Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সউদী আরবে হুথিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দায় নিরাপত্তা পরিষদ

| প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : সউদী আরবে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের চালানো ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। গত বুধবার ১৫ সদস্য বিশিষ্ট পরিষদের পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়, হুথিরা অঞ্চলটিতে হুমকি হয়েই থাকবে।
গত রোববার সউদী জোটের এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের ছোড়া সাতটি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ওই দিন মধ্যরাতে রিয়াদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে হুথিদের ছোড়া তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া জাজানকে লক্ষ্য করে ছোড়া দুটি ক্ষেপণাস্ত্রসহ নাজরান ও খামিস মুশাইত এলাকায় ছোড়া আরও দুটি ক্ষেপণাস্ত্রও প্রতিহত করা হয়। অবশ্য, অনলাইনে কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সউদী আরব আদৌ সবগুলো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে হুথিদের পক্ষ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দায় স্বীকার করা হয়েছে। ইয়েমেনে সউদী জোটের বিমান হামলা বন্ধ না হলে এরকম আরও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলবে বলেও সতর্ক করেছে তারা।
বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, ‘নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলো ইয়েমেনের মানবিক পরিস্থিতির ধারাবাহিক অবনতি এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে।’
উল্লেখ্য,২০১৫ সালের মার্চ থেকে ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান পরিচালনা শুরু করে সউদী আরবের নেতৃত্বাধীন জোট। এ অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রতিরোধযোগ্য রোগে মৃত্যু হয়েছে আরও ১০ হাজার মানুষের। গৃহহীন হয়েছেন কয়েক লাখ। ভয়াবহ বিমান হামলার তাÐবে দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখে তারা বরাবরই সউদী আরবকে শীর্ষ মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী দেশ হিসেবে শনাক্ত করে আসছে।
ইয়েমেনে সউদী জোটের বিমান হামলার জবাবে গত বছরের ৫ নভেম্বর সউদী আরবের রাজধানী রিয়াদের কিং খালিদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ইয়েমেন থেকে স্কাড-শ্রেণির ‘বোরকান-২’ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল। ৩০ নভেম্বর আরও একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। দুইবারই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আকাশে ধ্বংস করার দাবি করে সউদী আরব। জাতিসংঘ, পশ্চিমা দেশগুলো এবং ইয়েমেনে সউদী নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট- সবাই বলছে ইরানি কিয়াম ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের আদলে ইয়েমেনের ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র বুরকান তৈরি করা হয়। ২০১৭ সালের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই সউদী আরব ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি ‘সামরিক আগ্রাসন’ প্রচেষ্টার অভিযোগ তোলেন। একই বছর ৭ নভেম্বর তারিখে বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সউদী যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান ইরানের বিরুদ্ধে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ তোলেন। সউদী রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে এক টেলিফোন আলাপে সউদী যুবরাজ বলেন, এ ঘটনা সউদী আরবের বিরুদ্ধে ইরানের যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। চলতি বছর সিএনএন-এর ২৬ মার্চ তারিখের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সউদী দাবির যথার্থতা মেনে জাতিসংঘও একই ধরনের মূল্যায়ন দিয়েছে। জাতিসংঘ সে সময় অভিযোগ তুলেছিল, হুথিদের কাছে ইরানি ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে তেহরান যথেষ্ট পদক্ষেপ নিছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী আরব


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ