নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শিরোপা লড়াইয়ে নেই দুই দল। ম্যাচটি তাই এক রকম রূপ নিয়েছে ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার হিসেবের মঞ্চে। তাতে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস পেলেন আফিফ হোসেন। অনেক প্রাপ্তির পরও একটু না পাওয়ার আক্ষেপে পুড়লেন লিটন দাস। প্রতিপক্ষের রান পাহাড় টপকে তাদের দলও নিল লিড। মার্শাল আইয়ুব আর মোসাদ্দেক হোসেন, কয়েক মাস আগে নাসির হেসেন - সবাই পুড়েছেন একই আক্ষেপে। সেই তিক্ত স্বাদ এবার পেতে হলো লিটন কুমার দাসকে। সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত করতে পারলেন না ট্রিপল সেঞ্চুরি। এবারও বাংলাদেশ পেল না দ্বিতীয় ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান।
বিসিএলের শেষ রাউন্ডের তৃতীয় দিনে গতকাল রাজশাহীতে মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে ২৭৪ রানে আউট হয়েছেন পূর্বাঞ্চলের লিটন।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান রকিবুল হাসান তাই এবারও পেলেন না সঙ্গী। ২০০৭ সালের মার্চে জাতীয় লিগে বরিশালের হয়ে অপরাজিত ৩১৩ রান করেছিলেন রকিবুল। গত ডিসেম্বরে জাতীয় লিগে লিটনের চেয়েও অনেক কাছে গিয়েছিলেন নাসির হোসেন। কিন্তু আউট হয়ে যান ২৯৫ রানে। তার আগে মার্শাল-মোসাদ্দেকরাও পারেননি কাছে গিয়ে।
১২৫ বলে ১৩৯ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেছিলেন লিটন। দিনের শুরুতে বেশি আগ্রাসী ছিলেন আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান আফিফ। প্রথম ঘণ্টায় লিটন ছিলেন একটু ধীরস্থির। সময়ের সঙ্গে তার ব্যাটেও আবার এসেছে রানের জোয়ার। লাঞ্চের আগের ওভারে বাঁহাতি স্পিনার ইলিয়াস সানিকে বাউন্ডারি মেরে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন মাত্র ১৯০ বলেই। তখনই রেকর্ডের পাতায় নাম উঠে গেছে তার। ১৯০ বলে ২০০- বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটিই সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরি। আগের দিন লিটনের সামনেই মধ্যাঞ্চলের আবদুল মজিদ করেছিল তৃতীয় (গতকালও ছিল দ্বিতীয়) দ্রæততম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড।
এত দিন সবচেয়ে দ্রুততমের রেকর্ডটি ছিল মোসাদ্দেক হোসেনের অধিকারে। ২০১৪-১৫ মৌসুমে জাতীয় লিগে বরিশালের হয়ে চট্টগ্রামের বিপক্ষে মোসাদ্দেক দ্রুততমটি করেছিলেন ২২৯ বলে। গতকাল লিটন ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। কিন্তু করতে পারেননি ট্রিপল সেঞ্চুরি। ২৪২ বলে ২৫০ করে ফেলার পরই ট্রিপল সেঞ্চুরির ভাবনাটা হয়তো জেঁকে বসেছিল। এগিয়েছেন কিছুটা স্লথ ব্যাটিংয়ে। পরের ২৪ রান করেছেন ৫১ বলে। সতর্ক ব্যাটিংয়ে এগিয়েও কাজ হয়নি, আউট হয়েছেন ২৭৪ রান করে।
লাঞ্চের পরও লিটন ব্যাট করে গেছেন একই ছন্দে। ইনিংসের দ্বিতীয় ছক্কা মারেন সেই সানিকেই। মধ্যাঞ্চলের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান অনিয়মিত বোলার আব্দুল মজিদের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবার স্পর্শ করেন আড়াইশ। নিজের ট্রিপলের অভিযানে ছোটার পথে হাতছানি ছিল আফিফের সঙ্গে জুটির ট্রিপল সেঞ্চুরির। হয়নি অল্পের জন্য। সানির বলে ক্যারিয়ার সেরা ১৪২ করে আউট হয়ে যান আফিফ। ভাঙে চতুর্থ উইকেটে ২৯৮ রানের জুটি। বড় জুটির সঙ্গীকে হারানোর পর পথ হারালেন যেন লিটনও। আড়াইশর পর কমিয়েছিলেন রানের গতি। খেলছিলেন সাবধানে। আড়াইশর পর চার মেরেছিলেন কেবল একটিই। লক্ষ্য ছোঁয়া হলো না তবু। সেই সানির বলেই এলবিডবিøউ। ৩৫ চার ও ২ ছক্কায় ২৯৩ বলে ২৭৪।
তিন দিন শেষ হলেও শেষ হয়নি দুই দলের এক ইনিংস করে। চতুর্থ উইকেটে লিটন-আফিফের ২৯৮ রানের জুটি ম্যাচই শুধু বাঁচায়নি, পূর্বাঞ্চলকে লিডও এনে দিয়েছে। প্রথম ইনিংসে মধ্যাঞ্চল তুলেছিল ৫৪৬। গতকাল তৃতীয় দিন শেষে পূর্বাঞ্চলের রান ৬ উইকেটে ৫৯২। এগিয়ে গেছে ৪৬ রানে।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত
ইনিংস ব্যাটসম্যান ম্যাচ ভেন্যু মৌসুম
৩১৩* রকিবুল হাসান বরিশাল-সিলেট ফতুল্লা ২০০৬-০৭
২৯৫ নাসির হোসেন রংপুর-বরিশাল চট্টগ্রাম ২০১৭-১৮
২৮৯ মার্শাল আইয়ুব মধ্যাঞ্চল-পূর্বাঞ্চল বগুড়া ২০১২-১৩
২৮২ মোসাদ্দেক হোসেন বরিশাল-চট্টগ্রাম বিকেএসপি-২ ২০১৪-১৫
২৭৪ লিটন কুমার দাস পূর্বাঞ্চল-মধ্যাঞ্চল রাজশাহী ২০১৭-১৮
সং ক্ষি প্ত স্কো র
মধ্যাঞ্চল ১ম ইনিংস : ৫৪৬
পূর্বাঞ্চল ১ম ইনিংস : ১৩৬ ওভারে ৫৯২/৬ (আগের দিন ২৬৪/৩) (লিটন ২৭৪, আফিফ ১৪২, অলক ১১, জাকের ৩২*, সাইফ উদ্দিন ২৯*; শরীফ ০/৬০, আবু হায়দার ০/৭৫, মোশাররফ ১/৮৫, শুভাগত ৩/১৫৬, সানি ২/১৩৫, সাইফ ০/৩৫, মজিদ ০/২৯)।
*৩য় দিন শেষে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।