রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুর। নীলফামারী জেলার একটি উপজেলা শহর। তারপরও সৈয়দপুরের তৈরি লাচ্ছাসেমাইয়ের জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি গোটা উত্তরজনপদে। তাই আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে সৈয়দপুরে যত্রতত্র সেমাই তৈরির ধুম পড়েছে। সৈয়দপুর শহরের পাড়ামহল্লা ছাড়াও এর উপকণ্ঠে ও প্রত্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে সেমাই তৈরি কারখানা। আর এসব কারখানায় অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর ও নোঙরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই। আর অধিক মুনাফার লোভে এসব সেমাই তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের উপকরণ। অথচ এসব দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত সংশ্লিষ্টরা দায়সারাভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঈদুল ফিতর অত্যাসন্ন। আর ঈদ উৎসবে প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের নতুন জামাকাপড়ের পাশাপাশি অপরিহার্য খাবার সেমাই। বিশেষ করে লাচ্ছাসেমাই। আর গোটা উত্তরাঞ্চল জুড়ে রয়েছে বাণিজ্যিক শহর সৈয়দপুরের তৈরি লাচ্ছাসেমাইয়ের জনপ্রিয়তা ও খ্যাতি। পবিত্র রমজান এলেই এখানে সেমাই তৈরির কাজ শুরু হয়। আর এ সেমাই তৈরি কাজ চলে গোটা রমজান মাস জুড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন্ন ঈদকে টার্গেট করে সৈয়দপুর শহরে ও আশপাশে এলাকায় শতাধিক অবৈধ মৌসুমি লাচ্ছাসেমাই কারখারা গড়ে উঠেছে। অবৈধ এ সব কারখানায় দিনরাত চলছে অনিরাপদ লাচ্ছাসেমাই তৈরির কাজ। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে, সেমাই তৈরির কাজও ততই তোড়জোড়ভাবে চলছে। এসব তৈরি লাচ্ছাসেমাই খোলা অবস্থায় এবং বিভিন্ন নামীদামি কোম্পানির লেভেল লাগিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। অথচ গেল কয়েক বছর আগেও শুধু সৈয়দপুর শহরের গুটিকয়েক বেকারি কিংবা কিছু ফ্লাওয়ার মিল মালিক বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নিয়ে সেমাই তৈরি করে বাজারজাত করতেন। কিন্তু বর্তমানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ধুমছে লাচ্ছাসেমাই তৈরি করে দেদার বিক্রি করছেন। এতে করে বৈধ লাচ্ছাসেমাইয়ের কারখানার মালিকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। কারণ বৈধ মালিকরা বিএসটিআই ও পরিবেশ অধিদফতর থেকে লাইসেন্স নিয়ে সরকারি সব রকম ভ্যাট, ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করছেন। কিন্তু মৌসুমি ব্যবসায়ী সে সবের কোনো কিছুরই ধারে কাছে নেই। তারা রমজান এলেই নেমে পড়ে সেমাই তৈরিতে। কারণ আগে থেকে তারা পরিকল্পনা করে থাকে এবং সেভাবে সবরকম প্রস্তুতি নেয়। তবে এবারে মৌসুমি ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসার কৌশল অনেকটাই পাল্টিয়েছে। তারা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দেয়াসহ সকল জুটঝামেলা এড়ানোর জন্য শহরের উপকণ্ঠে গিয়ে লাচ্ছা সেমাই তৈরি করছেন। পরবর্তীতে এসব সেমাই সেখান থেকে রিকশাভ্যানে কিংবা পিকআপে করে শহরে আনা হচ্ছে। সৈয়দপুর শহরের কাজীহাট, পুরাতন বাবুপাড়া, বাঁশবাড়ি, হাতিখানা, নিয়ামতপুর, মুন্সিপাড়া গোলাহাটসহ উপকণ্ঠে দেবীগঞ্জ, ঢেলাপীরহাট, কামারপুকুর, চিকলীবাজার, চৌমুহনীবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় এ সব লাচ্ছাসেমাই তৈরি কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। সৈয়দপুর শহরেও কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গড়ে তুলেছে এসব কারখানা। প্রতি বছরই মৌসুমি ব্যবসায়ী এ ব্যবসায় জড়িত হন। এবারেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। কারণ ঈদকে সামনে রেখে এ ব্যবসায় লাভ অধিক। কিন্তু তাদের কারণে বৈধ লাচ্ছাসেমাই তৈরির কারখানার মালিক ঝুঁকির মধ্যে ব্যবসা করছেন।
সৈয়দপুর শহরের শহীদ ডা. শামসুল হক সড়কের মেসার্স ডায়মন্ড কনফেকশনারির স্বত্বাধিকারী মো. আখতার সিদ্দিকী পাপ্পু জানান, বেকারি আমাদের আদি ব্যবসা। বংশ পরম্পরায় আমরা এ ব্যবসায় জড়িত রয়েছি। তাই আমরা বিএসটিআই ও পরিবেশ অধিদফতর থেকে অনুমোদন নিয়ে সরকারকে সকল প্রকার ভ্যাট, ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করি। ফলে আমাদের উৎপাদন খরচ বেশি পড়ছে। আর তাই আমাদের উৎপাদিত সেমাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কিন্তু মৌসুমি ব্যবসায়ীদের নেই কোনো অনুমোদন। দিতে হচ্ছে না সরকারি ভ্যাট, ট্যাক্স। তারা সেমাই তৈরিতে ব্যবহার করছে নিম্নমানের উপাদান-সামগ্রী। ফলে তারা যে দামের বেচুক না কেন তাদের লাভ বেশি টিকছে। কিন্তু আমাদের সারা বছরই ব্যবসা করতে হয়। আমাদের একটি স্থায়ী ঠিকানা রয়েছে। যেখানে বসে আমরা সারা বছরই সেমাই ও বেকারি মালামাল বিক্রি করি। আমাদের সেমাই খারাপ হলে ক্রেতারা সরাসরি আমরা প্রতিষ্ঠানে এসে অভিযোগ দিতে পারেন। কিন্তু বাজারে যে সব খোলা লাচ্ছাসেমাই বিক্রি হচ্ছে তাদের ধরার কোনো জায়গা নেই। তাই তারা নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি লাচ্ছাসেমাই কম দামে বিক্রি করেও অধিক মুনাফা লুটছে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, সৈয়দপুর শহরে ১৮ থেকে ২০টির মতো লাচ্ছাসেমাই কারখানার বৈধ কাগজপত্র ও অনুমোদন রয়েছে। অথচ এখানে শতাধিক মৌসুমি ব্যবসায়ী যেনতেনভাবে লাচ্ছাসেমাই তৈরি করে বাজারজাত করছে বলে দাবি ওই সূত্রের।
সৈয়দপুর উপজেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর মো. অহিদুল হক জানান, রমজানের শুরু থেকে হোটেলগুলোর ইফতারি এবং সেমাই কারখানার সেমাই তৈরি ও বাজারজাতকরণে কঠোর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।