দেশে দেশে রোজার উৎসব
মাহে রমজান আরবী নবম মাসের নাম। চাঁদের আবর্তন দ্বারা যে এক বৎসর গণনা করা হয়,
কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তাদের শিখিয়েছেন ভাষা। (সূরা আর রাহমান:৩-৪) উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানব সৃষ্টির কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি ভাষা শিক্ষার বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, ভাষা ও মানুষ একে অপরের পরিúূরক। ভাষা না থাকলে মানুষ বিকল। উক্ত আয়াত এ কথারও ইঙ্গিত বহন করে যে, আল্লাহ তাআলা অন্য কেনো প্রাণীকে মানুষের মতো ভাষা দান করেননি। এ ক্ষেত্রে মানব অন্য সকল প্রাণী থেকে আলাদা। তাই এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, পৃথিবীর বুকে যত ভাষাই চালু আছে, সবগুলোই আল্লাহ তাআলার এক অসাধারণ ও অমূল্য নিয়ামত। যে নেয়ামত অন্য কোনো প্রাণীকে দেওয়া হয়নি এবং যার কোনো বিকল্প নেই। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে যত নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন সকলকেই স্বজাতি ও এলাকার ভাষা দিয়েই প্রেরণ করেছেন। এভাবে সকল আসমানী কিতাবও যে জাতির জন্য নাযিল করেছেন সে জাতির ভাষাতেই নাযিল করেছেন। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- ‘আমি সকল রাসূলকেই তাঁদের স্বজাতির ভাষাভাষী করেই প্রেরণ করেছি, যেন তাঁরা তাদেরকে আল্লাহর হুকুম-আহকাম পরিষ্কারভাবে বুঝাতে পারেন।’ (সূরা ইবরাহীম: ৪) উক্ত আয়াতও মাতৃভাষার যথাযথ গুরুত্ব দানের বার্তা বহন করে। তাই এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, ইসলামের দৃষ্টিতে প্রত্যেক ভাষারই গুরুত্ব সীমাহীন এবং এর স¦যতœ ও নিয়মতান্ত্রিক চর্চা আমলে ছালেহ বা নেক আমল বলে গন্য। সেমতে ইসলামের দৃষ্টিতে আমাদের মাতৃভাষা বাংলার গুরুত্বও সীমাহীন এবং এর চর্চায় আত্মনিয়োগ করাও পুণ্যের আমল বলে বিবেচিত হবে। তাই একে অবহেলা করা বা গুরুত্বহীন মনে করার কোনো সুযোগ আমাদের নেই; বরং একে স্থান দিতে হবে কুরআন-হাদীস, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও জান্নাতের ভাষা- এক কথায় দীনী ভাষা আরবীর পাশেই। অতএব বাংলা ভাষা শিক্ষা করা সকলের কর্তব্য; বরং কিছু দীনদার মানুষের তো এর জন্য নিবেদিত প্রাণ হওয়া অপরিহার্য। যেমন বলেছেন শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ গবেষক ও প্রবাদ পুরুষ আল্লামা সাইয়ীদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.। তিনি বলেছেন, ‘বাংলা ভাষার সাধারণ চর্চা এখন আর যথেষ্ট নয়। এ কাজ সবাই করবেন। এখন কিছু মানুষকে বাংলা ভাষার কর্তৃত¦ হাতে নেয়ার জন্য প্রাণপণ সাধনায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। এটা যেমন আলিমদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য জরুরী, তেমনি বাংলা ভাষাভাষী মুসলমান ও খোদ বাংলা ভাষার জন্যও অপরিহার্য। বাংলা ভাষার শোধন, সংস্কার ও সমৃদ্ধির জন্য এ কাজ অপরিহার্য। কেননা দীর্ঘ দিন যাবত বাংলা ভাষার কতৃত্ব ইসলাম বিরোধী শিবীরের হাতে। যাদের চিন্তা ও চেতনা এবং জীবন ও চরিত্র কলুষমুক্ত নয়; বরং তারা বিভিন্ন ধরণের আকীদা ও চিন্তাগত ভ্রান্তিতে আক্রান্ত। তাদের লালনে এ ভাষাতেও প্রবেশ করেছে কলুষ ও চিন্তার বিষবাষ্প। এ জন্য বাংলা ভাষায় রুহ ও রুহানিয়াত ও প্রাণ ও প্রাণময়তা সৃষ্টি ও সঠিক পরিচর্যার জন্য এমন কিছু মানুষকে প্রাণপণ সাধনায় আত্মনিয়োগ করতে হবে, যারা সমুন্নত চিন্তা-চেতনা এবং পবিত্র রুচি ও আদর্শের অধিকারী। বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চায় কোনো পুণ্য নেই, যত পুণ্য সব আরবী আর উরদুতে, এ ধারণা বর্জন করুন। এ ধারণা নিছক মূর্খতা। তিনি আরো বলেছেন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে ইসলাম বিরোধীদের রহম-করমের উপর ছেড়ে দিবেন না। ‘ওরা লিখবে আর আপনারা পড়বেন’ এ অবস্থা কিছুতেই বরদাশত করা উচিৎ নয়।’ (১৯৮৪ সালের ১৪ই মার্চ জামিয়া ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জ প্রাঙ্গণে বিশিষ্ট আলেম-উলামা, বুদ্ধিজীবী ও ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশে প্রদত্ত ভাষণ) তবে আক্ষেপের ব্যাপার হলো, দীর্ঘকাল খোদার সৃষ্টি আমাদের এ ভাষাটি মুসলামনদের অবহেলার শিকার ছিল। তখন তার দখল ছিল হিন্দু দাদা-বাবুদের হাতে। ফলে সংস্কৃতের দানা-পানি খাইয়ে তার যেমন চেহারা বদলে দিয়েছে দেব-দেবীর পূঁজারী দাদা-বাবুরা, তেমনি এর চর্চা শিকার হয়েছে ভয়াবহ সংকীর্ণতা ও নীচুতার। গল্প, কবিতা, উপন্যাসসহ সাহিত্যের কোনো দর্পণেই বিম্বত হতে পারেনি ইসলাম ও মুসলমানের যাপিত জীবন। আসল কথা হলো, এ উপমাহাদেশে বিভিন্ন কারণে উরদু, ফারসীর বিশাল প্রভাবের ফলে এক সময় বাংলা ভাষা ও সাহিত্য চর্চার দিকে আলেম সমাজ ও সাধারণ দীনদার শ্রেণী দৃষ্টি দিতে পারেননি। তবে আশার কথা হলো, ১৯৪৭ এ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হলে মুসলমান ও আলেম-উলামাগণ এ দিকে নজর দিতে শুরু করেন। ফলে তাদের লিখিত ও সম্পাদিত মাসিক, সাপ্তাহিক, সাহিত্য চর্চার ম্যাগাজিন আর কোনো উপলক্ষ্যে প্রকাশিত স্মারকের সংখ্যার তালিকা বিস্ময়কর। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কোথাও না কোথাও নতুন বই প্রকাশিত হচ্ছে। খালেস দীনী স্টাইলে খালেস দীনী বিষয়ে যেমন লেখা হচ্ছে, তেমনি লেখা হচ্ছে আধুনিক স্টাইলে ধর্মীয় বিষয় বা সাধারণ বিষয় নিয়ে। ছড়া, কবিতা, গল্প, উপন্যাস সবই ঝরছে কওমী প্রসবণ থেকে। কওমী ক্যাম্পাসে এরই মধ্যে গড়ে উঠেছে এমন একটি শক্তিশালী কাফেলা। ফলে ইসলামের বিমল গায়ে কেউ মলের আঁচড় দিয়ে নিরাপদে পালিয়ে যাবে তা আর এখন ভাবা যায় না। এই মিছিল প্রতিদিনই বড় হচ্ছে। হচ্ছে দিঘল। সত্যি কথা কি, আমাদের আত্মার স্পন্দন, মানব ও মানবতার অহঙ্কার হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দীন প্রচারের যে মহান মিশন নিয়ে আলো আধারের দুনিয়ায় এসেছিলেন, সে জন্য তিনি স্বজাতির ভাষাকেই তুলে নিয়েছিলেন অব্যর্থ অস্ত্র রুপে। এ কথাটি উম্মতে মুহাম্মদীর ভুলে গেলে চলবে না। এ কথাটিও ভুলে গেলে চলবে না যে, ভাষার বিশুদ্ধতা কেবল লেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং বলার ক্ষেত্রেও তা সমভাবে প্রযোজ্য। একদম অক্ষর থেকে শুরু করতে হবে। অক্ষরগুলো বিশুদ্ধভাবে উচ্চারণ করতে হবে। শব্দ ও বাক্যের ব্যবহার বিশুদ্ধ ও ব্যকরণসম্মত হতে হবে। পঠনের নিয়ম-কানুন রক্ষা করতে হবে। এটা যেভাবে ভাষার সৌন্দের্যর দাবী, তেমনি ইসলামেরও দাবী। এক হাদীসে আছে, বনী আমের গোত্রের জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ঘরে প্রবেশের অনুমতি চেয়ে বললেন, ‘আ-আলিজু?’ প্রবেশ অর্থে এই শব্দের ব্যবহার আরবী ভাষায় আছে, তবে অনুমতি প্রর্থনার ক্ষেত্রে তা প্রমিত শব্দ নয়। এ ক্ষেত্রে প্রমিত শব্দ হচ্ছে, ‘আ-আদখুলু’? তাই তিনি খাদেমকে বললেন, তুমি বের হয়ে গিয়ে তাকে অনুমতি প্রর্থনার নিয়ম শিখিয়ে দাও। তাকে বল, আপনি এভাবে অনুমতি প্রর্থনা করুন, আসসালামু আলাইকুম, আ-আদখুলু? লোকটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কথা শুনে বললেন, আসসালামু আলাইকুম, আ-আদখুলু? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে প্রবেশের অনুমতি দিলেন। আর তিনি প্রবেশ করলেন। (আস সুনানুল কুবরা, নাসাঈ, হাদীস:১০০৭৫; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস: ২৩১২৭; শুআবুল ঈমান, হাদীস: ৮৪৬৫) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এভাবে শব্দ প্রয়োগ ঠিক করেছেন। অথচ তা কোনো যিকর-আযকার বা ইবাদত ছিল না। সহীহ মুসলিমে তো কিতাবুল আলফায (শব্দাবলীর অধ্যায়) শিরোনামে একটি স্বতন্ত্র অধ্যায়ই আছে। সে অধ্যায়ে বিভিন্ন হাদীসে তিনি শব্দ প্রয়োগ সংশোধন করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. ও আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বার রা. এর বর্ণনায় এসেছে , কথাবার্তায় ভাষাগত ভুল-ক্রটি হলে তাঁরা সন্তানদের শাসন করতেন। (শুআবুল ঈমান, বাইহাকী: ২/২৫৮; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা: ৫/২০৯, কিতাবুল আদব) এ সকল বর্ণনা থেকে প্রতিয়মান হয় যে, দৈনন্দিন জীবনেও একজন মুমিনের ব্যবহারিক ভাষা বিশুদ্ধ ও শালিন হতে হবে। এটা দীনী ভাষার প্রসঙ্গ নয়; মাতৃভাষার প্রসঙ্গ। অতএব মাতৃভাষা যাই হোক, তা বিশুদ্ধভাবে লেখা, বলা ও পাঠ করা ইসলামের এক অনন্য বৈশিষ্ট। তবে এ ভাষা ও সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহ সমর্থিত বেশ কিছু মূলনীতি আছে। সেগুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে। নতুবা এই ভাষা ও সাহিত্য চর্চা একজন মুমিনকে করে তুলতে পারে খোদাদ্রোহী। বিনাশ করতে পারে ঈমান ও আমলের মহাদৌলতকে। নি¤েœ আমরা কয়েকটি মূলনীতি উল্লেখ করলাম। ১. ভাষা চর্চার ক্ষেত্রে সর্ব প্রথম নিয়তকে বিশুদ্ধ করা এবং এতে দীনী প্রেরণা জাগ্রত রাখা। মুমিনের সকল কাজেই নিয়ত বিশুদ্ধ হওয়া জরুরী। নিয়ত বিশুদ্ধ না হলে সে আমল আল্লাহর দরবারে কবূল হয় না। সাহাবী উমর ইবনুল খাত্তাব রা. বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, সকল আমল নির্ভর করে নিয়তের উপর। মানুষ যা নিয়ত করে তাই সে পায়। (বুখারী, হাদীস: ১) নিয়ত বিশুদ্ধতার অর্থ হলো কেবল আল্লাহর জন্য হওয়া। পার্থিব কোনো হীন স্বার্থে নয়; বরং অল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, দীনী প্রয়োজন পূরণ, পরকালের সুখ-শান্তি ও মর্যাদা লাভ, মানুষের খেদমত ইত্যাদি সুন্দর সুন্দর নিয়ত ও প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে ভাষা ও সাহিত্য চর্চা করতে হবে। ২. ভাষাকে মুসলমান ও মানুষে মানুষে বিভক্তির কারণ না বানানো এবং ভাষা, বর্ণ, গোত্র ইত্যাদিকে মর্যদার মাপকাঠিও না বানানো। কারণ মর্যদার মাপকাঠি হচ্ছে তাকওয়া। কুরআম মাজীদে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর নিকট সর্বাধিক সম্মানের অধিকারী সে, যে সর্বাধিক তাকওয়ার অধিকারী।’ (হুজুরাত: ১৩) তাই ভাষা, বর্ণ, ভূখন্ড, গোত্র ইত্যাদিকে মর্যাদা ও সম্মানের মাপকাঠি বানানো যাবে না। এ সবের ভিত্তিতে মুসলামান ও মানুষে মানুষে বিভক্তির দেওয়াল টানা যাবে না। ইসলামের দৃষ্টিতে তা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। ৩. যে আল্লাহ মানুষকে ভাষা দান করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে, তাঁর কিতাব, তাঁর রাসূল ও তাঁর দীনের বিরুদ্ধে ভাষাকে ব্যবহার না করা। এটা করলে তা হবে নিয়ামতের নাশুকরী ও নিয়ামতদাতার প্রতি অকৃতজ্ঞা। আর অকৃতজ্ঞতার পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। কুনআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে, তোমরা যদি শুকরিয়া আদায় কর, তাহলে আমি তোমাদের নিয়ামত আরো বৃদ্ধি করে দিব আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, (তাহলে জেনে রেখো, আমি তোমাদেরকে আযাবে নিপতিত করব আর) আমার আযাব বড় কঠিন। (ইবরাহীম: ৭) ৪. অশ্লীলতা ও অশালীনতা বিস্তারে ভাষাকে ব্যবহার না করা। কারণ অশ্লীলতার বিস্তার ও প্রসার ইসলামে নিষিদ্ধ ও এর শাস্তি বড় কঠিন। কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘যারা মুমিনদের মাঝে অশ্লীলতার বিস্তার ও প্রসারকে পছন্দ করে, তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি।’ (নূর: ১৯) সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উমরের বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে জাতির মাঝে অশ্লীলতা প্রকাশ্য রুপ লাভ করে, সে জাতি মহামারিতে আক্রান্ত হয়।’ (ইবনে মাজা: হাদীস: ৪০১৯) ৫. ভাষা চর্চায় নিমগ্ন হয়ে অপরিহার্য হকসমূহ নষ্ট না করা। যে কোনো কাজের সফলতার জন্য তাতে নিমগ্নতা জরুরী। এতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু তা যদি এমন পর্যায়ে পৌছে যে, সারারাত সাহিত্য চর্চা করে ফজরের নামাজ কাযা করে দিল কিংবা বাবা-মার খেদমত, সন্তানের তরবিয়াত, স্ত্রীর অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে গাফেল হয়ে গেল, তাহলে শরীআত এটা সমর্থন করে না; বরং এভাবে সাহিত্য চর্চাকে ইসলাম নিষেধ করে। ৬. আল্লাহর একত্ববাদ পরিপন্থী শিরকী মর্মের বার্তা বাহক বা ইসলামী স্বাতন্ত্র্য বিনাশকারী শব্দ-ভাষা পরিহার করা। ৭. এভাবে স্বতন্ত্র ইসলামী জাতিসত্তা ও চিন্তাচেতনা বিলোপকারী শব্দ ও পরিভাষা এড়িয়ে চলা। যেমন ব্রক্ষা-, রাহু, সূর্যসন্তান, লক্ষ্মী, অগ্নিপুত্র ইত্যাদি শব্দ। ৮. সর্বপোরি এ ভাষা ও সাহিত্যর মাধ্যমে বাতিলকে রুখে দেওয়া এবং আল্লাহর দীন প্রসার ও বিস্তারে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। বর্ণিত নীতিমালা আর ঐশি চেতনায় প্রজ্জোল ঈমানী মশাল নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে আমাদের ভাষা ও সাহিত্য চর্চার এই পবিত্র ময়দানে। এই হোক সকল মুমিনের দীপ্ত অঙ্গিকার। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন।
লেখক: সিনিয়র মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া মাখযানুল উলূম, তালতলা, মোমেনশাহী
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।