দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
মুসলিম মিল্লাতে ঈদের সূচনা কিভাবে হয়েছে তার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেছেন হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.)। তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মদীনায় উপস্থিত হলেন, তখন তিনি দেখতে পেলেন মদীনাবাসীরা (যাদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক লোক পূর্বেই ইসলাম গ্রহণ করেছিল) দুইটি জাতীয় উৎসব পালন করছে। আর এ উপলক্ষে তারা খেল-তামাশায় আনন্দ অনুষ্ঠান করছে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন : তোমরা এই যে দুইটি দিন জাতীয় উৎসব হিসেবে উদযাপন করো এর মৌলিকত্ব ও তাৎপর্য কী? তারা বলল, ইসলামের পূর্বে জাহিলিয়াতের যুগে আমরা এই উৎসব এমনই হাসি-খেলা ও আনন্দ উৎসবের মাধ্যমেই উদযাপন করতাম। এখনো পর্যন্ত তাই চলে আসছে। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের এই দুটি উৎসব দিনের পরিবর্তে উহা হতে অধিক উত্তম দু’টি আনন্দের দিন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা দান করেছেন। অতএব পূর্বের অবাঞ্ছিত উৎসব পরিহার করে তৎপরিবর্তে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা এই দু’টি দিনের নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানাদি পালন করতে আরম্ভ করো। (মুসনাদে আহমাদ, সুনানে আবু দাউদ)।
এভাবেই প্রিয় নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) জাহেলিয়াতের জমানার ‘নীরোজ’ ও ‘মেহেরজান’ নামক দু’টি উৎসবের মূলোৎপাটন করলেন এবং মুসলিম মিল্লাতের দু’টি জাতীয় উৎসবের শুভ সূচনা করলেন। এর একটি হলো ঈদুল ফিতর আর অপরটি হলো ঈদুল আজহা। ঈদুল ফিতর হচ্ছে একাধারে একটি মাসকাল ধরে একনিষ্ঠভাবে রোজা পালন ও কৃচ্ছ্র সাধনের পর উহা অবসানের আনন্দোৎসব। আর ঈদুল আজহা হলো হজ করার পর আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু জবেহ করার অনুষ্ঠান। আর এই দু’টি আমল রোজা ও হজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। এতদুভয়ে রোজা ও হজ পালনকারীদের সার্বিক কল্যাণের জন্য ও মুসলিম উম্মাহর জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়। একই সাথে উৎসব আনন্দের মূল উৎস হলো সমবেতভাবে ইমামের পেছনে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা ও তাঁর খুৎবাহ শ্রবণ করা। এর মাধ্যমে মুসলিম মিল্লাতের ঐক্য সংহতি, ঈমান ও শৌর্য-বীর্যের প্রাচুর্য দেখা দেয় এবং তারা একান্তভাবে আল্লাহ পাকের নিকট আত্মসমর্পিত বান্দাহ হিসেবে পরিচিত লাভে ধন্য হয়ে থাকেন। আমীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।