২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
প্রসাধনে সস্তার লিপস্টিক সুন্দরী করলেও খাদ্যনালী এবং মূত্রাশয়ের ক্যান্সার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। লিপস্টিকের রং যত উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় হবে ততই মহিলাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। যিনি সুন্দরী হওয়ার জন্য যত বেশি নিম্নমানের লিপস্টিক ব্যবহার করেন তার তত বেশি পাকস্থলী ও মূত্রনালীর নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার পুরুষরাও সাবধান, সঙ্গিনীর কমদামি লিপস্টিক মাখা ঠোঁটে বেশি চুমু খেলে একই রোগে আক্রান্ত হওয়ার জোর সম্ভবনা থাকছে। লিপস্টিকই একমাত্র প্রসাধন যা সরাসরি মুখের ভিতর এবং শরীরে প্রবেশ করতে পারে অনায়াসে। লিপস্টিকের উপাদানে মিশে আছে প্যারাফিন ওয়াক্স, স্যাকারিন, পিভিসি প্লাস্টিক ও খনিজ তেল। লিপস্টিকের নানা রং তৈরির জন্য প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো টাইটানিয়াম অক্সাইড, ব্রোমাইড এবং ইথানল ও প্রোপানল যৌগ ব্যবহার করে। ঠোঁট রং করতে যত দামি ও নামি কোম্পানিই হোক না কেন, সবাই-ই কম বেশি এমন সব ভয়াবহ রাসায়নিক জটিল যৌগ ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। বিশেষ করে স্থায়ী রং তৈরির ক্ষেত্রে ক্রোমিয়াম, ব্রোমাইড ও সিসা ব্যবহার করতে বাধ্য হয় প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো। চকচকে রং করার জন্য নিম্নমানের লিপস্টিক কোম্পানিগুলো আর্সেনিকও ব্যবহার করে থাকে। লিপজেল বা লিপগ্লস তৈরির ক্ষেত্রে পেট্রোপণ্যের উপজাত ব্যবহার করা হয়। বাজারে যতগুলো বেদনাউপশম মলম বা জেলি পাওয়া যায় তার অধিকাংশই প্রেট্রোলিয়াম-প্রোডাক্ট।
ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরবিদ্যা বিভাগের গবেষকরা প্রায় তিন বছর ধরে বিশ্বজুড়ে সমীক্ষা চালিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন, মহিলাদের পাকস্থলী, অন্ত্র এবং মূত্রনালীর ক্যান্সারের একটা বড় অংশের জন্য দায়ী অতিরিক্ত প্রসাধন ব্যবহার। এক্ষেত্রে ওষ্ঠ-রঞ্জনী যে নারীর কাছে অনেক বেশি বিপজ্জনক তা স্পষ্ট হয়েছে নিউইয়র্ক স্টেট হাসপাতালের চিকিৎসকদের দুই দশকের গবেষণায়। লিপস্টিক জিভে লাগলে যে মিষ্টি লাগে তার মূল কারণ রঙের সঙ্গে মিশে থাকা স্যাকারিন। কিন্তু স্যাকারিন ধারাবাহিকভাবে অন্ত্রে পৌঁছলে মূত্রাশয়ে ক্যান্সার হতে পারে। ওষুধের ক্ষেত্রে কী কী উপাদানে তৈরি তা লেবেলে লেখা থাকে। কিন্তু প্রসাধন সামগ্রীর গায়ে তেমন কিছুই লেখা থাকে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, কসমেটিক তৈরিতে ইথানল ও প্রপানল ছাড়াও পেট্রোলিয়ামজাত সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। এর ফলে ইউরিনারি ক্যান্সার হয়ে থাকে। অ্যাসবেস্টস পাউডার ফুসফুস ও গ্যাস্ট্রো ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। লিপস্টিকের পাশাপাশি মেকআপ সামগ্রীর একটা বড় অংশই পেট্রোপণ্যের উৎপাদন। মেকআপ সামগ্রীর মধ্যে ফরম্যালডিহাইড, অ্যালকোহল, কোল-ট্রেডস এবং প্লাস্টিক রেজিন সামগ্রী দিয়ে তৈরি হয়। পাউডার সামগ্রীতে অ্যাসবেস্টস মেশানো থাকে হামেশাই। নিম্নমানের পাউডারে অ্যাসবেস্টস ব্যবহৃত হয়। নিঃশ্বাসের সঙ্গে অ্যাসবেস্টস গুঁড়ো ফুসফুসে ঢুকলে লাং ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মেকআপ তোলার জন্য বাজারে যে সমস্ত সস্তা তরল পদার্থ পাওয়া যায় তার অধিকাংশই ইথাইল অ্যালকোহল ও ফলম্যালডিহাইড দিয়ে তৈরি। এতে ত্বক যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মাত্রাতিরিক্ত স্যাকারিন শরীরে প্রবেশ করলে গ্যাস্ট্রো এবং ফুসফুস-ক্যান্সার হয়। মূত্রনালীর ক্যান্সারের জন্য দায়ী অতিরিক্ত মাত্রায় স্যাকারিন ব্যবহার। তবে প্রসাধনের ক্ষতিকারক বিষয় নিয়ে আরও গবেষণা হওয়া দরকার। * লিপস্টিকে টাইটানিয়াম অক্সাইড, ব্রোমাইড, স্যাকারিন এবং ইথানল ও প্রোপানলের মতো ভয়াবহ রাসায়নিক যৌগ ব্যবহার করা হয়। * রং স্থায়ী করার জন্য এই ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করতে বাধ্য হয় অনামী সংস্থাগুলো। * ক্রোমিয়াম, ব্রোমাইড এমনকী সিসাও ব্যবহার করা হয় লিপস্টিকে। * কমদামি লিপস্টিক প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো চকচকে রং করার জন্য আর্সেনিকও ব্যবহার করে থাকে।
ষ আফতাব চৌধুরী
সাংবাদিক-কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।