Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করার শপথ বিএনপির

স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাবাসে থাকায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধ এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পন করেছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। সকাল সোয়া ৯ টায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যের নেতৃত্বে সিনিয়র নেতারা জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিন¤্র শ্রদ্ধা জানান এবং কিছু সময়ে নিবরে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। এরপর বেলা ১১টায় নেতৃবৃন্দ আসেন শেরে বাংলা নগরে। সেখানে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীদের নিয়ে তারা দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। 

জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গনে জাতীয়তাবাদী উলামা দলের উদ্যোগে মরহুম এই নেতার রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতেও অংশ নেন নেতারা। জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন ও মোনাজাত শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। আমরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। তিনি বলেন, আমরা একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। এজন্য প্রথমেই গণতন্ত্রের নেত্রী, দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে, যে সকল রাজবন্দি রয়েছে তাদের মুক্ত করে দেশে নির্বাচনের জন্য দাবি জানাচ্ছি। সেই লক্ষ্যে কাজও করছি। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে আমরা সংগ্রাম করছি এবং এ সংগ্রামে অবশ্যই আমরা বিজয়ী হব। মির্জা ফখরুল বলেন, আজ কারাবরণের মধ্য দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে হচ্ছে, এটা দুঃখের। গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাগারে। আওয়ামী লীগ সরকার তাদের নীকনকশার মধ্যে একদলীয় শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাইছে। এজন্য খালেদা জিয়াসহ হাজারো নেতাকর্মীকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা খালেদা জিয়াসহ সকল নেতাকর্মীকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন গড়ে তুলবার শপথ গ্রহণ করেছি। আর এই আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই দেশে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করব।
এসময় এই দুইটি কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, মোহাম্মদ শাহজাহান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, জয়নুল আবদিন ফারুক, আদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, কবীর মুরাদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মীর সরফত আলী সুপ, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, নাজিমউদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, নুরে আরা সাফা, আমিনুল ইসলাম, দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন, শামীমুর রহমান শামীম, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, রফিক শিকদার, আখতার হামিদ ডাবলু, শাহ আবু জাফর প্রমুখ নেতৃবৃন্দ ছিলেন। অঙ্গংগঠনের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার হোসেইন, নুরুল ইসলাম খান নাসিম, আহসানউল্লাহ হাসান, ইউনুস মৃধা, মোরতাজুল করীম বাদরু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, আফরোজা আব্বাস, সাদেক খান, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, হাফেজ আবদুল মালেক, শায়রুল কবির খান, মামুনুর রশীদ, আসাদুজ্জামান আসাদসহ নেতৃবৃন্দ। বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ছাড়াও জিয়াউর রহমানের কবরে ঢাকা মহানগর বিএনপি, য্বু দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, উলামা দল, মহিলা দল, মৎস্যজীবী দল, ছাত্রদল, জাসাসসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এর আগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সকালে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এবং গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। স্বাধীনতা দিবস স্মরণে দল ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ছবি সম্বলিত বিভিন্ন রঙের পোস্টার বের করা হয়েছে। কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয় ক্রোড়পত্র। দিবসটি উপলক্ষে রাতে নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় ও মহানগর কার্যালয় আলোকসজ্জা করে বিএনপি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশবাসীসহ প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বাণী দিয়েছেন।
এদিকে বিকাল তিনটায় নয়া পল্টনে মহানগর কার্যালয়ে ভাসানী মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস এর উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দিবসটি উপলক্ষে তিনদিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার দুপুরে ২টায় রাজধানীতে বর্ণাঢ্য স্বাধীনতা র‌্যালি বের করবে বিএনপি। র‌্যালি নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বের হয়ে কাকরাইল, শান্তিনগর হয়ে আবারও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হবে।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলা বিএনপি শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভা করেছে। বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদের নেতৃত্বে লৌহজং উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো:শাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর খান চাকলাদার অপু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাচ্চু, সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ ঢালীসহ স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, সরকারের সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে। তবে সরকারের কোন ষড়যন্ত্রতেই কাজ হবে না। আগামীতে খালেদাবিহীন কোন নির্বাচন দেশে আর হবে না, হতে দেয়া হবে না। আব্দুস সালাম বলেন, অত্যন্ত ভারক্রান্ত মন নিয়ে আমরা এই বছর স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছি। যে মহান নেতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে সেই নেতার সহ-ধর্মিনী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজানো মামলায় কারান্তরীণ করা হয়েছে। এসময় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, দেশ নেত্রীর কারান্তরীণ করার শোককে আজ শক্তিতে রূপান্তরিত করে আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়ে তার নেতৃত্বেই আমাদেরকে আগামীতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, সরকার যেদিন ঢাকঢোল পিটিয়ে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের তকমা লাগাতে চেয়েছিল, সেই দিনই আমরা শুনতে পেলাম জার্মানির একটি গবেষণায় নতুন পাঁচটি স্বৈরাতান্ত্রিক দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম চলে এসেছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।
একই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে স্বাধীনতা দিবসে শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি ও খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবী জানিয়েছে নবীনগর বিএনপি। দিবসটি উপলক্ষে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে নবীনগর সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে ডাকবাংলো প্রাঙ্গণে পথ সভায় নবীনগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সায়েদুল হক সাঈদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক উবায়দুল হক ভিপি লিটনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান চৌধুরী পাপপু, নবীনগর বিএনপি নেতা মলাই মিয়া, হুমায়ন কবির, আব্দুস সাত্তার, আঃ আউয়াল, হাবিবুর রহমান হেলাল, আসাদুজ্জামান দুলাল, হাসিবুল হাদিস শাহিন, নুরুল আমিন নুরু, ওমর ফারুক, আনোয়ার হোসেন বাবুল, তোজাম্মেল হক বকুল, এম জামাল, মাইনুল ইসলাম, তোফাজ্জেল হোসেন খান, আরিফুর রহমান, আক্তার হোসেন প্রমুখ।



 

Show all comments
  • গনতন্ত্র ২৭ মার্চ, ২০১৮, ৮:৫৬ এএম says : 0
    " বিনিময়ে" লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে, পেয়েছি আমরা আঁধারের এই পান্জেরী; মুক্ত হয়েছে মাতৃভূমি, পরাধীনতার ছিকল গেছে ছিঁড়ি । কত বোন হারিয়েছে তার, প্রানের টুকরো ভাই; গনতন্ত্রের মাতা আজ কারাগারে, লজ্জায় মুখ কোথায় লুকাই ? স্বাধীনতার ঘোষক হয়েও, পাচ্ছেন না আজ অধিকার; এক ছেলেকে হারাতে হলো, অন্যজন নাই বুকে তার। দলের উপর ষ্টিম রোলার, নেতা-কর্মী সব কারাগার; রাস্তায় নামলে পুলিশ পিটায়, গনতন্ত্রের নামে স্বৈরচার।
    Total Reply(0) Reply
  • nurul alam ২৭ মার্চ, ২০১৮, ৪:১০ পিএম says : 0
    নি:সন্দেহে বেগম জিয়া মাদার অব ডেমোক্রেসি । সময়োচিত খেতাব দেওয়ার জন্য বিএনপি নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ । বাংলাদেশের মাটি থেকে হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র যার স্বামী ফিরিয়ে এনেছেন আর সে ফিরিয়ে আনা গণতন্ত্র আবার যিনি গিলে খেয়েছিলেন তার থেকে যিনি আবার আপোষহীন সংগ্রামের মাধ্যমে তা উদ্ধার করে জাতিকে গণতন্ত্র উপহার দিয়েছেন তাঁকে জেলে রেখে কিসের নির্বাচন ? ম্যাডাম জিয়ার ডাকেই ১৪ সালের ৫ জানুয়ারী মানুষ ভোট দানে বিরত ছিলেন । গণতন্ত্রের জন্য তার তাঁর নিরলস সংগ্রাম বাংলাদেশবাসীর মনে আছে বলেই তিনি রাস্তায় নামলে মানুষের ঢল নামে । নারী-পুরুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে তাঁর জনসভায় । এসব গণতন্ত্রহরণকারীদের সহ্য হয় না । হওয়ার কথা নয় । মনে রাখতে হবে জোর-জবরধ্বস্তি করে মানুষের মন জয় করা যায় না । উদার গণতন্ত্রপন্থী দল বিএনপির উপর আজ যে জুলুম চলছে তা কোনভাবেই মেনে নেওয়ার নয় । এর জবাব এদেশের মানুষই কোননা কোনদিন দেবে ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপির


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ