানা গেছে, তারা সে ধরনের কোন ডকুমেন্ট সেখানে পাননি। অনেকটা খালি হাতেই তাদের ফিরতে হয়েছে। রাইফার বাবা মামলায় অভিযোগ করেছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনেক আগেই এসব আলামত নষ্ট করে ফেলেছে। এমনকি শিশু রাইফার মৃত্যুর পর দুই ধরনের ডেথ সার্টিফিকেট দিয়েছে। তবে হাসপাতালের এমডি লিয়াকত হোসেন জানান, তারা কমিটিকে সব ডকুমেন্ট হস্তান্তর করেছে।
নিরপেক্ষ তদন্তের আহবান সিইউজের
শিশু রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় বিএমডিসির গঠিত তদন্ত কমিটিকে বির্তকের উর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার আহবান জানিয়েছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন-সিইউজে। সিইউজের সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামল, সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস গতকাল এক বিৃবতিতে বলেন, এর আগে দু’টি তদন্ত কমিটি সুস্পষ্টভাবে ম্যাক্স হাসপাতাল ও কয়েকজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেন। কোন সুপারিশই এখনো কার্যকর হয়নি। তারা বলেন, চিকিৎসায় অবহেলার জন্য ম্যাক্সের বিরুদ্ধে যেখানে অভিযোগ রয়েছে সেখানে অভিযোগকারী রাইফার পরিবার এবং অভিযুক্ত চিকিৎসকদের একসাথে ডেকে বক্তব্য গ্রহণ কখনই কাম্য হতে পারে না। এছাড়া সেখানে রাইফার পরিবারের নিরাপত্তার প্রশ্নটি জড়িত রয়েছে। কিন্তু এরপরও তদন্ত কমিটি তাদের ম্যাক্স হাসপাতালে গিয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এতে কমিটির কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সাংবাদিকরা তদন্ত কমিটির কাজের স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বলেও মন্তব্য করেন তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।