Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন শাহীন বেপারী

নেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট দুর্ঘটনা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নেপালে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে আহত শাহীন বেপারী মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। আহত হওয়ার পর ১৫ দিন ধরে বেঁচে থাকার লড়াই করে অবশেষে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। গতকাল সোমবার দুপুর ২টার দিকে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢামেক বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এরপর ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলেন চিকিৎসকরা। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে তার মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা।
ঢামেকের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের বলেন, হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি ঘটায় চিকিৎসকরা তাকে সর্বোচ্চ অবজারভেশনে রাখা হয়। এরপরও তার সাপোর্ট ঠিকঠাক কাজ করছিলো না। তিনি বলেন, গতকালের (রোববার) একটিসহ তার তিনটি অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। সেফটি সেমিয়ার-এর কারণে তার বিøডিং হচ্ছিল। আমরা তার পরিবারকে বিষয়টি জানিয়েছি। শাহীন বেপারীর অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে তার স্বজনরা গতকাল বার্ন ইউনিটে আসেন। তারা চিকিৎসকদের কাছে বারবার অনুরোধ করছিলেন শাহীনকে উন্নত চিকিৎসায় দেশের বাইরে নেয়ার জন্য। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১৮ মার্চ তাকে দেশে আনা হয়েছিল। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে শাহীনকে দেশে আনা হয়েছিল। ২১ মার্চ প্রথম দফায় এবং ২৫ মার্চ দ্বিতীয় দফায় তার অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর থেকে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল। শাহীন বেপারী বাংলাদেশ শান্তি সংঘের সদস্য এবং পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকার বিক্রমপুর গার্ডেন সিটিতে মেসার্স করিম অ্যান্ড সন্স নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার হিসেবে কমর্রত ছিলেন। কোম্পানি থেকে বার্ষিক আনন্দভ্রমণে নেপাল গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কলমা ইউনিয়নের বান্দেগাঁও গ্রামের মৃত সাইফুল ইসলামের ছেলে শাহীন বেপারী। স্ত্রী-কন্যা নিয়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে বসবাস করতেন তিনি। গত ১২ মার্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিএস-২১১ নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ ওইদিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটে বিমানটি বিমানবন্দরের পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫১ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটে। এর মধ্যে ২৬ বাংলাদেশি নিহত হন নেপালেই। আর আহত হন ১০ বাংলাদেশি। প্রথমে আহতদের নেপালের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় আনা হয়। কয়েকজনকে নেয়া হয় সিঙ্গাপুর। উড়োজাহাজটিতে ৬৭ যাত্রীর মধ্যে বাংলাদেশি ৩২ জন, নেপালি ৩৩ জন, একজন মালদ্বীপের ও একজন চীনের নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে পুরুষ যাত্রীর সংখ্যা ছিল ৩৭, নারী ২৮ ও দুই শিশু ছিল। আইসিইউ’র সামনে অপেক্ষারত শাহিনের স্ত্রী রিনা আক্তার জানান, গতকাল অস্ত্রোপচারের পর থেকেই তার স্বামীর কথা বন্ধ হয়ে যায়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ