২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
অনেকের ধারণা উচ্চ রক্তচাপ শুধু বড়দের হয়। কথাটা যে একেবারেই ভুল তা কিন্তু বলা যাবে না। কথাটি কিন্তু শতভাগ সত্য নয়। শিশুদেরও উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে। বড়দের ক্ষেত্রে বেশীর ভাগ উচ্চ রক্তচাপের কারন প্রাথমিক। আর শিশুদের উচ্চ রক্তচাপ সাধারনত কিডনী কিংবা অন্য কোন রোগের কারনে হয়ে থাকে।
প্রাথমিক কারনে যে উচ্চ রক্তচাপ হয় তা আর কখনই ভাল হয়না। সারাজীবন ওষুধ খেয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে হয়। অপরদিকে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কারন নির্ণয় করতে পারলে চিকিৎসা সহজ। এসব ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ পুরোপুরি ভাল করা সম্ভব।
শিশুদের রক্তচাপ কত হলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা হবে তা নিয়ে বিস্তর বির্তক ছিল। বর্তমানে তা সুরাহা করা হয়েছে। বয়স অনুযায়ী চার্ট দেখে তা সহজেই নির্নয় করা যায়।
বড়দের রক্তচাপ মাপার মেশিন দিয়ে শিশুদের রক্তচাপ সঠিক ভাবে মাপা যায়না। তাদের জন্য বিশেষ ধরনের কাফ ব্যবহার করা হয়। তবে আজকাল ইলেকট্রনিক যন্ত্র পাওয়া যায় যার সাহায্যে সহজেই শিশুদের উচ্চ রক্তচাপ মাপা যায়।
দশ বছরের নিচের বাচ্চাদের উচ্চ রক্তচাপ হলে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই কিডনীজনিত জটিলতা থাকে। কিন্তু যেসব শিশুর ওজন অত্যাধিক বেশী, পরিশ্রম করতে চায়না এবং চর্বিজাতীয় খাবার বেশী যায় তাদের উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।
বড়দের উচ্চ রক্তচাপের যেসব লক্ষন থাকে বাচ্চাদের কিন্তু তেমন থাকেনা। ডাক্তাররা সচরাচর শিশুদের রক্তচাপ মাপেন না। কিন্তু শিশু যদি সময়ের আগেই ভুমিষ্ঠ হয়, জন্মের সময় ওজন কম থাকে, হার্টের এবং কিডনীর অসুখ থাকে তবে অবশ্যই রক্তচাপ মাপা উচিত। তা না হলে জটিলতা দেখা দিতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপ থেকে বাচ্চাদের নানা সমস্যা হতে পারে। বাচ্চাদের ঘুমের মধ্যে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় থাকে আমরা ‘¯িøপ এপনিয়া’ বলি। খুব ছোট অবস্থায় যদি উচ্চ রক্ত চাপ থাকে এবং তা যদি বড় হয়েও থেকে যায় তবে স্ট্রোক,হার্ট এটাক, হার্ট ফেইলিওর এবং কিডনীর অসুখ হতে পারে।
বড়দের ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ ধরা পড়লে ল্যাবরেটরিতে যেসব পরীক্ষা করা হয় শিশুদের ক্ষেত্রেও একই পরীক্ষা করতে হয়। রক্ত পরীক্ষা করলে বøাড গøুুকোজ, কিডনীর অবস্থা এবং হরমোনের মাত্রা বোঝা যায়। ইউরিন বা প্রস্রাব পরীক্ষা করা হয় অ্যালবুমিন প্রস্রাব দিয়ে যাচ্ছে কিনা তা জানার জন্য। কিডনীর আল্ট্রাসাউন্ড করা হয় কারন বাচ্চাদের বেশীর ভাগ উচ্চ রক্তচাপের কারন কিডনী জনিত। এছাড়া ইসিজি এবং ইকোকার্ডিওগ্রাম করা হয় হৃদপিন্ডের অবস্থা জানার জন্য।
উচ্চ রক্তচাপের কারন তীব্রতা ও জটিলতা অনুসারে চিকিৎসা করতে হয়। সবার ক্ষেত্রে একই ওষুধ কার্যকরী নয়। ডাইউরেটিক জাতীয় ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। এছাড়া বিটা বøকার জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা যায়। এসিইইনহিবিটর, ক্যালসিয়াম চ্যানেল বøকার এবং এআরবি সব ওষুধই শিশুদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা চলে। তবে তা করতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শে। এছাড়া ওজন বেশী থাকলে কমাতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। চর্বিজাতীয় খাবার ও ফাস্টফুড একেবারেই বর্জন করতে হবে। কেউ কেউ ভাবেন শুধু ওষুধ খেলেই কাজ হবে। কিন্তু নিয়ম মানাও যে চিকিৎসার অন্তর্গত তা ভুলে যান।
শিশুদের উচ্চ রক্তচাপ বিরল হলেও পাওয়া যায়। সঠিক চিকিৎসা না হলে প্রান হারাতে হতে পারে। তাই সচেতন হতেই হবে।
ষ ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।