বাড়িতেই ফাইনাল দেখবেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কাতারে
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে কাতারে যাচ্ছেন না আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। তিনি জানান, আজ
স্পোর্টস ডেস্ক : এবারই প্রথম বিশ্বকাপে ব্যবহৃত হচ্ছে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি। নতুন এই প্রযুক্তি কতটুকু ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারবে, তা নিয়ে সন্দেহ কিছুটা ছিলই। কিন্তু গ্রæপ পর্বে সব দলের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ শেষ হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, নতুন এই প্রযুক্তি বেশ ভালোভাবেই প্রভাব ফেলেছে ম্যাচের ফলাফলের উপর।
ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর এই বিশ্বকাপেই গ্রæপ পর্বের প্রথম রাউন্ড শেষে ম্যাচ প্রতি সবচেয়ে বেশি পেনাল্টি, সবচেয়ে কম অফসাইড ও সেট পিস থেকে সবচেয়ে বেশি গোলের ঘটনা ঘটেছে। শুধু তাই নয়, ৩২ বছরের মধ্যে ম্যাচপ্রতি সবচেয়ে কম লাল কার্ডও দেখানো হয়েছে এই বিশ্বকাপে।
এবারের বিশ্বকাপে সব দলের একটি করে ম্যাচ শেষ হওয়ার পর বিল্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গ্রæপ পর্বের প্রথম রাউন্ডের ১৬ ম্যাচ শেষে পেনাল্টির ঘটনা ঘটেছে ৯ টি, অর্থাৎ ম্যাচপ্রতি ০.৫৬ টি করে পেনাল্টি, যা কি না ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর ম্যাচপ্রতি সবচেয়ে বেশি পেনাল্টির রেকর্ড। এর মধ্যে ৩ টি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ভিএআরের সহায়তায়, যার মধ্যে দুটি আবার ছিল ম্যাচের ফল নির্ধারক। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভিএআরের সহায়তায় পাওয়া পেনাল্টির কল্যাণেই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল ফেভারিট ফ্রান্স। একইভাবে পাওয়া পেনাল্টির সাহায্যে দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়েছে সুইডেন। ভিএআরের ব্যবহারের কারণে পেনাল্টির সিদ্ধান্তগুলো যে আরও স্বচ্ছ ও পরিষ্কার হচ্ছে তা বলাই যায়।
এবার ম্যাচপ্রতি অফসাইডের সংখ্যাও বেশ কমেছে। এখনও পর্যন্ত ম্যাচপ্রতি অফসাইডের সংখ্যা ২.৮১ টি। এর আগে ১৯৬৬ বিশ্বকাপে টুর্নামেন্টের এই পর্যায়ে এসে সর্বনিম্ন ৩.১৩ টি অফসাইড ধরার নজির ছিল। এবার সেট পিস থেকে গোল করার হারও বেড়েছে। এবার গ্রæপ পর্বের প্রথম রাউন্ডের ১৬ ম্যাচ শেষে সেট পিস থেকে ৫৫.৩% গোল হয়েছে, ব্রাজিল বিশ্বকাপের চেয়ে যা ২৫% বেশি। ভিএআর থাকার কারণে রেফারিরা এবার আরও বেশি নির্ভুলভাবে ফাউলগুলো ধরতে পারছেন, ফলে দলগুলো ফ্রি কিক পাচ্ছে বেশি, আর সেগুলো থেকে গোলও হচ্ছে বেশি। ফ্রি কিক থেকে গোলের কল্যাণেই পর্তুগাল, সার্বিয়ার মতো দলগুলো পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। এছাড়া এবার লাল কার্ডের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। গ্রæপ পর্বের ১৬ ম্যাচ শেষ লাল কার্ডের ঘটনা ঘটেছে মাত্র একটি, ১৯৮৬ বিশ্বকাপের পর যা সর্বনিম্ন।
এতসব কিছুকে কাকতালীয় নয়, বরং ভিএআরের প্রভাবই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। সাবেক ফিফা রেফারি ও প্রিমিয়ার লিগ রেফারি প্রধান কেইথ হ্যাকেট বলছেন, ‘এসব পরিসংখ্যানে আমি মোটেও বিস্মিত নই। দল, খেলোয়াড় ও ম্যানেজারদের খুবই কঠিনভাবে তাদের আচরণ সম্পর্কে সচেতন করে দেয়া হয়েছে, এছাড়া ভিএআর এর ভয়ও আছে কিছুটা। তারা জানে, সারা মাঠে ৩৩ টি ক্যামেরা তাদের প্রতিটি মুভমেন্টকে পর্যবেক্ষণ করছে। এছাড়া রেফারির আরও চারজন সহকারী যেকোনো সময় তাকে সহায়তা করার জন্য মস্কোতে ভিএআর রুমে অপেক্ষা করছে। খেলোয়াড়দের অবচেতন মনে এগুলোর একটা প্রভাব পড়েই, তাদের আচরণের উপর প্রভাব পড়ে। পেনাল্টির ক্ষেত্রে ভিএআর ব্যবহারের ইতিবাচক দিকই দেখতে পাচ্ছি আমরা।’
তবে ভিএআর নিয়ে যে একেবারেই বিতর্ক হয়নি সেটাও কিন্তু নয়। তিউনিশিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের দুইটি পেনাল্টির আবেদনে কেন ভিএআর ব্যবহার করা হলো না, সেটি নিয়ে টুর্নামেন্টের মাঝ পর্যায়ে সভায় বসবে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ব্রাজিলের মিরান্ডার উপর ফাউলের ঘটনায় কেন ভিএআর ব্যবহার করা হলো না, সেটির ব্যাখ্যাও চেয়েছে ব্রাজিল। তবে সব মিলিয়ে ভিএআর এখনও পর্যন্ত বেশ ইতিবাচক প্রভাবই ফেলেছে, পরিসংখ্যান এমনটাই বলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।