Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কমলগঞ্জে রাজদীঘির সরকারি জলাশয় উদ্ধারে প্রতিপক্ষের বাধা

এম, এ, ওয়াহিদ রুলু, কমলগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের রাজদিঘীরপার বাজার সংলগ্ন বিশাল রাজদিঘীর অর্ধেক সরকারি জলাশয় উদ্ধারে দখলদার বাহিনী বাঁধা প্রদান করছে। দখলদার কর্তৃক দিঘীরপারে গড়ে উঠা স্থানীয় শব্দকর সম্প্রদায় জলাশয়ে গোসল ও পানি ব্যবহারের অধিকার হরণ ও নানাভাবে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার বিকালে সরেজমিনে গেলে এ চিত্র পাওয়া যায়। এ ঘটনায় এলকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও পতনঊষার ইউনিয়ন পরিষদের ১, ২, ৩ ও ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রিপন ইসলাম ময়নুল, আং কুদ্দুছ, এখলাছ মিয়া ও সায়েক আহমদ জানান, রাজদিঘীরপার বাজার ঘেষা ৪ একর ৪৪ শতাংশ জলাশয় নিয়ে নিয়ে বিশাল দিঘীর ৫০ শতাংশ ২ একর ২২ শতাংশ সরকারি ও অবশিষ্ট ২ একর ২২ শতাংশ ব্যক্তি মালিকানাধীন। এই সুযোগে দিঘীর আংশিক মালিক আসিকুর রহমান আসুক ও তার উত্তরাধীকারী মনসুর আহমদ, মুমিনুর রহমান দীর্ঘ দুই যুগের অধিক সময় ধরে পুরো দিঘীর জলাশয় দখলে নিয়ে এককভাবে ভোগ করছেন। তারা প্রতিবছর সরকারকে ১১ হাজার টাকা রাজস্ব দিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকায় সাব লিজ প্রদান করেন। এই দিঘীতে স্থানীয় শব্দকর সম্প্রদায়সহ অন্য কারো ব্যবহারে তারা বাঁধা প্রদান করেন। গতকাল শনিবার বিকালে সরেজমিনে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুছ আখন্দ, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন, সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আসাদ উল্ল্যাহ ও সাংবাদিকরা সরকারি অংশের উদ্ধার কার্যক্রম দেখতে গেলে দখলদার মনসুর আহমদ, মোমিনুর রহমানসহ তাদের অনুসারী লোকজন আক্রমনাত্মক কথাবার্তা বলে সরকারি কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের উপর মারমুখী হয়ে উঠেন। খবর পেয়ে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে দখলদাররা পালিয়ে যায়। রাজদিঘীর পারের ২২টি শব্দকর ও ৩২টি সাধারণ মুসলিম পরিবার এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
তবে অভিযোগ বিষয়ে মোতালিব মিয়া বলেন, তিনি দিঘীতে গোসল করতে কাউকে বাঁধা দেননি এবং মারধোর করেননি। একটি চক্র এ ধরণের মিথ্যা অভিযোগ তৈরি করেছে। আমরা সরকারি অংশ দখল করিনি। এই অভিযোগ মিথ্যা। তবে এ সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতে স্বত্ব মামলার জন্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নোটিশ দেয়া হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, রাজদিঘীর পারে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে ১২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজও শুরু হয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে খোঁজ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে বিশাল দিঘীর জলাশয়ের সরকারি অংশ উদ্ধারে কার্যক্রম শুরু করি। তাতে দখলদাররা বিভিন্নভাবে বাঁধা প্রদানের চেষ্টা করেন।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, সরেজমিন রাজদিঘীর বিশাল জলাশয় দেখে ও জলাশয়ের অর্ধেক মালিকদের ডেকে সরকারি অংশ ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। তারা তাতে রাজি হওয়ায় দিঘীর সরকারি জলাশয় উদ্ধারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সার্ভে শেষ করে ইতিমধ্যে দিঘীর মাঝামাঝি বাঁশের খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। এখন যদি জলাশয়ের সরকারি অংশ উদ্ধারে কেউ বাঁধা প্রদান করেন তাহলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জলাশয়

২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ