Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চীন-ভারত-পাকিস্তান ত্রিপক্ষীয় আয়োজন : এসসিওকে ব্যবহার কতটা সম্ভব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৮, ১১:৩৯ পিএম

চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে নয়া দিল্লিতে চীনা দূতাবাস আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত লু ঝাও হুয়া বলেন, ভারত ও পাকিস্তান সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার পূর্ণ সদস্য হওয়ায় এসসিও কাঠামোর আওতায় চীন-ভারত-পাকিস্তানের নেতাদের সভা আয়োজনের একটি ব্যবস্থা হয়েছে।
চীনা রাষ্ট্রদূত শেষবার ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার কথা বলেছিলেন ২০১৭ সালের মে মাসে। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ভারতীয় স্পর্শকাতরতার বিষয়টি আমলে নিয়ে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের (সিপিইসি) নাম পরিবর্তন করা যেতে পারে। বক্তব্যটি চীনা দূতাবাসের ওয়েবসাইটে পাওয়া না যাওয়ায় ধরে নেওয়া যেতে পারে, তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যাত হয়েছে কিংবা বেইজিং বা সীমান্তজুড়ে জটিলতার সৃষ্টি করেছে। তা সত্তে¡ও রাষ্ট্রদূত লু’র এবারের বক্তব্য সম্ভবত হারিয়ে যাবে না। কারণ ত্রিপক্ষীয় আলোচনার বিষয়টি নতুন কিছু নয়। পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার দীর্ঘ দিনের বিরোধ নিষ্পত্তিতে এসসিওকে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তা নিয়ে চীন অনেকবার কথা বলেছে।
কেন চীন চায়
চীনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসসিওর প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল ‘জটিল ইস্যুগুলোর’ সমাধান করা। বিশেষ করে রাশিয়ার সাথে সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করা। তা শেষ পর্যন্ত করা গেছে। অর্থাৎ এসসিওর চেতনা হলো সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে জটিল সমস্যাগুলোর সমাধান করা। এসসিও ভারত ও পাকিস্তানকে আলোচনার জন্য কেবল সরকার প্রধানদের সভার মধ্য দিয়েই নয়, বরং বাণিজ্য ও অন্যান্যভাবেও ইস্যুগুলো নিরসনের সহায়তা করতে পারে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সিপিইসিকে সফল করতে হলে এবং আরো পৃষ্ঠপোষক পেতে হলে পাকিস্তানকে তার দায়দায়িত্বহীন বা দুর্বল রাষ্ট্রের ভাবমর্যাদাটি আড়াল করতে হবে এবং বহুপক্ষীয় সংস্থায় যে সে কাজ করতে সক্ষম, তা প্রমাণ করতে হবে। অন্য কথায় বলা যায়, এসসিও সদস্যপদের মাধ্যমে বৃহত্তর অঞ্চলে পাকিস্তানের সামাজিকীকরণ নিশ্চিত করা সম্ভব।
ভারতের এসসিওর সদস্য হওয়ার অন্যতম কারণ হলো সে মধ্য এশিয়ার সাথে তার সম্পর্ক আবার ঘনিষ্ঠ করতে চায়, বাণিজ্য সুযোগ বাড়াতে চায়। পাকিস্তানের জন্যও এই বিষয়টি প্রযোজ্য। বরং পাকিস্তান তার মুসলিম পরিচিতিসহ বিভিন্ন বিষয় কাজে লাগাতে পারলে মধ্য এশিয়ায় ভারতের চেয়ে বেশি সুবিধা নিতে পারবে।
অন্যদিকে কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্ততা করার সুযোগ পেলে চীন খুশিই হবে। এ ব্যাপারে পাকিস্তানের কোনো সমস্যা হবে না, কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও তা চাইতে পারে। তারা অতীতেও চীনকে এই বিরোধে পক্ষ হতে বলেছিল। ভারত অবশ্য এই ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের সম্পৃক্ততা না করার ব্যাপারে অনড়।
ভারতীয় পদক্ষেপ
ভারত হয়তো কাশ্মীর ইস্যুতে সীমিত না থেকে বৃহত্তর মধ্য এশিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি বিশ্লেষণ করতে চাইতে পারে। এই ব্যবস্থায় ভারতকে সিপিইসিতে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানাতে হতে পারে পাকিস্তানকে। চীনা রাষ্ট্রদূত সিপিইসির নাম বদলের প্রস্তাব করতে পারেন, কিন্তু আমন্ত্রণ আসতে হবে ইসলামাবাদ থেকে।
ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার আরেকটি ঘটনা ঘটতে পারে কারগিলসহ লাদাখের মধ্যে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের মধ্যমে কানেকটিভিটি। এতে করে জিনজিয়ান ও তিব্বতও সংযুক্ত হবে। ইতিহাস, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যিক কানেকটিভিটির আলোকে মধ্য এশিয়ার সাথে এর দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে।
চীন আরেকটি কারণে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা চাইতে পারে। সে যদি সিনিয়র সদস্য হিসেবে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার বিরোধ মীমাংসা করতে পারে তবে এশিয়ান ও বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে তার কথিত দায়দায়িত্ব আরো উজ্জ্বল করতে পারবে। এই মুহূর্তে যেভাবে সীমান্তে গোলাগুলি চলছে, হামলা ইত্যাদি হচ্ছে, তাতে করে মনে হয় না এ ব্যাপারে বড় ধরনের কিছুর সূচনা করা সম্ভব হবে। তবে প্রশ্ন হলো ভারতের প্রধানমন্ত্রী যদি চীনের সাথে সম্পর্ক যদি নতুন করে বিন্যাস করতে পারেন, তবে একই ধরনের কাজ তিনি পাকিস্তানের সাথে করতে পারবেন না কেন? সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।

 



 

Show all comments
  • দোলন ২৪ জুন, ২০১৮, ৩:৫৪ এএম says : 0
    এটা হলে খুব ভালো হবে
    Total Reply(0) Reply
  • শামীম ২৪ জুন, ২০১৮, ৫:২২ পিএম says : 0
    এই অঞ্চলের জন্য এই তিন দেশের সম্পর্ক হওয়া জরুরী
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ