বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কুরাইশী, ফটিকছড়ি থেকে : আকস্মিক বন্যায় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে দেশের বৃহত্তর জনঅধ্যুষিত উপজেলা ফটিকছড়ি। বন্যায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। প্রাণ হারিয়েছে ৩ নারী-পুরুষ। ভাঙন ধরেছে শতাধিক পয়েন্টেভেঙে একাকার হয়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে গ্রামীণ অবকাঠামো, ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে সড়ক-মহাসড়ক । ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ফটিকছড়িবাসী। এ যেন দেখার কেউ নেই।
গত ১১ জুন থেকে টানা ৩ দিনের ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ী ঢলে হঠাৎ বন্যা দেখা দেয় ফটিকছড়িতে। এতে করে ১৫টি ইউনিয়ন, ২টি পৌর এলাকা পানিজীম্মি হয়ে পড়ে। বিশেষ করে- উপজেলার বাগানবাজার, নারায়াণহাট, ভূজপুর, হারুয়ালছড়ি কিয়দাংশ, পাইন্দং, কাঞ্চননগর, ফটিকছড়ি পৌরসভা, নাজিরহাট পৌরসভা, সুন্দরপুর, সুয়াবিল, লেলাং, নানুপুর, বখতপুর, ধর্মপুর, আব্দুল্লাহপুর, জাফতনগর, রোসাংগিরী ও সমিতিরহাট ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এতে শতাধিক রাস্তা (সড়ক), ৮০টিরও অধিক মাটির ঘর, শতাধিক কাঁচাঘর, দেড় শতাধিক পুকুর ও মাছের প্রজেক্ট এবং হাজারো একর কৃষি জমির ফসল বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। উপজেলার বুক বেয়ে প্রবাহমান হালদা নদী, সর্তা, ধুরুং, গজারিয়া, বারমাসিয়া, হারুয়ালছড়ি, মন্দাকিনী, ফটিকছড়ি, লেলাং-তেলপারই ও হরিনা খালের বেড়ীবাঁধ শতাধিক পয়েন্টে ভেঙে একাকার হয়ে গেছে। এ বন্যায় গ্রামীণ অবকাঠামো, সড়ক-মহাসড়ক ভেঙ্গে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পড়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ফটিকছড়িবাসী। এ যেন দেখার কেউ নেই। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, গ্রামীণ সড়ক, বিভিন্ন খালের বেড়িবাঁধ ভেঙে একাকার থাকায় অধিকাংশ এলাকার সাথে সড়ক যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপজেলার তলদেশ খ্যাত সমিতিরহাটে এখনো পানি জমে আছে।
প্রসঙ্গত, পার্বত্য খাগড়াছড়ি’র রামগড়-মানিকছড়ি উপজেলার পাহাড়ী ঢল হালদা নদী বয়ে, মহালছড়ি-লহ্মীছড়ি উপজেলার পাহাড়ী ঢল ধুরুং খাল বয়ে এবং পার্বত্য খাগড়াছড়ি’র লহ্মীছড়ির দক্ষিণাঞ্চলীয় পাহাড়ী ঢল ও পার্বত্য রাঙ্গামাটি’র কাউখালীসহ পাশর্^বর্তী উপজেলা সমূহ’র পাহাড়ী ঢল সর্তাখাল বয়ে এবং ফটিকছড়ি’র পাহাড়ী অঞ্চলের পানি ছোট-খাট খাল বয়ে হালদী নদীতে মিলিত হয়ে ঢল আকারে নেমে পুরো ফটিকছড়িকে প্রতি বছরই তছনছ করে দেয়। ধ্বংস করে দেয় সড়ক-মহাসড়ক এবং লোকালয়। কিন্তু সরকার অন্যান্য অঞ্চলের সামান্য বন্যাকে গুরুত্ব দিলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাদদেশ তথা ভাটি অঞ্চল ফটিকছড়ি’র বন্যাকে কখনোই গুরুত্ব দেয়নি। ফলে জনপদের পর জনপদ নদী-খালে বিলীন ধ্বংসলীলায় নিমজ্জিত হয়ে চলেছে। সরকার হালদা নদী খনন করেনি কখনো। পৃথিবীর বৃহত্তম প্রকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র ‘হালদা নদী’ বরাবরই অরক্ষিত। নেই তার বৃহৎ অংশ জুড়ে বেড়িবাঁধও।
এ ব্যাপারে ফটিকছড়ি’র এমপি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, বিগত সময়ের বন্যার চেয়ে এবার বন্যাটি হয়েছে আকস্মিক এবং ভয়ানক। এ ধরণের বন্যা বয়সে কখনো দেখিনি। এবারের বন্যায় ফটিকছড়িতে ক্ষতির ব্যাপকতা এমন; তা ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
অভিজ্ঞ মহলের প্রশ্ন- এত ক্ষয়-ক্ষতির পরও কেন দুর্যোগ মন্ত্রী ফটিকছড়ি গেলেন না। কত পরিমাণ ক্ষতি হলে তিনি ফটিকছড়ি যাবেন। কেন সংসদে ফটিকছড়ি’র বন্যার চিত্র ভেসে উঠে না?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।