Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লোকসানের বোঝা ৩৪৫ কোটি টাকা

পাবনা সুগার মিলস

মুরশাদ সুবহানী,পাবনা থেকে | প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মিলটির মধ্যে ভূত বিতাড়ণের তাগিদ অভিজ্ঞজনদের//
প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত পাবনা সুগার মিলস লি: লাভের মুখ দেখেনি। বরং প্রতি বছর লোকাসানের বোঝা বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৩৪৫ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা নিয়ে আখ মাড়াই শেষ হয়েছে। ১৯৯২ সালের ২৭ ডিসেম্বর পাবনা সুগার মিলের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয় দাশুড়িয়ায় এলাকায়। ১৯৯৭-৯৮ সালে মিলটি বাণিজ্যিকভাবে আখ মাড়াই শুরু করে। শুরু থেকেই লোকসানে ছিল মিলটি। দীর্ঘ ২০ বছরে মিলটি লোকসান দিতে দিতে এখন এই পরিমান দাঁড়িয়েছে ৩৪৫ কোটি টাকা। বিষয়টি হালকা করে দেখার কোন অবকাশ নেই। পাবনা সুগার রিসার্চ ইন্সিটিউটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সমজিৎ পাল জানিয়েছেন, পাবনায় যে আখ উৎপাদন সেই আখের চিনির রসের পরিমান এবং বিদেশ থেকে আমাদানী করা চিনির চেয়ে মিষ্টি অনেকগুণ বেশী। তবে লাল আভা থাকায় অনেক এই চিনি কিনতে চান না। তারা ব্রাজিল বা অন্যদেশের বিভিন্ন চিনিজাত কৃষি পণ্য থেকে উৎপাদিত চিনি কিনতে আগ্রহ দেখায় বেশী। লোকসান কেন হচ্ছে সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, “এটা আমার বিষয় নয়। আমি শুধু দেশী আখের গুণগত মান সম্পর্কেই ধারণা রাখি ”।
এদিকে, পাবনা সুগার মিল লোকসানের পর কর্মকর্তারা নানা অজুহাত সামনে আনেন। তবে বিশ বছরেও এই সব অজুহাত নিরসন করে মিলটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করতে কার্যত: ব্যর্থ হয়েছেন। পাবনা সুগার মিলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন লোকসানের কথা স্বীকার করলেও নিরসনে তেমন পদক্ষেপ নিতে পারছেন না। বিভিন্ন অজুহাতের মধ্যে রয়েছে, মিলের হাতে আখ উৎপাদনের জন্য বিপুল পরিমান জমি নেই। এই মিলটি প্রতি মাড়াই মৌসুমে ১৫০০০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করতে সক্ষম। এ থেকে ১৫০০০ হাজার চিনি উৎপাদন করা সম্ভব। মিলের ক্যাপসিটি আছে উৎপাদনের তাহলে লোকসান হচ্ছে কেন? এই নিয়ে নানা অজুহাত দেখানো হয়েছে, নতুন করে জমি অধিগ্রহণ, জুসপ্লান্ট, মিনারেল ওয়াটার, সুগার রিফাইন্ড করার প্লান্ট, বায়োফার্টিলাইজার প্ল্যান্ট ইত্যাদি করা হলে মিলটি লাভজনক হবে। এ সবই আর এক দফা বিপুল অংকের খরচের খাত। সেই সাথে উন্নতজাতের আখ চাষ। সুগার রিসার্চ ইন্সটিটিউট এ কথা মানতে একেবারেই রাজী নয়। তারা বলছেন, গবেষণাজাত যে আখ বীজ উৎপাদিত হচ্ছে সেটি উচ্চ ফলনশীল। এদিকে, আখ চাষীরা (যারা মিলের আওতাভূক্ত নন) তাৎক্ষনিক আখ বিক্রি করে টাকা না পাওয়ার কারণে আখ দিচ্ছেন, গুড়ের খোলায় । সূত্র মতে, মিলে সরষের মধ্যেও ভুত আছে। এই সব ভুত-প্রেত বিতারিত করে মিলকে লাভজনক অবস্থায় নিয়ে আসতে হবে। এই সূত্র মতে, সুগার রিফাইন প্লান্টের কথা কোটি কোটি টাকা লোকসান দেওয়ার পর কর্মকর্তাদের বুদ্ধিতে এসেছে। এই কাজটি অনেক আগেই করা প্রয়োজন ছিল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লোকসান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ