Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিপিডির বক্তব্য সময়কে প্রতিনিধিত্ব করে না

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ অক্টোবর, ২০২২, ৫:২৬ পিএম

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, করোনা মহামারী বদলে দিয়েছে পুরো পৃথিবীর চিত্র । সাথে নতুন করে যোগ হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অনভিপ্রেত প্রেক্ষাপট। সব মিলিয়ে পুরো পৃথিবী পাড়ি দিচ্ছে এক কঠিন সময় । সবচেয়ে বড় ঝড়টা পড়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর ।

এক নিবন্ধে তিনি এসব কথা বলেন। নিবন্ধটি তুলে ধরা হল : ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতির কারণে খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আর জ্বালানী-তেলের দাম অনেকটাই লাগামহীন । এসব সমস্যার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশেও । এটা মোটেও মিথ্যা নয় । তেমনি মিথ্যে নয় ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকারের সজাগ দৃষ্টিও রয়েছে। লক্ষ্য, সংকট নিরসনে উত্তরণের পথ।

ইতোমধ্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে মিতব্যয়ী হবার আহ্বান জানিয়েছেন । আহ্বান জানিয়েছেন, যতবেশী সম্ভব কৃষিপণ্য উৎপাদনে মনযোগি হতে । তিনি বারংবার করে বলছেন, আগামী বছরে বিশ্বজুড়ে দুর্ভিক্ষ নেমে আসতে পারে।

এদিকে ২০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) নিজেদের কার্যালয়ে সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে মিডিয়া ব্রিফিং-এ থেকেছে। যদিও তাদের উদ্যোগকে অর্থনৈতিক উত্তরণে সহায়ক মতবাদ ও যুক্তি এবং গবেষণা সম্বলিত আয়োজন হিসাবে দেখার সুযোগ হয় না। মনে হল, রোগ বর্ণনা করে বাংলাদেশের শাসকশ্রেণিকে এক হাত নেয়ার চেষ্টা করা হল।

সিপিডি তাদের এই আয়োজনে বিষয় নির্ধারণ করল, ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আভাস ও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ উত্তরণ কোন পথে ?---- শীর্ষক। " কথিত ব্রিফিংয়ে নতুন কোন তথ্য-উপাত্ত ছিল না । ঘুরে-ফিরে বাংলাদেশের সামনে থাকা ডলার সংকট, জ্বালানি সংকট, মূল্যস্ফীতি সংকট, খাদ্য সংকট, ইউক্রেন সংকট, কোভিড ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট নিয়েই তারা আলোচনা করেছে । যা নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগেই এই বিষয়ে কথা বলেছেন । দিয়েছেন দিক-নির্দেশনা ।
অন্যদিকে সিপিডি খুব কৌশল করে জানান দিল, বাংলাদেশের এখন প্রয়োজন সুশাসন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ! অর্থাৎ জোর করে অহেতুক চাপ সৃষ্টির প্রচেষ্টা। তোমাদের সংস্থায় যদি বিশ্বমানের গবেষক কিংবা অর্থনীতিবিদ থাকে, তবে বৈশ্বিক সমাধানের একটি জানালাও তো উন্মুক্ত করে বক্তব্য দিতে পারলে না।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের বক্তব্যে নতুন কিছুই ছিল না । বরং মনে হয়েছে , বিশেষ একটি মুহূর্তে দেশের রাজনৈতিক শক্তির নামে অপশক্তি 'বিএনপি' যখন সামগ্রিক সংকট ঘনীভুত করাতে আর গণতন্ত্রের ধোঁয়া তুলে দেশের পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাইছে , তখন বেসরকারী সংস্থা সিপিডি এমন একটি আয়োজনে যেন পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাইছে ! মনে হয়েছে , সামগ্রিক সংকট নিয়ন্ত্রণের বাইরে আছে, তা প্রমাণ করার চেষ্টায় যেয়ে তারা বেকায়দায় ফেলতে চাইছে বর্তমান সরকারকে।

এই প্রসঙ্গেই বাংলাদেশি দার্শনিক ঈশ্বরমিত্র বলে থাকেন, সিপিডিদের মত সংস্থাগুলো চালায় নামধারী অর্থনীতিবিদেরা কিন্তু, অর্থনৈতিক জ্ঞান বিতরণ করে তারা সংকট উত্তরণে না যেয়ে রাজনৈতিক সংকটকে দরজায় আনে।

সংকট তো শুধু বাংলাদেশের না , পুরো বিশ্বের । সেই সংকট মোকাবিলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন । বাংলাদেশের মানুষ জানে , এই সংকট থেকেও বাংলাদেশ বেরিয়ে আসবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় । এমন পরিস্থিতিতে সিপিডির মতো প্রতিষ্ঠানের তথাকথিত গবেষণা আর বিবৃতি দেশের মানুষের মানসিক মনোবলকে ভেঙে দিতে পারে । জাতীয় ঐক্য ধরে রাখার শর্ত পূরণ করে না এহেন বক্তব্য । তাতে করে মাথাচাড়া দিতে পারে ওত পেতে থাকা সুশীল সমাজ। যারা দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে, রাজনৈতিকভাবে উচ্চাভিলাসী হয়ে। যেখানে তৃতীয় শক্তি হয়ে তারা রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। সিপিডি'র গবেষণার ফলাফলকে পুঁজি করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ নিতে পারে ক্ষমতার জন্য মরিয়া বিএনপির মতো রাজনৈতিক অপশক্তিও । যারা ৪৪ বছরে নিজেদেরকে রাজনৈতিক দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করাতে পারেন নি। সঙ্গত যুক্তিতে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠিকে সচেতন থেকে সিপিডির মত সংস্থাগুলোকে এবং বিএনপির লক্ষ্যহীন লক্ষ্য কে স্বাগত না জানিয়ে স্পষ্ট করে 'না' বলার উচ্চারণে যেয়ে বলতে হবে, তোমরা জনস্বার্থ সংরক্ষণ করার মানসে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভুবনে থাকতে পারো, নচেৎ কথা বলারই অধিকার নেই তোমাদের।

সিপিডির বক্তব্য সময়কে প্রতিনিধিত্ব করে না। বৈশ্বিক সংকটের প্রভাবে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ প্রত্যাশা করে বাংলাদেশ। যা তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে পাওয়া যায় নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ